আয়েনা দেখার নিয়ম-কানুন বা বিধি-নিষেধ কি?

আয়েনা দেখার নিয়ম-কানুন বা বিধি-নিষেধ কি? যদি আয়না দেয়ালের সাথে এটাচ না থাকে বরং হাত আয়না হয় তাহলে বাম হাত দ্বারা আয়নাকে ধরে ডান হাত মাথার সামনের দিকে ধরে বিসমিল্লাহ বলবে।

এবং তিনবার আল্লাহু আকবার বলে নিম্নোক্ত দু’আ পড়বে।
আর যদি আয়না দেয়ালের সাথে সংযুক্ত থাকে তাহলে আয়না দিকে যখন দৃষ্টি দিবে তখন তিনবার আল্লাহু আকবার বলে নিম্নোক্ত দু’আ পড়বে।
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻛﻤﺎ ﺣﺴﻨﺖ ﺧﻠﻘﻲ ﻓﺤﺴﻦ ﺧﻠﻘﻲ
(উচ্ছাঃ)আল্লাহুম্মা কা’মা হাস্সানতা ক্বালক্বী ফা হাস্সিন খুলুক্বী

ভাবার্থঃ- হে আল্লাহ যেভাবে তুমি আমার শারিরিক গঠনকে সুন্দর করেছ সেভাবে আমার চরিত্রকে সুন্দর করে দাও।

আয়নাকে কাপড় লাগিয়ে সর্বদা রাখা হবে এবং সচরাচর চলাচলের রাস্তায় রাখা যাবেনা।

বেশী বেশী আয়না দেখাকে বর্জন করতে হবে।বিশেষ করে বাথরুমে উলঙ্গ হয়ে কখনো আয়না দেখা যাবে না। এবং আয়নার অপরদিকে উলঙ্গ ফটোও তোলা যাবে না।এবং বিশেষ করে মহিলারা উলঙ্গ হয়ে আয়না দেখতে পারবেনা।

কেননা জিন জাতী সর্বদাই আমাদের মহিলাদেরকে পছন্দ করে,এবং তাদেরকে আপন করে পেতে চায়।তাদের মহিলা থেকে আমাদের মহিলা জাতী বেশ সুন্দর হওয়ার দরুণ।এবং তুলনামূলক কম জিন জাতীর মহিলারা ও আমাদের পুরুষদেরকে পছন্দ করে।

যখন মানুষ আয়নার দিকে চেয়ে থাকে বিশেষ করে উলঙ্গ অবস্থায় তখন জিন জাতীর নজর আমাদের দিকে বেশী দাবিত হয়,পরবর্তিতে তারা উক্ত মানুষদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে,এজন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত আয়না না দেখাই সমস্ত বিপদাপদ থেকে নিরাপদ ও ফিৎনামুক্ত থাকার উত্তম মাধ্যম।

আয়েনা দেখার নিয়ম-কানুন বা বিধি-নিষেধ কি?

আয়না রাত্রে না দেখাই উত্তম,যদিও এ বিষয়ে হাদীসে কোনো বিধি-নিষেধ নেই তথাপি চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেনঃ রাত্রে আয়না দেখলে বিভিন্ন রোগ জন্ম নেওয়ার আশংকা থাকে।

এজন্য রাত্রে আয়না দেখতে তারা নিষেধ করে থাকেন।
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻴﻢ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺑﻪ ﺍﻟﻘﻴﻢ ﺯﺍﺩ ﺍﻟﻤﻌﺎﺩ ﻓﻲ ﺑﺎﺏ ﺍﻟﻄﺐ : ﻭﺭﺃﻳﺖ ﻻﺑﻦ ﻣﺎﺳﻮﻳﻪ ﻓﺼﻼ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻤﺤﺎﺫﻳﺮ ﻧﻘﻠﺘﻪ ﺑﻠﻔﻈﻪ ﻗﺎﻝ : ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﻈَﺮَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤِﺮْﺁﺓِ ﻟَﻴْﻠًﺎ ﻓَﺄَﺻَﺎﺑَﻪُ ﻟَﻘْﻮَﺓٌ ﺃَﻭْ ﺃَﺻَﺎﺑَﻪُ ﺩَﺍﺀٌ ﻓَﻠَﺎ ﻳَﻠُﻮﻣَﻦّ ﺇﻟّﺎ ﻧَﻔْﺴَﻪ

ইমাম ইবনে ক্বাইয়ুম রাহ, উনার তাত্ত্বিক গবেষণালব্ধ কিতাব “যাদু মা’আদ ফি হাদয়ে খাইরিল ইবাদ”নামক কিতাবে উল্লেখ করেন, আমি চিকিৎসক ইবনে মাসুওয়াইর “সতর্কবাণী ও সাবধানতাসম্ভলিত অধ্যায়ে ” রাত্রে আয়নায় নিজেকে দেখা সম্পর্কে যা দেখেছি এখন আমি তা হুবহু আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি…..

ইবনে মাসুওয়াই বলেনঃ- যে ব্যক্তি রাত্রে আয়না দেখল অতঃপর তার লাক্বওয়াহ রোগ হয়ে গেল,অথবা অন্য কোনো রোগ হয়ে গেলো, তখন সে যেন তার নিজ সত্বাকে ব্যতীত অন্য কাউকে না দোষে।

লাক্বওয়াহ কি রোগ? তা সম্পর্কে অভিধানে বক্তব্য হল,
ﺩَﺍﺀٌ ﻳُﺼِﻴﺐُ ﺍﻟْﻮَﺟْﻪَ ﻓَﻴَﻌْﻮَﺝُّ ﻣِﻨْﻪُ ﺍﻟﺸِّﺪْﻕُ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺣَﺪِ ﺟَﺎﻧِﺒَﻲِ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖ

এমন রোগ যা মুখে হয় এবং চোয়ালকে গর্দনার কোন একদিকে বাকা করে দেয়।

হযরত আলী রাঃ কে নবীজী সাঃ এর ওসিয়ত সমূহের মধ্যে একটি ওসিয়ত ছিল,
ﻳﺎ ﻋﻠﻲ ﺍﺫﺍ ﻧﻈﺮﺕ ﻓﻲ ﻣﺮﺍﺓ ﻓﻜﺒﺮ ﺛﻼﺛﺎ ﻭﻗﻞ : « ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻛﻤﺎ ﺣﺴﻨﺖ ﺧﻠﻘﻲ ﻓﺤﺴﻦ ﺧﻠﻘﻲ »

হে আলী যখন তুমি আয়নায় নিজেকে দেখতে যাবে তখন প্রথমে তিনবার আল্লাহু আকবার বলবে,তারপর বলবে “হে আল্লাহ যেভাবে তুমি আমার শারিরিক গঠনকে সুন্দর করেছ সেভাবে আমার চরিত্রকে সুন্দর করে দাও।”

ﺣﻜﻢ ﻭﻣﻮﺍﻋﻆ ﻣﻦ ﺣﻴﺎﺓ ﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ( ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ) ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺍﻻﻭﻝ/62)

আরো অনেক দু’আ বর্ণিত আছে, এবং কেউ কেউ বলেন, এই সমস্ত দু’আ নবীজী সাঃ থেকে প্রমাণিত হলেও বিশেষ মুহুর্ত অর্থ্যাৎ আয়না দেখার সময় নবীজী সাঃ থেকে প্রমাণিত নয়।

যেহেতু উপরোক্ত দু’আ সমূহ নবীজী সাঃ থেকে প্রমাণিত, একথা তারা মানছেন,অন্যদিকে আয়না দেখার সাথে উপরোক্ত দু’আর মর্মার্থরও মিল রয়েছে,

বিধায় ঐ সমস্ত দু’আ পড়তে কোনো অসুবিধা নেই, এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্যরকে অগ্রাহ্য করে দু’আ সমূহ পড়াই জ্ঞানের দাবী।

Related Posts

No Responses

Add Comment

You cannot copy content of this page