Page Content Highlights
নামাজ শিক্ষা।নামাজের নিয়ম
নামাজ শিক্ষা বা নামাজ পড়ার নিয়ম
পুরো লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ভালোভাবে পড়ুন।
অজু ভঙ্গের কারণ
অযুর নিয়ত
গান শুনলে কি ওযু ভাঙ্গে-না ভাঙে না তবে গুনাহ
অজু ভঙ্গের কারণ ৭ টি
- পায়খানা – পেশাবের রাস্তা দিয়া কোন কিছু বাহির হওয়া।
- মুখ ভরিয়া বমি হওয়া।
- শরীরের কোন জায়গা হইতে রক্ত, পুঁজ, পানি বাহির হইয়া গড়াইয়া পড়া।
- থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।
- চিত বা কাত হইয়া হেলান দিয়া ঘুমিয়ে যাওয়া।
- পাগল,মাতাল ও অচেতন হইলে।
- নামাযে উচ্চস্বরে হাসিলে।
অযুতে ঘাড় মাসাহ করা মুস্তাহাব।
অযুতে ঘাড় মাসাহ করা মুস্তাহাব। দলীল:
- ক – হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত।
- খ – হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত।
- গ – হযরত তালহা তিনি তার পিতা, তিনি তার দাদারসূত্রে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেছেন, আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি অজু করছেন। তখন তিনি এভাবে মাথা মাসাহ করেছেন। উভয় হাতকে জমা করে পাস কাটিয়ে তা দিয়ে গর্দান মাসাহ করতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫০)
ফরজ গোসলের নিয়ম গোসলের ফরজ কয়টি
গোসলের ফরজ তিনটি :
- ১. গড়গড়াসহ কুলি করা, যাতে পানি গলার হাড় পর্যন্ত পৌছে।
- ২. হাতে পানি নিয়ে নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
- ৩. সমস্ত শরীর উত্তম রুপে ধৌত করা।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম :
পরে বামে ৩বার, শেষে মাথার উপর ৩ বার। (বুখারী–১৬৮)।
(যেন শরীরের কোন অংশ বা কোন লোমও শুকনো না থাকে।পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় অবশ্যই পানি ঢালতে হবে)। গোসলের জায়গা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই পা ধোওয়া।(বুখারী–২৫৭)।
এটাই হচ্ছে গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি। উল্লেখ্য, এইভাবে গোসল করলে এর পরে নামায পড়তে চাইলে আলাদা করে ওযু করতে হবেনা, যদি না গোসল করার সময় ওযু ভংগের কোনো কারণ ঘটে থাকে।
গোসলের পরে কাপড় চেঞ্জ করলে বা হাঁটুর উপরে কাপড় উঠে গেলে ওযু ভাংবেনা, এটা ওযু ভংগের কারণ না।
গোসলের পর অজু
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি ও কি কি?
- পাক হওয়ার নিয়ত করা (নামাজ পড়া বা কোরআন তিলাওয়াতের জন্য পবিত্রতা অর্জনের নিয়্যত করা)।
- দুই হাত একবার মাটিতে রেখে/মেরে তা দিয়ে মুখমন্ডল মাসেহ করা।
- দুই হাত আবার মাটিতে রেখে/মেরে দুই হাতের কনুই মাসেহ করা (হিন্দিয়-১/৫০, আলমগীরী ১/২৫-২৬)।
তায়াম্মুমের সুন্নত-
- বিসমিল্লাহ বলা
- প্রথমে দুই হাত পরে দুই হাত কনুই মাসেহ করা।
- মাটিতে হাতের তালু মারা পিঠের দিক নয়।
- মাটিতে হাত মারার পর মাটি ঝেড়ে ফেলা।
- দুই হাতের আংগুল প্রসারিত করে মাটিতে মারা যাতে হাতে ধুলা লাগে।
- অন্তত তিন আংগুল দিয়ে চেহারা ও হাত মাসেহ করা।
- প্রথমে ডান হাত ও পরে বাম হাত মাসেহ করা।
- চেহারা মাসেহ করার পর দাড়ি খেলাল করা।
যা কিছু দ্বারা তাইয়াম্মুম সঠিক হবে-
- মাটি
- বালি
- বিভিন্ন ধরনের পাথর, যেমন কালো পাথর, মারমার (মার্বেল) পাথর, চুনা পাথর ইত্যাদি।
মাটি জাতীয় সব জিনিসের উপর তায়াম্মুম করা যেতে পারে, যেমন পোড়া কাদা মাটি- ইট ও কলস।
কখন তায়াম্মুম করা জায়েজ আছে?
- যদি পানি পাওয়া না যায়।
- পানি যদি এক ক্রোশ দূরে থাকে (এক ক্রোশ হলো, চার হাজার কদম।)
- পাওয়া গেলেও নাগালের বাইরে।
- পানি ব্যবহারে ভীষণ ক্ষতির আশংকা।
- (সুস্থ ব্যক্তি) অসুস্থ হয়ে পড়ার বা (রুগ্ন ব্যক্তির) রোগ নিরাময়ে বিলম্ব হওয়ার কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকলে।
- শত্রু, হিংস্র প্রাণীর ভয় বা পিপাসার ভয় থাকে কিংবা বালতি বা রশি পাওয়া না যায়।
- যে সব নামাজের কাজা নেই (যেমন জানাযা ও ঈদের নামাজ ইত্যাদি) তা ওজু করে না পাওয়ার আশংকা থাকলে।
নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি
নামাযের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও মুস্তাহাবের বিবরণ নিচে উল্লেখ করা হলো,
- শরীর পাক
- কাপড় পাক
- নামাজের জায়গা পাক( মারাকিল ফালাহ-২০৮)
- সতর ডাকা
- কেবলামুখী হওয়া
- নামাজের ওয়াক্ত চেনা
- নিয়্যাত করা
[ নামাজের ভিতরে ৬ টি ফরজ ]
- তাকবীরে তাহরিমা বা আল্লাহু আকবার বলা
- দাঁড়াইয়া নামাজ পড়া
- কেরাত পড়া
- রুকু করা
- সেজদা করা
- শেষ বৈঠক
নামাজের ওয়াজিব নামাজের ওয়াজিব কয়টি
নামাযের ওয়াজিব ১৪টি নামাজের ওয়াজিব ১৪টি
- সুরা ফাতিহা পড় । সুরা ফাতিহা পুরা পড়া
- সুরা ফাতেহার সঙ্গে সুরা মিলানো।ফাতিহার সঙ্গে সুরা মিলানো
- রুকু ও সেজদায় দেরী করা।রুকু সেজদায় দেরি করা
- রুকু হইতে সোজা হইয়া দাঁড়ানো । রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হয়ে দেরি করা
- দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসা । দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসে দেরি করা
- দরমিয়ানী বৈঠক। দুই সেজদার মাঝখানে বসা
- দুই বৈঠকে আত্ত্যাহিয়াতু পড়া। দুই বসায় তাশাহুদ পড়া
- ঈমামের জন্য কেরাত আস্তের জায়গায় আস্তে পড়া এবং জোড়ের জায়গায় জোড়ে পড়া ।
- বিতিরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ।
- দুই ঈদের নামাজে ছয় ,ছয় তকবীর বলা ৷
- ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাত কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা ৷ প্রত্যেক ফরয নামাযে প্রথম দুই রাকাত কে কেরাতের জন্য নিরধারিত করা৷
- প্রত্যেক রাকাতের ফরজ গুলির তরতীব ঠিক রাখা ৷
- প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিব গুলির তরতীব ঠিক রাখা ৷
- আস্আলামু আ’লাইকুম ও’রাহ…বলিয়া নামাজ শেষ করা ৷ সালাম পিরিয়ে নামায শেষ করা
২। সুরা ফাতেহা পড়া
৩। সূরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা মিলানো
৪। ফরজ নামজের প্রথম দুই রাকাত কেরাতের জন্য নির্দিষ্ট করা
৫। কেরাতের পূর্বে সূরা ফাতেহা পড়া
৬। সূরা ফাতেহা একাধিকবার না পড়া (হিন্দিয়া-১/১২৮)
৭। যেহরী(উচ্চস্বরে কেরাত পড়া হয় এমন) নামজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া
৮। সিররী (অনুচ্চস্বরে কেরাত পড়া হয় এমন) নামজে অনুচ্চস্বরে কেরাত পড়া।(ফাতাওয়া শামী-২১৫)
৯। নামাজের রোকনসমূহ ধীরস্থিরভাবে আদায় করা ( হিন্দিয়া-১/১২৯)
১০। রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ানো (শামী-২/১৫৮)
১১। সেজদার মাঝে কপাল ও নাক জমিনের সাথে লাগিয়ে রাখা। (শামী-২/২০৪)
১২। প্রত্যেক রাকাতে এক সেজদার পর অপর সেজদা করা (শামী -২/১৫৩)
১৩। উভয় সেজদার মাঝে বসা। (শামী-২/১৫৮)
১৪। প্রথম বৈঠক করা (চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দুরাকাত পড়ার পর) । (বাদায়েউস সানায়ে-১/৩৯৯)
১৫। প্রথম বৈঠক ও শেষ বৈঠকে তাশাহ্যুদ পড়া। (শামী -২/১৫৯)
১৬। প্রথম বৈঠকের পরে বিলম্ব না করে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়ানো । (মারাকিল ফালাহ-১৩৬)
১৭। নামজের ক্রিয়াসমূহের মাঝে তারতীব রক্ষা করা। (হালবী কাবীর-২৯৭)
১৮। সালাম শব্দ দ্বারা নামাজ শেষ করা। (আদ্দুররুল মুখতার মাআ শামী-২/১৬২)
১৯। বেতের নামাজে দোয়ায়ে কুনুত পড়া। (আদ্দুররুল মুখতার মাআ শামী-২/১৬৩)
২০। দুই ঈদের নামজে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা। (আদ্দুররুল মুখতার মাআ শামী-২/১৬৩)
২১। দুই ঈদের নামজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকুর তাকবীর বলা। (মারাকিল ফালাহ-৯৩)
নামাজের সুন্নত কয়টি ও কি কি
১। ফরজ নামাজের জন্য আজান ও ইকামত বলা।(আদ্দুররুল মুখতার মাআ শামী-২/৪৮)
২। তাকবিরে তাহরিমার সময় উভয় হাত উঠানো।(তানভীরুল আবসার মাআ শামী-২/১৮২)
৩। হাত উঠানোর সময় আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক রাখা। (ফাতাওয়া শামী-২/১৭১)
৪। ইমামের জন্য তাকবীরগুলো উচ্চস্বরে বলা।(হিন্দিয়া-১/১৩০)
৫। সানা পড়া।(বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৭১)
৬। ‘আউযুবিল্লাহ’ পড়া।(বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৭২)
৭। ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া। (বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৭৪)
৮। অনুচ্চস্বরে ‘আমীন’ বলা। (বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৭৩)
৯। সানা, আউযুবিল্লা্হ বিসমিল্লাহ, আমীন অনুচ্চস্বরে বলা। (হিন্দিয়া-১৩১)
১০। হাত বাঁধার সময় বাম হাতের উপর ডান হাত রাখা।(হিন্দিয়া-১/১৩১)
১১। পুরুষের জন্য নাভির নিচে, আর মহিলার জন্য বুকের উপর হাত বাঁধা।(হিন্দিয়া-১/১৩০)
১২। এক রোকন থেকে অন্য রোকনে যাবার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা।(বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৮৩-৪৮৯)
১৩। একাকী নামাজ পাঠকারীর জন্য রুকু থেকে উঠার সময় “সামিআল্লাহু লিমান হামিদা” ও “রব্বানা লাকাল হামদ” বলা। ইমামের জন্য শুধু “সামিআল্লাহু লিমান হামিদা” বলা আর মুক্তাদির জন্য শুধু “রব্বানা লাকাল হামদ” বলা।(মারাকিল ফালাহ-২৭৮)
১৪। রুকুতে “সুবহানা রব্বিয়াল আযীম” বলা।(বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৭৮)
১৫। সেজদায় বলা “সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা”।(বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৯৪)
১৬।রুকুতে উভয় হাটু আঁকড়ে ধরা। (বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৮৭)
১৭। রুকুতে পুরুষের জন্য উভয় হাতের আঙ্গুল ফাঁকা রাখা। আর মহিলার জন্য মিলিয়ে রাখা।(শামী-২/১৭৩)
১৮। পুরুষের জন্য নামাজে বসার সময় বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা ও ডান পা খাড়া রাখে আঙ্গুলগুলো কেবলার দিক করে রাখা। আর মহিলার জন্য উভয় পা ডান দিকে বের করে জমিনের উপর বসা।(বাদায়েউস সানায়ে-১/৪৯৬)
১৯। শেষ বৈঠকে তাশাহ্যুদের পর দুরুদ শরীফ পড়া।(বাদায়েউস সানায়ে-১/৫০০)
২০। দুরুদের পর দোয়া পড়া। হিন্দিয়া-১/১৩০)
২১। তাশাহ্যুদে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলার সময় শাহাদাত(তর্জনি) আঙ্গুল দ্বারা কেবলার দিকে ইশারা করা।(বাদায়েউস সানায়ে-১/৫০১-৫০২)
নামাজের মুস্তাহাবসমূহঃ
২। তাকবীরে তাহরিমা বলার সময় হাত চাদর থেকে বাহিরে বের করে রাখা।
৩। সালাম ফিরানোর সময় উভয় কাঁধের উপর দৃষ্টি রাখা।(মারাকিল ফালাহ-১৫১)
৪। নামাজে মুস্তাহাব পরিমান ক্বেরাত (ফজর ও যোহরে তিওয়ালে মুফাস্যাল- সূরা হুজরাত থেকে সূরা বুরুজ পর্যন্ত।আছর ও ইশাতে আওসাতে মুফাস্যাল- সূরা তরেক থেকে বায়্যিনা পর্যন্ত। মাগরীবে কিসারে মুফাস্যাল- সূরা যিলযাল থেকে শেষ পর্যন্ত সূরাগুলোর যেকোনটি) পড়া।(ফাতাওয়া শামী-২/২৬১)
৫। জুমআর দিন ফজরের নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা আলিফ-লাম-মিম সেজদা ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা দাহর পড়া।(ফাতাওয়া শামী-২/২৬৫)
৬।যথা সম্ভব কাশি ও ঢেকুর চেপে রাখা।(ফাতাওয়া শামী-২/১৭৬)
৭। হাই আসলে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করা।(ফাতাওয়া শামী-২/১৭৭)
১৯টি কারণে নামাজ ভঙ্গ হয়ে থাকে
- নামাজে অশুদ্ধ কোরআন পড়া ৷
- নামাজের ভিতর কথা বলা ৷
- নামাজের ভিতর কাউকে সালাম দেওয়া
- নামাজের ভিতর সালামের উত্তর দেওয়া
- নামাজের মধ্যে বিনা ওজরে কাশি দেওয়া
- নামাজের ভিতরে ওহ্ আহ্ শব্দ করা
- নামাজের মধ্যে আমলে কাছির করা ( মোক্তাদি হয়ে ঈমামকে অনুসরন না করা)
- নামাজের মধ্যে বিপদে ও বেদনায় শব্দ করা
- নামাজের মধ্যে তিন তজবী পরিমান সতর খুলিয়া রাখা
- মোক্তাতী ব্যতীত অপর ব্যক্তির লোকমা লওয়া
- সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া
- নাপাক জায়গায় সেজদা করা
- কেবলার দিক হইতে সীনা ঘুরিয়া যাওয়া
- নামাজের মধ্যে কোরআন শরীফ দেখিয়া পড়া
- নামাজের মধ্যে শব্দ করিয়া হাসা ৷
- নামাজের মধ্যে সাংসারিক বা দুনিয়াবী প্রার্থনা করা
- নামাজের মধ্যে হাচির উত্তর দেওয়া
- নামাজের মধ্যে খাওয়া ও পান করা
- ঈমামের আগে মুক্তাদির নামাজে দাঁড়ান ।
এগুলো মানার চেষটা করুন ।
কোন নামাজ কত রাকাত । নামাজ কত রাকাত
- ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত। প্রথমে দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং অতঃপর দুই রাকাত ফরজ।
- যোহরের নামাজ মোট দশ রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, তার পর চার রাকাত ফরজ এবং সবশেষে দুই রাকাত সুন্নত।
- আসরের নামাজ মোট আট রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নতে জা’য়েদা (অনাবশ্যকনা পড়লে গুনাহ নাই ) এবং অতঃপর চার রাকাত ফরজ
- মাগরিবের নামাজ মোট পাঁচ রাকাত। প্রথমে তিন রাকাত ফরজ অতঃপর দুই রাকাত সুন্নত।
- এশার নামাজ মোট ১৩ রাকাত অতিরিক্ত সুন্নতসহ। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত জা’য়েদা (অনাবশ্যক না পড়লে গুনাহ নাই), মুলত ৯ রাকাত ওয়াজীসহ চার রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নত। এছাড়াও তিন রাকাত বিতরের ওয়াজিব নামাজ এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পরেই আদায় করে নেওয়া যায়।
নামাজের সুরা ও তাসবীহ সমূহের অর্থ
তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতুঃ
দোয়ায়ে কুনুত।দোয়া কুনুত। Dua qunoot bangla। Dua kunut
আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ|Ayatul kursi bangla|Ayatul kursi in bangla
আয়াতুল কুরসী-এর আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত।
আয়াতুল কুরসী-এর আরবি:
بسم الله الرحمن الرحيم
ﺍﻟﻠّﻪُ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﺤَﻲُّ ﺍﻟْﻘَﻴُّﻮﻡُ ﻻَ ﺗَﺄْﺧُﺬُﻩُ ﺳِﻨَﺔٌ ﻭَﻻَ ﻧَﻮْﻡٌ ﻟَّﻪُ ﻣَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﻣَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﻣَﻦ ﺫَﺍ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺇِﻻَّ ﺑِﺈِﺫْﻧِﻪِ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺃَﻳْﺪِﻳﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠْﻔَﻬُﻢْ ﻭَﻻَ ﻳُﺤِﻴﻄُﻮﻥَ ﺑِﺸَﻲْﺀٍﻣِّﻦْ ﻋِﻠْﻤِﻪِ ﺇِﻻَّ ﺑِﻤَﺎ ﺷَﺎﺀ ﻭَﺳِﻊَ ﻛُﺮْﺳِﻴُّﻪُ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻷَﺭْﺽَ ﻭَﻻَ ﻳَﺆُﻭﺩُﻩُ ﺣِﻔْﻈُﻬُﻤَﺎ ﻭَﻫُﻮَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻲُّ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢ .
উচ্চারণঃ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম লা তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিছছামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্। মান যাল্লাযী ইয়াস ফায়ু ইন দাহু ইল্লা বি ইজনিহি ইয়া লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খল ফাহুম ওয়ালা ইউ হিতুনা বিশাই ইম্ মিন ইল্ মিহি ইল্লা বিমা সাআ ওয়াসিয়া কুরসিইউ হুস ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলিয়্যূল আজীম।
ফজিলতঃ
জান্নাতের দরজা: আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল নুরে মুজাসসাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। [নাসায়ী]
হজরত আলী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশির ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনানে বায়হাকী]
নামাজের নিয়মাবলী|নামাজের নিয়ম|নামাজের নিয়ম কানুন|Namaz porar niom
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এর নিয়ম
খ. জামাতের নামাজে মুক্তাদিগণের কোন সূরাহ পড়তে হবেনা, ঈমাম পড়বেন। কিন্তু বাকি সব তাসবীহ পড়তে হবে।
গ. যোহর এবং আসরের ফরজ নামাজের সূরাহ গুলি নিঃশব্দে পড়তে হবে কিন্তু মাগরীব, এশা, ফজরের ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতের সূরাহগুলো উচ্চস্বরে পড়তে হবে।
ঘ. জুম’আ এবং ঈদের নামাজের সূরাহগুলো উচ্চস্বরে পড়তে হবে।।
তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতুঃ
নামাজ শিক্ষা বই ফ্রি ডাউনলোড pdf
সালাতের নিষিদ্ধ সময়সূচি।
আর কিছু সময় এমন আছে যাতে নির্ধারিত কিছু নামাজ পড়া মাকরুহ।
সাহাবি উকবা বিন আমের জুহানী রা. বলেন,
‘তিনটি সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত।
এবং যখন সূর্য অস্ত যায়’। [মুসলিম : ১/৫৬৮]
উক্ত হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী নামাজের নিষিদ্ধ সময় তিনটি। যথা-
১. সূর্য যখন উদিত হতে থাকে এবং যতক্ষণ না তার হলুদ রঙ ভালোভাবে চলে যায় ও আলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরজন্য আনুমানিক (মূল সময় সর্বনিম্ন বারো মিনিট তবে মতভেদ আছে। ওলামায়ে কেরাম সতর্কতামূলক সময় নির্ধারণ করেছেন) বিশ থেকে তেইশ মিনিট সময় প্রয়োজন।
২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময়; যতক্ষণ না তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে। (জোহরের সময় শুরু হওয়ার আগের পনেরো মিনিট)
৩. সূর্য লাল/হলুদ বা কুসুমবর্ণ ধারণ করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। (সর্বনিম্ন ষোল মিনিট। তবে ওলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সতর্কতামূলক পচিশ থেকে ত্রিশ মিনিট বিরত থাকতে হবে)
সূত্র- আহসানুল ফতওয়া- ২/১৪৩, কিতাবুল ফতওয়া- ২/১২৫, ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া- ৫/৩৮৩)
উল্লিখিত তিন সময়ে সব ধরনের নামাজ পড়া নিষেধ। চাই তা ফরজ হোক কিংবা নফল। ওয়াজিব হোক বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ সময়ে শুকরিয়ার সিজদা এবং অন্য সময়ে পাঠকৃত তিলাওয়াতের সিজদাও নিষিদ্ধ। তবে এই সময়ে জানাজা উপস্থিত হলে বিলম্ব না করে তা পড়ে নেয়া যাবে।
অন্য হাদিসে আরো দুই সময়ে নামাজ পড়ার নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
সাহাবি আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন, ‘আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। [বুখারী :৫৫১,মুসলিম : ৮২৭]
উক্ত হাদীসের ভাষ্যনুযায়ী
১. ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত।
২. আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
এই দুই সময়ে কোনো ধরনের নফল নামাজ পড়া জায়েজ নেই। তবে আসরের নামাজের পর সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত ঐ দিনের আছরের নামাজ পড়া যাবে। এবং এ দুই সময়ে জানাজার নামাজ পড়া যাবে।
উল্লেখ্য, যেহেতু সূর্যের উদয় ও অস্ত সব সময় একই সময়ে হয় না, তাই ঘড়ির সময় অনুপাতে তা বর্ণনা করা কঠিন। সুতরাং এর জন্য স্থায়ী ক্যালেন্ডার বা ভালো কোন অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
প্রশ্ন: সালাতের নিষিদ্ধ সময়গুলো কি কি?
উত্তর:
সালাতের নিষিদ্ধ সময় তিনটি। এ সময়গুলোতে সাধারণ কোন নফল পড়া ঠিক নয়।
সাহাবি উকবা বিন আমের জুহানী রা. বলেন,
ثَلاثُ سَاعَاتٍ نَهَانَا رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُصَلِّي فِيهِنَّ, وَأَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ, وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ, وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ) [رواه مسلم
‘তিনটি সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সালাত পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য ডুবার আগ মূর্হুতে সূর্য হলুদাভ হওয়া থেকে শুরু করে সূর্য ডুবা পর্যন্ত ’। [সুবুলুস সালাম : ১/১১১, মুসলিম : ১/৫৬৮]
নিষিদ্ধ সময় সমূহ হচ্ছেঃ
১) ফজর সালাতের পর থেকে তীর বরাবর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পর ১৫/২০ মিনিটি পর্যন্ত।
২) ঠিক দুপুরের সময়। অর্থাৎ যোহরের সময় হওয়ার ১০ মিঃ আগে থেকে যোহরের সময় হওয়া পর্যন্ত।
৩) আসর সালাতের পর থেকে পরিপূর্ণরূপে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।
তবে তাহিয়াতুল মসজিদ বা মসজিদের প্রবেশর দু রাকআত সালাত যে কোন সময় আদায় করা শরিয়ত সম্মত। যখনই মসজিদে প্রবেশ করে বসতে যাবে তখনই দু’রাকাআত সালাত আদায় করবে। যদিও তা নিষিদ্ধ সময়ে হয়ে থাকে।
জানা উচিৎ, বিদ্বানদের মতামতের মধ্যে প্রাধান্যযোগ্য মত হচ্ছে, কারণ বিশিষ্ট নফল সালাত সমূহ আদায় করার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ সময় বলতে কোন কিছু নেই। নিষিদ্ধ সময়েও তা আদায় করতে কোন বাধা নেই।
সুতরাং ফজর সালাত বাদ বা আসর সালাত বাদ বা সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলার সামান্য পূর্বে বা রাতে দিনে যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে, বসার আগে দু’রাকাআত সালাত আদায় করবেন। অনুরূপভাবে তাহিয়াতুল ওযুর দু রাকআত সালাতও যে কোন সময় আদায় করা যায়।
অনুরূপভাবে ঘুম বা ভুল বশত: ছুটে যাওয়া যে কোন ওয়াক্তের ফরজ সালাত, ফজরে দু রাকাআত সুন্নাত সালাত (তবে এ দু রাকআত সূর্য উঠার পর পড়াই অধিক উত্তম), তাওয়াফ শেষে দু রাকাআত সালাত, সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের সালাত, জানাযার সালাত ইত্যাদি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে। অর্থাৎ এগুলো নিষিদ্ধ সময়েও পড়া জায়েয আছে। এ ব্যাপারে এটাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য অভিমত।
আল্লাহু আলাম।
কমন প্রশ্নগুলোর উত্তর
কিছু উত্তর দেয়া আছে এখানে নামাজের সময় নিয়ে।নামাজের সময়
- প্রশ্ন : নামাজের সময় আপনি কোথা থেকে নিয়েছেন?
- নিজে হিসেব করেছি। এই বইয়ের ফরমুলা ব্যবহার করে।
- প্রশ্ন : আপনার হিসাবের সাথে অন্যান্য হিসাব মিলে না। যেমন গুগুলের হিসাব।
- আমার হিসাবে ইফতারিতে ৩ মিনিট যোগ করা হয়। গুগুল বা অন্যান্য হিসাবে কোনো মিনিট যোগ করা হয় না তাই।
- প্রশ্ন : আমি কোনটা ফলো করবো?
- যেটা আপনার কমুনিটি এলাকাবাসি মসজিদ অনুসরন করে সেটা।
নামাজের সময়সূচি।নামাজের সময়সূচী।নামাজের সময় সূচিপত্র।Dhaka prayer time।Prayer time in dhaka
নামাজ কত প্রকার ও কি কি
ফজরের নামাজ কয় রাকাত|ফজরের নামাজ পড়ার নিয়ম|Namaz rakat
ফজরের নামাজ (আরবি: صلاة الفجر সালাতুল ফজর}},) মুসলিমদের অবশ্য পালনীয় দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্যতম। ফজরের নামাজ প্রথম দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত ফরজ নামাজ নিয়ে গঠিত।
ফজরের নামাজের সময় ফজরের নামাজের উত্তম সময় fajr namaz time
সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত ফজরের নামাজের সময়।
ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত শুধু ফজরের দুই রাকাত সুন্নত এবং ফরজ নামায ও কাযা নামায পড়া ব্যতীত অন্য কোনো সুন্নত, নফল নামাজ পড়া মাকরুহ।
যোহরের নামাজ কয় রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ম
আসরের নামাজ কয় রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ম
আসর ও ইশার পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নাত আদায় করা গাইরে মুয়াক্কাদা
মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ম
এশার নামাজ কয় রাকাত এশার নামাজ পড়ার নিয়ম
বেতের নামাজের নিয়ম বিতরের নামাজ পড়ার নিয়ম :
জুমার নামাজ পড়ার নিয়ম
জুমু‘আর
তাহিয়্যাতুল অজুর নামাজের নিয়ম ও ফযীলত সম্পর্কে জেনে নিন
অজু করার পর কারো সাথে কথাবার্তা না বলে, অজুর অঙ্গগুলো শুকানোর পূর্বেই দুই রাকাত নামাজ পড়া মোস্তাহাব। ইসলামী পরিভাষায় এই নামাজকে “তাহিয়্যাতুল অজু” বলে। সহীহ বুখারীতে এই নামাজের অনেক ফযীলতের কথা বলা হয়েছে। এমনকি এক হাদীসে নিয়মিতভাবে এই নামাজ আদায়কারীর জন্য বেহেশতের সু-সংবাদ প্রদান করা হয়েছে। যদি মাকরুহ ওয়াক্ত না হয়, তবে দুই রাক’আত নামাজ পড়া। ইহাকে তাহিয়্যাতুল ওজুর নামাজ বলে।
তাহিয়্যাতুল অজু’ নামাজের নিয়তঃ
বাংলা নিয়তঃ”আমি দুই রাকাআত তাহিয়্যাতুল অজু’ নামাজ আদায় করছি।’
নামাজ পড়ার নিয়ম
সাধারণ সুন্নাত ও নফল নামাজের ন্যায় যেকোন সূরা-কিরাত দ্বারা ‘ তাহিয়্যাতুল অজু’ আদায় করা যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা সব পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।
অজুর পর দুই রাকাআত নামাজ পড়লে জান্নাত ওয়াজিব
তাহিয়্যাতুল ওজুর নামাজওজু করার পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া এ সম্পর্কে হযরত ওকবা ইবনে আমের জুহানী (রাজি.) থেকে বর্ণিত আছে নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ওজু করার পর একাগ্রতা ও আল্লাহর দিকে মনকে ধাবিত করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাত ওয়াজীব করে দেবেন। (নাসায়ী শরীফ, ১ম খ-, ৩৬ পৃষ্ঠা)। এই নামাজের সময়নামাজের নিষিদ্ধ সময় ছাড়া যে কোনো সময় ওজু করার পর এ নামাজ পড়া যায়।
তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামাজ
সালাতটি এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সালাত অথচ অধিকাংশ মুসলিম-ই এই সালাত থেকে একেবারে গাফেল। তাহিয়্যাহ অর্থ হচ্ছে ‘উপঢৌকন বা তোহফা’। দুখুলু বা দাখিল অর্থ হচ্ছে ‘প্রবেশ করা’।
.
অর্থাৎ মসজিদে প্রবেশ করলেই মসজিদের আদব স্বরূপ ২ রাকআত সালাত আদায় করতে হবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদ আল্লাহর ঘর। তাই আল্লাহর ঘরে প্রবেশ করেই সরাসরি বসা যাবে না।
আল্লাহর ঘরে প্রবেশ করেই উপঢৌকন স্বরূপ আল্লাহর নিকট ২ রাকআত সালাত পেশ করতে হবে।
.
জামাত শুরু হতে আরো ৪/৫ মিনিট বাকি থাকা সত্বেও আমরা অনেকেই মসজিদে ঢুকে জামাতের জন্য অপেক্ষা করি।
.
অথচ তখন কমপক্ষে দুই রাকাত নামাজ খুব সহজে পড়তে পারি। যার ফজিলত অনেক বেশি।
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহ.) …. আবূ কাতাদা সালামী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়। (বুখারী ইঃ ফাঃ ৪৩১)
.
আবূ নু’মান (রহ.) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোনো এক) জুমার দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে খুতবা দিচ্ছিলেন। এমনি সময় এক ব্যক্তি আগমণ করল। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে অমুক! তুমি কী সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছ? সে বলল, না; তিনি বললেন, উঠ, সালাত আদায় করে নাও। (বুখারী ইঃ ফাঃ ৮৮৩)
তারাবির নামাজ কত রাকাত
তারাবির নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। মহানবি (সা.) রমজান মাসে তারাবি নামাজ আদায় করার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করতেন।
তারাবি নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি শরিফ, মুসলিম শরিফ)
পবিত্র মাহে রমজানে রোজা, তারাবি নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদতের দরুন আল্লাহ তাআলা রোজাদার ব্যক্তির পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমাণ ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রোজা রাখেন, তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন, তাঁর জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হবে।’ (বুখারি শরিফ,মুসলিম শরিফ)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বদা তারাবি নামাজ আদায় করতেন। তবে তিনি মাত্র চার রাত তারাবি নামাজ জামাতে পড়েছিলেন; কারণ যদি তিনি সর্বদা জামাতে তারাবি নামাজ আদায় করেন, তাহলে তাঁর উম্মতেরা ভাববে , হয়তো এ তারাবি নামাজ ফরজ। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই রাতে ২০ রাকাত করে তারাবি নামাজ পড়িয়েছেন।
তৃতীয় রাতে লোকজন জমা হলেও রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত হননি। পরদিন সকালে তিনি ইরশাদ করলেন, ‘আমি তোমাদের ওপর তারাবি নামাজ ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছি। তখন তা তোমাদের জন্য কষ্টকর হবে।’
তবে কেউ যদি তারাবির নামাজ ছেড়ে দেয়, সেক্ষেত্রে রোজার উপর এর কোন প্রভাব পরবে না । কেননা রোজা ও তারাবি দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্বতন্ত্র ইবাদত ।
ইসলামী শরীয়তে প্রত্যেক ইবাদতের জন্য স্বতন্ত্র নেকি ও শাস্তি নির্ধারিত । তবে হ্যাঁ, এই মহিমান্বিত মাসে তারাবির মতো ফজিলতপূর্ণ ইবাদাতে অলসতা করে ছেড়ে দেওয়া কোনভাবেই উচিৎ নয়। মহান আল্লাহ এ মাসে বেশি বেশি ইবাদাত-বন্দেগী করার তাওফিক দিন। আমিন!
ঈদের নামাজের নিয়ম
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম
ঈদ এর নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম-বিস্তারিত!
আমরা অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম জানিনা। সামনে সবাই যা করে আমরাও দেখে দেখে তাই করি। এতে ভুল হচ্ছে না ঠিক হচ্ছে তাও জানিনা। তাই আমারা ঈদের দুদিন আগেই আপনাদের সুবিদার্ধে ঈদের নামাজের নিয়ম- কানুনগুলো তুলে ধরলাম ।যাতে আপনারা ঈদের আগেই নিয়ম গুলো আয়ত্ত করে নিতে পারেন। আর আমার এ লেখায় যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে দয়া করে হ্মমা করে দিবেন। ঈদের নামাজ এর নিয়ম নিচে দেয়া হলো-
নিয়তঃ
শুরুতে নিয়ত করুন যে আমি আল্লাহর ওয়াস্তে ৬ তাকবিরের সাথে ঈদ উল আযহার এর নাময পড়ছি। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন নিয়ম নাই। যে যেই ভাষার লোক সেই ভাষাতে নিয়ত করলেই হবে। এমন কি নিয়ত মুখ দিয়ে উচ্চারণ করতে হবে এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নাই। (সব নামায এর ক্ষেত্রে)
উল্লেখ্য ঈদ এর নামাজ ২ রাকাত পড়তে হয় এবং প্রথম রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (ছানা পড়ার পর) আল্লাহুয়াকবার বলে হাত বেঁধে নামাযে দাঁড়ালেন এখন আপনাকে শুধু ছানা (সুবহানাকা) পড়তে হবে। তখন থেকে আপনাকে আর কিছু পড়তে হবেনা। ইমাম সাহেব ৩ টি তাকবীরব লবেন আপনি ও ইমাম এর সাথে তাকবীর বলবেন (হাত তুলে তাকবীর বলবেন কিন্তু হাত বাধবেন না) ইমাম সুরা পড়বেন, রুকু করবেন সিজদা করবেন আপনি শুধু রুকু সিজদার তাসবিহ পড়বেন দ্বিতীয় রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা পড়ার পর)। এখানেও প্রতি তাকবীরের পর হাত ছেড়ে দিবেন অর্থাৎ হাত বাঁধতে হবেনা। এবার ও ইমাম কে অনুসরণ করুন
এইবার ৩য় তাকবীর শেষ হলে চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যান রুকুর তাসবিহ পড়ুন সিজদাতে গেলে সিজদার তাসবিহ পড়ুন । সিজদা থেকে উঠার পর আত্তাহিয়াতু/ সাল্লি আলা /বারিক আলা/ দুয়া মাসুরা(আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি পড়ুন এবং অপেক্ষা করুন ইমাম সাহেব সালাম ফিরালে আপনিও সালাম ফিরান। জুম্য়ার খুতবার ন্যায় দু’ঈদের খুতবা শোনাও ওয়াজিব। চুপ করে খুতবা শুনতে হয়।
আরও কিছু বিষয়:
ঈদের দিনের সুন্নত পর্যায়ের করণীয় হলো
১) শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে যথাসাধ্য সুসজ্জিত হওয়া (এবং খুশী প্রকাশ করা)
(২) গোসল করা,
(৩) মিসওয়াক করা,
(৪) যথাসম্ভব উত্তম কাপড় পরা,
(৫) খুশবু লাগানো
(৬) সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা,
(৭) ফজরের পর সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া,
(৮) ঈদগাহে এক রাস্তায় যাওয়া অন্য রাস্তায় আসা,
(৯) পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া
(১০) যাবার সময় উচ্চস্বরে ঈদুল আযহার তাকবীর বলতে বলতে যাওয়া।
তাকবীর টি হল:
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
ঈদুল আযহার নামাযের নিয়ম ঠিক ঈদুল ফিতরের নামাযেরই অনুরূপ এবং যেসব কাজ ওখানে সুন্নত সেসব এখানেও সুন্নত।
পার্থক্য শুধু এই যে,
(১) নিয়তের মধ্যে ঈদুল ফিতরের পরিবর্তে ঈদুল আযহা বলবে।
(২) ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত কিন্তু ঈদুল আযহার দিনে খেয়ে যাওয়া সুন্নত নয় (বরং ঈদুল আযহার নামাযের পূর্বে কিছু না খেয়ে যাওয়াই মুস্তাহাব)।
(৩) ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর পড়া সুন্নত। ঈদুল ফিতরে আস্তে পড়া সুন্নত।
(৪) ঈদুল আযহার নামায ঈদুল ফিতর অপেক্ষা অধিক সকালে পড়া সুন্নত।
(৫) ঈদুল ফিতরে নামাযের পূর্বে সদকায়ে ফিতরা দেয়ার হুকুম, ঈদুল আযহার নামাযের পর সক্ষম ব্যক্তির জন্য কুরবানী করার হুকুম।
অনেকের ধারণা নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরি। এমনটি ঠিক নয়।যে কোনো ভাষাতেই নামাজের নিয়ত করা যায়। নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট।
ঈদের দিন ইমামের পেছনে কিবলামুখী দাঁড়িয়ে মনে এই নিয়ত করে নেবে—
‘আমি অতিরিক্ত ছয় তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি।’
এরপর উভয় হাতকান বরাবর ওঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেেঁধ নেবে। হাত বাঁধার পর ছানা অর্থাত্‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা’ শেষ পর্যন্ত পড়ে নেবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে হাত কান পর্যন্ত ওঠিয়ে ছেড়ে দেবে।দ্বিতীয়বারও একই নিয়মে তাকবির বলে হাত ছেড়ে দিতে হবে। ইমাম সাহেব তৃতীয়বার তাকবির বলে হাত বেঁধে আউজুবিল্লাহ ওবিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য যে কোনো সূরা তিলাওয়াত করবেন। এ সময় মুক্তাদিরা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এরপর ইমাম সাহেব নিয়মমত রুকু-সিজদা সেরে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। মুক্তাদিরা ইমাম সাহেবের অনুসরণ করবেন।
দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব প্রথমে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা পড়বেন।এরপর আগের মতো তিন তাকবির বলতে হবে।প্রতি তাকবিরের সময়ই উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। চতুর্থ তাকবির বলে হাত না ওঠিয়েই রুকুতে চলে যেতে হবে।এরপর অন্যান্য নামাজের নিয়মেই নামাজ শেষ করে সালাম ফেরাতে হবে।
ঈদের নামাজ শেষে ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করবেন। জুমার খুতবার মতো এই খুতবা শোনা মুসল্লিদের জন্য ওয়াজিব। খুতবার সময় কথাবার্তা বলা,চলাফেলা করা, নামাজপড়া সম্পূর্ণরূপে হারাম। কারও ঈদের নামাজ ছুটে গেলে কিংবা যে কোনো কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় একাকী তা আদায় বা কাজা করার কোনো সুযোগ নেই। তবে চারবা তার অধিক লোকের ঈদের নামাজ ছুটে গেলে তাদের জন্য ঈদের নামাজ পড়ে নেয়া ওয়াজিব।
নফল নামাজ পড়ার নিয়ম
গুরুত্বপূর্ণ ৪টি নফল নামাজ ও তার ফজিলতঃ
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম 8100তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম
♦️ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও তার ফজীলতঃ
নফল নামাযসমুহের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামায।
পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ হওয়ার পূর্বে এ নামায ফরজ ছিলো। পরবর্তীতে তা নফল গণ্য হয়।
এ নামায সম্পর্কে নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন,
“ফরজ নামাযের পর শ্রেষ্ঠ নামায হলো রাতের নামায (তাহাজ্জুদ)।” (জামি তিরমিযী, ১: ৯৯)
শেষ রাতে ত্রিপ্রহরের সময় (সাহরীর সময়) থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত এ নামাযের সময়।
তবে দিনের কঠোর পরিশ্রমে যাদের শেষ রাতে ওঠা অনিশ্চিত হয়, তারা ইশার পর ঘুমানোর পূর্বে তাহাজ্জুদের নিয়তে ২/৪ রাকআত নামায পড়ে নিতে পারেন। এরপর সম্ভব হলে আবার শেষ রাতে ওঠে তাহাজ্জুদ পড়বেন। আর তখন না ওঠতে পারলে প্রথম রাত্রির সেই নামাযের কারণে তাহাজ্জুদের ফজীলত থেকে একেবারে মাহরূম হবেন না আশাকরি।
তাহাজ্জুদ নামাযের নিয়ত তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত 12000
বরং সহিহ হাদিসে এসেছে,
“সেই সময়ের (তাহাজ্জুদের) সলাতে ফেরেশতাগণ সূর্যোদয় পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন।”
(তিরমিযি, হাদিস নং ৩৫৭৯; নাসাঈ, হাদিস নং ৫৭২)
.
তাহাজ্জুদের নামায পড়লে শরীরের রোগ দূর হয়ঃ
হাদিসে এসেছে,
“…এ নামায গোনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে এবং শরীর থেকে রোগ দূর করবে।”
(তিরমিযি, হাদিস নং ৩৫৪৯; বায়হাকি, হাদিস নং ৪৮৩৩)
.
আপনি যদি তাহাজ্জুদ সলাত আদায়কারী হন তবে আপনার জন্য সুসংবাদ! আল্লাহ নিজেই তার কিতাবে আপনার প্রশংসা করেছেন।
আল্লাহ বলেনঃ
“যে ব্যক্তি রাতের বেলা সাজদাহরত বা দাঁড়ানো থাকে, আখিরাতের ভয় করে এবং নিজ প্রতিপালকের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এমনটি করে না?”
(সূরা যুমার, আয়াত ৯)
.
যারা নিজের নফসকে গোনাহ থেকে কন্ট্রোল করতে সক্ষম হন না তাদের জন্য এই সলাত।
আল্লাহ বলেনঃ
“নিশ্চয়ই রাত্রীজাগরণ প্রবৃত্তি দমনে অত্যন্ত কার্যকর।”
(সূরা মুযযাম্মিল, আয়াত ৬)
.
তাহাজ্জুদের দ্বারা জান্নাত লাভ হয়ঃ
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
“হে লোকসকল! তোমরা সালামের প্রচলন কর, খাদ্য খাওয়াও, আত্মীয়তা রক্ষা কর এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সলাত (নামায) আদায় কর।
তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
(তিরমিযি ৪/৫৬২-৫৬৩, সহিহ)
তাহাজ্জুদ নামাজ:
তাহাজ্জুদ আরবি শব্দ,এর বাংলা অর্থ হলো রাতের নামাজ।শেষ রাতের নামাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। যাকে তাহাজ্জুদের নামাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে এ নামাজ পড়তেন। এমনকি সাহাবায়ে কিরামকেও পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহতায়ালার মাহবুব বান্দাগণের অভ্যাস। আর আল্লাহর সঙ্গে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপন তথা নৈকট্য ও সন্তোষ অর্জনের অন্যতম পন্থা।
তাই গভীর রাতে পুরো পৃথিবী যখন নিরব নিস্তবদ্ধ তখন সিজদায় লুটে পড়ুন। নামায শেষে নিজের মনের সব কথা আল্লাহর কাছে বলুন। আজ থেকেই শুরু করে দেখুন.. পার্থক্যটা নিজেই বুঝবেন..
রাকাত সংখ্যা
তাহাজ্জুদ নামায সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদা বা নফল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ নামায চার, ছয়, আট, দশ ইত্যাদি প্রমাণিত। এর চেয়ে বেশি বা কম পড়াতেও কোন সমস্যা নেই। যেহেতু নফল, তাই যত ইচ্ছা পড়া যায়। তবে উত্তম হল আট রাকাত পড়া।
সময় বা ওয়াক্ত
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ইশার নামাযের পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত। তবে এর মূল ওয়াক্ত হল, রাতের শেষ প্রহর। শেষ প্রহর বলতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থেকে ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তকে বোঝানো হয়েছে।
হ্যাঁ, ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাযের দু রাকআত সুন্নত এর পর,বিতরের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া জায়েয আছে। তবে পরিপূর্ণ তাহাজ্জুদের মর্যাদা পেতে হলে রাতের শেষ প্রহরে উঠে এই নামায আদায় করতে হবে।
তাহাজ্জুদ নামাযের আগে করণীয়:
হুযাইফা (রাদি.) বলেন, রাসুল সা. যখন তাহাজ্জুদ পড়তে উঠতেন তখন মিসওয়াক করতেন এবং আমাদেরকেও মিসওয়াক করার হুকুম দিতেন। আমরা তাহাজ্জুদ পড়তে উঠতাম অতঃপর নবী (সাঃ) ওযু করতেন (মুসলিম) । তারপর নীচের দু’আ ও তাসবীহগুলো দশবার করে পড়তেন । তারপর নামায শুরু করতেন (আবু দাউদ)
(১) “আল্লাহু আকবার”
(২) “আলহামদুলিল্লাহ”
(৩) “সুব্হানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী”
(৪) “সুব্হানাল মালিকিল কদ্দুস”
(৫) “আসতাঘফিরুলাহ”
(৬) “লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু”
(৭) “আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন দীক্বিদ্দুনিয়া ওয়া দীক্বি ইয়াওমিল ক্বিয়ামাহ”।
নিয়তআমি দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করিতেছি
নিয়ত নিয়ে কিছু লোক বাড়া বাড়ি করে সে ক্ষেত্রে কিছু কথাঃ
যেহেতু নিয়ত অন্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেহেতু নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয় । তবে এ কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে নিয়ত করা কিন্তু ফরজ। যদি ফরজ ছুটে যায় তাহলে নামাজই হবে না ।
তাই উত্তম হবে আপনি যদি মুখে নিয়ত করেন তাহলে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনি নিয়ত করেছেন
আর যদি আপনার অন্তরের মদ্যে এই নিয়ত আসে যে (আমি এখন দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করিতেছি) তাহলে মুখে নিয়ত করার প্রয়োজন নাই,
নামাজের পদ্দ্বতি এ নামাজের নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি বা সূরা নেই। অন্যান্য নামাযের মতোই যে কোনো সূরা দিয়ে এ নামায আদায় করা যাবে। তবে যদি বড় সূরা বা আয়াত মুখস্ত থাকে তাহলে সেগুলো দিয়ে পড়াই উত্তম। কারণ, রাসূল (সা.) প্রায় সময় বড় বড় সূরা দিয়ে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করতেন। তাই আমাদেরও বড় সূরা মুখস্থ করে তা দিয়ে তাহাজ্জুত নামাজ আদায় করা উচিৎ। যাহোক বড় সূরা মুখস্থ না থাকলে যে কোনো সূরা দিয়েই নামায আদায় করা যাবে।
ফজিলত হজরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল সা: ফরমাইয়েছেন, ‘মহান আল্লাহ প্রতি রাতেই নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন যখন রাতের শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে। তিনি তখন বলতে থাকেন- কে আছো যে আমায় ডাকবে, আর আমি তার ডাকে সাড়া দেবো? কে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আর আমি তাকে তা দান করব? কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব? (বুখারি ও মুসলিম)
[আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রাযি. হতে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন, “হে লোক সকল! তোমরা ব্যাপকভাবে সালাম প্রচার কর, (ক্ষুধার্তকে) অন্ন দাও এবং লোকে যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকবে তখন (তাহাজ্জুদের) নামাজ পড়। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
(তিরমিযী: ২৪৮৫)
(ইবনু মাজাহ: ১৩৩৪, ৩২৫১)]
[আবূ হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “রমযান মাসের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ)।
(তিরমিযী: ৪৩৮, ৭৪০)
(আবূ দাউদ: ২৪২৯)]
[আবূ সাঈদ রাযি. হতে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যখন কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রাতে জাগিয়ে উভয়ে (তাহাজ্জুদ) নামায পড়ে অথবা তারা উভয়ে দু’ রাকআত করে নামায আদায় করে, তবে তাদেরকে (অতীব) যিকিরকারী ও যিকিরকারিনীদের দলে লিপিবদ্ধ করা হয়।
(আবূ দাউদ: ১৩০৯,)
(ইবনু মাজাহ :১৩৩৫ )]
হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার নিয়তে বিছানায় আসে (ঘুম যায়) কিন্তু দু’চোখে ঘুম প্রবল হয়। আর ভোর পর্যন্ত সে ঘুমিয়ে থাকে, তার জন্য তার নিয়ত অনুসারে সওয়াব লেখা হবে। আর আল্লাহ তাআলঅর পক্ষ থেকে ঘুম তার জন্য সদকা স্বরূপ হয়ে যাবে।’ (নাসাঈ)
হে আল্লাহ আমাকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন এবং তাহাজ্জুদের পরিপূর্ণ মর্যাদা লাভ করার তৌফিক দান করুন। আমীন
এশরাকের নামাজ ইশরাক নামাজের নিয়ম ও তার ফজীলতঃ
ফজরের নামায পড়ার পর দুনিয়ার কাজকর্ম ও কথাবার্তা থেকে বিরত থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত স্বীয় নামাযের জায়গায় বা (পুরুষগণ) মসজিদে অন্যকোন জায়গায় বসে কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদিতে লিপ্ত থাকবেন।
অতঃপর সূর্যোদয়ের ১২/১৩ মিনিট পর সূর্য একটু উপরে উঠলে তখন ইশরাকের সময় হয়। ঐ সময় দুই রাক‘আত ইশরাকের নামায পড়লে এক হজ্ব ও এক উমরার সমান ছাওয়াব লাভ হবে বলে হাদীসে রয়েছে। (জামে তিরমিযী ১: ১৩০) এতব্যতীত আরো দুই রাক‘আতসহ মোট চার রাক‘আত পড়লে আল্লাহ তা‘আলা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার এদিনের সকল কাজের জিম্মাদার হয়ে যান বলে অপর হাদীসে উল্লেখ আছে। (জামি তিরমিযী, ১: ১০৮)
অবশ্য যদি কেউ ফজরের নামাযের পর দুনিয়াবী কাজে লিপ্ত হয়ে যায় এবং সূর্য ওঠার পর ইশরাক পড়ে, তাও জায়িয আছে।
এতেও ইশরাক আদায় হবে।
চাশত বা দোহার নামাজের নিয়ম ও তার ফজীলতঃ
সূর্য যখন আকাশে এক চতুর্থাংশ ওপরে উঠে এবং সূর্যের তাপ প্রখর হয়, তখন থেকে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত (৯টা থেকে ১১টার মধ্যে) চাশতের সময়।
তখন দুই, চার বা আট রাক‘আত নামায পড়বেন। একে চাশতের নামায বলে।
হাদীস শরীফে আছে- চাশতের দুই রাক‘আত নামাযে শরীরের সর্বমোট ৩৬০টি জোড়ার সদকা আদায় হয়ে যায় এবং সমুদ্রের ফেনার সমান গুনাহ (সগীরা) হলেও মাফ হয়ে যায়।
অপর হাদীসে আছে- তার জন্য জান্নাতে একটি বালাখানা তৈরী করা হয়। এছাড়াও হাদীসে চাশতের নামাযের আরো অনেক ফজীলত বর্ণিত হয়েছে।
সকাল ৮/৯-যোহরের ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত। ২-৮ যা খুশি। আরো বেশিও পড়া যাবে। মুখে কোন নিয়ত নাই। মনে মনে চাশত বা দোহার নামাজ পড়ছি এই চিন্তা থাকলেই চলবে।
যাওয়াল নামাজে নিয়ম ও তার ফজিলতঃ
যাওয়ালের নামায’ নামে একটি ফজীলতপুর্ণ নফল নামায রয়েছে।
এ নামায দুপুরে সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ার সাথে সাথে আদায় করতে হয়।
যেমন, নামাযের স্থায়ী সময়সূচি ক্যালেন্ডারে যোহরের যে শুরু ওয়াক্ত দেয়া হয়, সেটাই সূর্য ঢলার সময়।
সেই সময় হওয়ার সাথে সাথে যাওয়ালের নামায হিসেবে চার রাক’আত নফল নামায পড়তে হয়। এ সমযের নামাযের ফজীলত হলো, এ সময় আল্লাহ তা’আলা আসমানের সব দরজা খুলে দেন এবং আছানীর সাথে সব ইবাদত-বন্দেগী ও দু’আ কবুল হয়। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ৪৭৮)
♦️ নিয়ত কি এবং কিভাবে করতে হবে?
নিয়ত অর্থ হচ্ছে “কোন কাজ করতে ইচ্ছা করা” বা “সংকল্প করা”।
নিয়ত করতে হবে অন্তরে, মুখে উচ্চারণ করে না। এর জন্য কোনো দুয়া পড়তে হবেনা বা মুখে কোনো কিছু বলতে হবেনা। নামায পড়ার জন্য আপনি কোন ওয়াক্তের কত রাকাত কি নামায (ফরয/সুন্নত/নফল) পড়ছেন অন্তরে শুধুমাত্র এই ধারণা বা ইচ্ছা থাকলেই নিয়ত করা হয়ে যাবে। প্রত্যেক কাজের শুরুতে এইরকম অন্তরে নিয়ত করে নেওয়া “ফরয”।
আল্লাহ আমাদের কে সহিহভাবে আমলগুলো করার তৌফিক দিন, আমিন।
আওয়াবীন নামাজের নিয়ম ও তার ফজিলতঃ
সালাতুল তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম
সালাতুল-তাসবী নিয়ত ও নিয়ম
সালাতুল-তাসবী চার-রাক’আত সুন্নত
নামাজের নিয়ত সমূহঃ
আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى ارْبَعَ رَكَعَاتِ صَلَوةِ التَّسْبِيْحِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকা’আতাই সালাতিল সালাতুল-তাসবী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা অর্থ
আমি সালাতুল-তাসবী -চার-রাক’আত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।
সালাতুল-তাসবী দোয়া
আরবি-উচ্চারন
سُبْحاَنَ الله وَالْحَمدُ للهِ وَلآَ اِلَهَ اِلاَّاللهُ وَاللهُ اَكْبرُ
বাংলা-উচ্চারন
সুবহানাল্লা-হি ওয়ালহামদু লিল্লা-হি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
সালাতুল-তাসবী এর বিবরন
সালাতুত তাসবিহ হাদীস শরীফে ‘সালাতুত তাসবীহ’ নামাযের অনেক ফযীলত বর্ণিত আছে। এই নামায পড়লে পূর্বের গুনাহ বা পাপ মোচন হয় এবং অসীম সওয়ার পাওয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
তিনি বলেন, চাচা জান ! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার করে এই নামায পড়বেন। যদি দৈনিক না পারেন, তবে সপ্তাহে একবার পড়বেন। যদি সপ্তাহে না পারেন, তবে মাসে একবার পড়বেন। যদি মাসে না পারেন, তবে বছরে একবার পড়বেন। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে একবার হলেও এই নামায পড়বেন ।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম- চার রকাত । প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর, যে কোন সূরা পড়তে পারেন। তবে এই নামাযে বিশেষত্ব এই যে, প্রতি রকাতে ৭৫ বার করে, চার রকাতে মোট ৩০০ বার তাসবীহ পড়তে হবে।
মোট ৩০০ বার উপর্যুক্ত তাসবীহ পড়ার নিয়ম
১.প্রথম-রাকাত এ সানা পড়ার পরে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে।
২.তারপর স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা অথবা অন্তত তিন আয়াত পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৩.এরপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পরার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে।
৪.এরপর রুকু হতে দাড়িয়ে গিয়ে “রাব্বানা লাকাল হামদ” পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৫.এরপর সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৬. প্রথম সিজদা থেকে বসে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৭.এরপর আবার সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
৮. তারপর একই ভাবে ২য় রাকাত পড়তে হবে,সুরা ফাতিহা পড়ার আগে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে ।
৯.অতপর ২য়রাকাত এর ২য় সিজদার পর “আত্তহিয়্যাতু…”,দরুদ আর দোয়া পড়ার পরে সালাম না ফিরিয়ে ,২য় রাকাত এর মতো ৩য় এবং ৪থ রাকাত একই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে (তাসবীহ টি ১৫ বার পড়ে স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়তে হবে)।
বিঃদ্রঃ-কোন এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক সেখানে তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নিবে। আর এই নামাযে কোন কারণে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সাজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে না। তাসবীহের সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙ্গুলের কর গণনা করা যাবে না, তবে আঙ্গুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।
ইস্তিখারা নামাজ পড়ার নিয়ম
ইস্তিখারা এর শাব্দিক অর্থ: কোন বিষয়ে কল্যাণ চাওয়া।
পরিভাষায়: দু’ রাকাত নামায ও বিশেষ দু’আর মাধ্যমে আল্লাহর তায়ালার নিকট পছন্দনীয় বিষয়ে মন ধাবিত হওয়ার জন্য আশা করা। অর্থাৎ দু’টি বিষয়ের মধ্যে কোনটি অধিক কল্যাণকর হবে এ ব্যাপারে আল্লাহর নিকট দু রাকাত সালাত ও ইস্তিখারার দুয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার নামই ইস্তেখারা।
ইস্তিখারার হুকুম: এটি সুন্নাত
ইস্তিখারা কখন করবে
মানুষ বিভিন্ন সময় একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটিকে গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। কারণ, কোথায় তার কল্যাণ নিহীত আছে সে ব্যাপারে কারো জ্ঞান নাই।
তাই সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তা, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত সকল বিষয়ে যার সম্যক জ্ঞান আছে, যার হাতে সকল ভাল-মন্দের চাবী-কাঠি, সেই মহান আল্লাহর তায়ালার নিকট উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করতে হয়।
যেন তিনি তার মনের সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের উপর স্থীর করে দেন যা তার জন্য উপকারী। যার ফলে তাকে পরবর্তীতে আফসোস করতে না হয়। যেমন, বিয়ে, চাকুরী, সফর ইত্যাদি বিষয়ে ইস্তেখারা করতে হয়।
ইস্তিখারা করার নিয়ম:
১) ওযু করতে হয়।
২) ইস্তিখারার উদ্দেশ্যে দু’ রাকায়াত নামায পড়তে হয়।
৩) নামাযের সালাম ফিরিয়ে আল্লাহ তায়ালার বড়ত্ব ও মর্যাদার কথা মনে জাগ্রত করে একান্ত বিনয় ও নম্রতা সহকারে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরূদ পেশ করার পর নিচের দুয়াটি পাঠ করতে হয়:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ شَرٌّ فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ ارْضِنِي بِهِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়াআসআলুকা মিনফাদলিকাল আযীম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না “হাযাল আমরা” (এখানে নিজের কাজের কথা উল্লেখ করবে) খাইরুল্লি ফী- দ্বীনী ওয়া মা’আশী ওয়া আক্বিবাতি আমরী (অথবা বলবে: আ’ জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাকদিরহু লী, ওয়া-য়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিকলী ফীহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাযাল আমরা (এখানে নিজের কাজের কথা উল্লেখ করবে) শাররুল্লী ফী দীনী ওয়া মা’আশী ওয়াআকী¡বাতি আমরী (অথবা বলবে: আ জিলি আমরী ওয়া আজিলীহি) ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরীফনী আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনী বিহী। (এর পর নিজের কাজের কথা উল্লেখ করবে)
অর্থ: হে আ্ল্লাহ! আমি আপনার কাছে কল্যাণ চাই আপনার ইলমের সাহায্যে। আপনার কাছে শক্তি কামনা করি আপনার কুদরতের সাহায্যে। আপনার কাছে অনুগ্রহ চাই আপনার মহা অনুগ্রহ থেকে। আপনি সর্বোময় ক্ষমতার অধিকারী, আমার কোন ক্ষমতা নাই। আপনি সর্বজ্ঞ আমি কিছুই জানি না। আপনি সকল গোপন বিষয় পূর্ণ অবগত।
“হে আল্লাহ! আপনার ইলমে এ কাজ আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে (অথবা বলেছিলেন, দুনিয়া ও পরকালের দিক থেকে মন্দ হয়) তবে তা আমাকে করার শক্তি দান করুন। পক্ষান্তরে আপনার ইলমে এ কাজ যদি আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে তবে আমার ধ্যান-কল্পনা একাজ থেকে ফিরিয়ে নিন। তার খেয়াল আমার অন্তর থেকে দূরীভূত করে দিন। আর আমার জন্যে যেখানেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে এর ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে এরই উপর সন্তুষ্ট করে দিন ।
এ দু’আর যেখানে “হাজাল আমরা” শব্দটি আসবে, সেখানে মনে মনে যে কাজটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছে সেটি উচ্চারণ করবে আরবীতে বা মনে মনে, পুনরায় সে বিষয়টি ভেবে নিবে। উক্ত দু’আ শেষ করে কারো সাথে কথা না বলে কিবলামুখী হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। ঘুম থেকে জাগার পর মন যেদিকে সায় দিবে, বা যেদিকে আগ্রহী হয়ে উঠবে, সেটিই ফলাফল মনে করবে। [সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৪৮০, তুহফাতুল আলমায়ী-২/৩৩৮]
সুত্র : জামিআতুল আসাদ
সালাতুল কাতল বা নিহত হওয়া কালীন নামায
যে কোন মুসলমান যদি নিজের মৃত্যু সম্পর্কে বুজতে বা জানতে পারে যে তাকে হত্যা করা হবে ।তবে সে ২ রাকায়াত
নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
এই নামাজের আগে গোসল করা মুস্তাহাব।
সালাতুত তাওবা বা তাওবার নামায
সালাতুত তাওবা বিষয়টি আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদসহ অনেক হাদিসে রয়েছে।
কোনো গুনাহ হয়ে গেলে ওযু করে পবিত্র হয়ে দুই রাকাত সালাতুত তওবার নামাজ পড়ুন।
অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিশেষভাবে যে নফল ছালাত আদায় করা হয়, তাকে ‘ছালাতুত তাওবাহ’ বলা হয়। আবুবকর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, কোন লোক যদি গোনাহ করে। অতঃপর উঠে দাঁড়ায় ও পবিত্রতা অর্জন করে এবং দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে। অতঃপর আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।
সালাতুত তওবা নামাজের নিয়ত,
নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাক্ আতাই ছালাতিত্ তাওবাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারীফাতি।
— আল্লাহুআকবার।তাকবির
আরবিতে নিয়্যত না জানলে বাংলায় নিয়ত পড়ুনঃ
হে আল্লাহ আমি কেবলা মুখি হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে দুই রাকাত সালাতুত তওবার নামাজের নিয়ত করছি।
আল্লাহু আকবার,
তারপর নিয়ত করে সানা পড়ে যথারীতি
প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা নছর>–
দিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা নাস>–
রুকু সিজদা করে বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে সালাম ফিরিয়ে কয়েকবার দরুদ পড়ে (নিচে উল্লেখিত দোয়াটি) পড়ে
আল্লাহর কাছে অতীত বর্তমানের সকল গোনাহর মাফ চান এবং ভবিষ্যতের সকল গোনাহ থেকে হেফাজত করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
তওবার দোয়া
অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যেই ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয় অর্থাৎ সে যদি বড় রকমের গুনাহগার হয়, তবুও আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।
(তিরমিযী ৪/৬৯, আবুদাঊদ ২/৮৫, মিশকাত হা/২৩৫৩, হাদীসটি সহীহঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭২৭)
নিয়ত সম্পর্কে একটি বিষয় অন্তরে গেঁথে নিন যে, নিয়ত মুখে করা জরুরী নয়।
যদি আরবী নিয়ত করেন,তবে বিশুদ্ধ উচ্চারণ হতে হবে ।
আর বাংলাতেও বলতে পারেন। সর্বাবস্থায় অন্তরে নিয়ত উপস্থিত থাকা উচিত।
হাজতের নামাজ
ভয়াবহ পরিস্থিতির নামাজ
ঝড়,বৃষ্টি অতিরিক্ত,ভূমিকম্প,কলেরা,ইত্যাদি মহামারির সময় আলাদা,আলাদাভাবে নামাজ আদায় করবে।
জামাত করা যাবে না।
আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
এই নামাজের আগে গোসল করা মুস্তাহাব।
কুনুতে নাযেলার নামাজ
কুনুতে নাযেলা বলতে সেই দোয়া বুঝায় যা নবী পাক (স) দুশমনদের ধ্বংসকারীতা থেকে রক্ষার জন্যে তাদের শক্তি চূর্ণ করে তাদেরকে ধ্বংস করার জন্যে পড়েন। তাঁর পরে সাহাবায়ে কেরাম (রা) তা পড়ার ব্যবস্থা করেছেন।
আহলে ইসলাম যদি কোন সময়ে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়, দিন রাত ব্যাপী দুশমনের পক্ষ থেকে আসন্ন বিপদে এবং তাদের ভয় ও সন্ত্রাসে তাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে, যদি চারদিকে দুশমনের শক্তিমত্তা দেখা যায় তারা যদি মিল্লাতে ইসলামিয়াকে ধ্বংস করার জন্য এবং ইসলামের নূর নিভিয়ে দেয়ার জন্যে আহলে ইসলামের উপর অমানুষিক যুলুম করতে থাকে, এমন নৈরাশ্যজনক অবস্থা থেকে বাঁচর জন্যে দুশমনের শক্তি চূর্ণ করতে তাদেরকে ধ্বংস করতে আল্লাহর কাছে দরখাস্ত করার জন্যে কুনুতে নাযেলা পড়া মসনূন। মূলত: যুদ্ধ, শত্রুর আক্রমণ প্রভৃতি বিপদের সময় অথবা কারুর জন্য বিশেষ কল্যাণ কামনায় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে বিশেষভাবে এই দো‘আ পাঠ করতে হয়।কুনুতে নাজেলা কী ও তা পড়ার নিয়ম।
بسم الله الرحمن الرحيم
أَبُو مَالِكٍ، قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي: يَا أَبَتِ إِنَّكَ قَدْ ” صَلَّيْتَ خَلْفَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ، وَعَلِيٍّ هَاهُنَا بِالْكُوفَةِ، قَرِيبًا مِنْ خَمْسِ سِنِينَ، أَكَانُوا يَقْنُتُونَ؟ قَالَ: أَيْ بُنَيَّ، مُحْدَثٌ
হযরত আবু মালিক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আমার পিতা! নিশ্চয় আপনি রাসূল সাঃ, হযরত আবু বকর রাঃ, হযরত উমর রাঃ, হযরত উসমান রাঃ ও হযরত আলী রাঃ এর পিছনে কুফায় প্রায় পাচ বছর নামায পড়েছেন, তারা কি ফজরের নামাযে সর্বদা কুনুত [নাজেলাহ] পড়তেন? তিনি বললেন, হে আমার বৎস! না এটি নতুন করে শুরু হয়েছে। [আগে পড়া হতো না]। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৫৮৭৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১২৪১, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৪০২, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১৪৭৪, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-১২৯২}
হাদীসটি সহীহ।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَقْنُتُ إِلَّا أَنْ يَدْعُوَ لِقَوْمٍ عَلَى قَوْمٍ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ عَلَى قَوْمٍ أَوْ يَدْعُوَ لِقَوْمٍ، قَنَتَ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِ
ان قنوت النوازل لم ينسخ بل هو مشروع اذا نزل بالمسلمين نازلة ان يقنت الامام في الفجر –
অর্থাৎ, কুনুতে নাজেলা রহিত হয়নি বরং তা এখনো বহাল রয়েছে। মুসলমানদের দুর্যোগ কালে ফজরের নামাজে ইমাম কুনুত পড়বে। (এলাউস সুনান – ৬/৮১)
মুসলমানদের উপর যদি ব্যাপক বালা-মুসিবত ও বিপদ আসে, তাহলে সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার নিকট সাহায্য কামণার্থে কুনুতে নাজেলা পড়া মুস্তাহাব। রাসূল সাঃ বিপদ আপতিত হলে ফজরের নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সময় কুনুতে নাজেলা পড়েছেন। {সহীহ বুখারী-২/৬৫৫, তাহাবী শরীফ-১/১৭৪, সহীহ মুসলিম-১/২৩৭}
তাই হানাফী মাযহাব মতে কাফের, মুশরিক ও জালেমদের পক্ষ থেকে বা আসমানী কোন বিপদ আসলে কুনুতে নাজেলা পড়া উচিত। {ফাতওয়ায়ে শামী ২/৪৪৮-৪৪৯}
কুনুতে নাজেলা পড়ার পদ্ধতি
ফজরের নামাযের ফরজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে দু’আ পড়বেন, আর মুসল্লিগণ আস্তে আস্তে আমীন বলবেন। দুআ শেষে নিয়ম মোতাবিক সেজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে নামায শেষ করবেন। (এলাউস সুনান – ৬/৮১)
হাত তোলে দুআ করার পক্ষে কোন প্রমাণ আমাদের নজরে আসেনি।
কুনুতে নাজেলা
اللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيمَنْ هَدَيْتَ ، وَعَافِنَا فِيمَنْ عَافَيْتَ ، وَتَوَلَّنَا فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ ، وَبَارِكْ لَنَا فِيمَا أَعْطَيْتَ ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ ، إِنَّكَ تَقْضِى وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ ، إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ (سنن البيهقى الكبرى، رقم الحديث-2960)
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا ، وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ ، وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ ، اللَّهُمَّ الْعَنْ كَفَرَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ الَّذِينَ يَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِكَ ، وَيُكُذِّبُونَ رُسُلَكَ ، وَيُقَاتِلُونَ أَوْلِيَاءَكَ اللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمَ ، وَزَلْزِلْ أَقْدَامَهُمْ ، وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِى لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِينَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِى عَلَيْكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ ، وَلَكَ نُصَلِّى وَنَسْجُدُ ، وَلَكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ، نَخْشَى عَذَابَكَ الْجَدَّ ، وَنَرْجُو رَحْمَتَكَ ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ. (سنن البيهقى الكبرى، رقم الحديث-2962
والله اعلم بالصواب
সফরের নামাজ
সফর করার নিয়তে নিজ বাড়ি লোকালয় থেকে বের হওয়ার সময়,সফর থেকে ফিরে আগে মসজিদে গিয়ে ২ রাকায়াত নামাজ
পড়া মুসতাহাব।
কসর নামাজের নিয়ম
#সালাতুল মুসাফির পর্ব (১)
মুসাফির কে?
যে ব্যক্তি কমপক্ষে ৪৮মাইল(৭৭.২৪৬৪কিলোমিটার)সফর করার নিয়তে নিজ আবাদীর লোকালয় থেকে বের হয়েছে, সে শরীআতের পরিভাষায় মুসাফির হিসেবে গন্য হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯,আসারুস সুনান পৃ: ২৬৩।
মাসআলাঃ৪৮ মাইলের কম সফরের নিয়তে বের হলে মুসাফির হিসাবে গন্য হবে না।
মাসআলাঃকেউ ৪৮ মাইল সফরের নিয়তে বের হল না। অথচ নিয়ত ব্যতীত সারা দুনিয়া ঘুরে এল । সে মুসাফির হিসাবে গন্য হবে না।-রদ্দুল মুহতার ২/১২১।
মাসআলাঃ৪৮মাইল রাস্তা যত কম সময়েই অতিক্রম করা হোক না কেন (এমনকি ১০মিনিটে অতিক্রম করা হলেও) তা অতিক্রম করার দ্বারা মুসাফির গন্য হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে দুরত্বই মুল। সময় বা ক্লান্তি আসা ধর্তব্য নয়।- রদ্দুল মুহতার ২/১২৩।
মাসআলাঃকেউ বাড়ী থেকে কমপক্ষে ৪৮মাইল সফরের নিয়তে বের হল। কিন্তু পথিমধ্যে কোন একটি স্থানে প্রয়োজনের কারনে ১৫দিনের কম থাকার নিয়ত করল। সেখান থেকে আজ যায় কাল যায় করে (টানা ১৫দিন থাকার নিয়ত ব্যতীত) কয়েক বছর থাকলেও সে মুসাফির গন্য হবে। মোটকথা যতক্ষন সে কোন একটি স্থানে টানা ১৫ থাকার নিয়ত না করবে সে মুকীম গন্য হবে না।-হিদায়া ১/১৬৬।
অনুরূপভাবে কেউ ৪৮ মাইল বা তার চেয়ে বেশী দুরুত্ব সফর করে গিয়ে কোন স্থানে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে সেও মুসাফির হিসাবে গন্য হবে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখিত স্থানটি তার বসতের স্থান ( ওয়াতনে আসলী বা ওয়াতনে ইকামত) না হতে হবে। কেননা নিজস্ব বসতের স্থানে কেউ যত দুর থেকে সফর করে আসুক না কেন সে মুকীম গন্য হবে। -আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫।
মাসআলাঃকেউ কমপক্ষে ৪৮মাইল সফরের নিয়তে বের হল। কিন্তু পথিমধ্যে কোন জায়গায় ১৫ দিন বা তার বেশী থাকার নিয়ত করল বা রাস্তার মাঝে তার ওয়াতনে আসলী কিংবা ওয়াতনে ইক্বামত এসে গেল তবে সে মুকীম গন্য হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯।
#মুকীমের বসবাসের স্থান দুধরনের হতে পারে-
(১) ওয়াতনে আসলী।
(২) ওয়াতনে ইক্বামত।
ওয়াতনে আসলীঃ
মাসআলাঃওয়াতনে আসলী মানুষের এমন নিজস্ব বাসস্থানকে বলে যেখানে সে জন্মগ্রহন করেছে অথবা তার পরিবার বসবাস করে অথবা যেখানে সে চিরস্থায়ীভাবে বসবাসের নিয়ত করেছে।- আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১।
মাসআলাঃওয়াতনে আসলীর জন্য বাড়ী,জায়গা ও স্থায়ীভাবে বসবাসের নিয়ত জরুরী।–প্রাগুক্ত
মাসআলাঃওয়াতনে আসলী একাধিক হতে পরে। যেমন কেউ নতুন করে শহরে বাড়ী করল। আর পূর্ব থেকে তার গ্রামে বাড়ী রয়েছে। এখন সে যদি উভয় বাড়ীতে আসা-যাওয়া করে এবং উভয়টিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের নিয়ত করে তবে উভয়টি তার জন্য ওয়াতনে আসলী হবে। -আল বাহরুর রায়েক ২/১৩৬।
মোটকথা ওয়াতনে আসলী নির্ধারনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিয়তই মূল। সে যদি দুটি স্থানকে ওয়াতনে আসলী বানায় এবং উভয়টিতে স্থায়ীভাবে থাকার নিয়ত করে ( এখানে কিছু দিন ওখানে কিছু দিন) তবে উভয়টি তার জন্য ওয়াতনে আসলী গন্য হবে। -ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৪৬।
মাসআলাঃকেউ শহরে চাকুরী করে। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। তবে গ্রামে তার বাড়ী রয়েছে। ভবিষ্যতে সেখানে গিয়ে বসবাস করার নিয়ত করেছে । এবং মাঝে-মধ্যে গ্রামে বেড়াতে যায়। তবে তার গ্রামের বাড়ীটি তার জন্য ওয়াতনে আসলী হবে। পক্ষান্তরে যদি উক্ত লোকটি গ্রামের বাড়ীটি তার নিজ বাড়ী হিসাবে বহাল না রাখে এবং পরবর্তিতে সেখানে বসবাসের নিয়ত না থাকে এবং আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেয় তবে গ্রামের বাড়ীটি তার জন্য আর ওয়াতনে আসলী থাকবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/১৩১।
মাসআলাঃকারো কোন স্থানে শুধু জমিন থাকলে এর দ্বারা তা ওয়াতনে আসলী গন্য হবে না। -আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১।
#ওয়াতনে আসলীর হুকুমঃ
মাসআলাঃ ওয়াতনে আসলীতে কেউ মুসাফির হয় না।কেউ ওয়াতনে আসলীতে ১ ঘন্টার জন্য গেলেও মুকীম গন্য হবে। আর সে চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামায চার রাকাআতই পড়বে। কসর জায়েয নেই।-আদ্দুররুল মুখতার ২/৬১৪ (যাকারিয়া)।
ওয়াতনে ইক্বামতঃ
মাসআলাঃকেউ কমপক্ষে ৪৮ মাইল সফর করে কোন স্থানে গিয়ে কমপক্ষে ১৫দিন থাকার নিয়ত করলে তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হিসাবে গন্য হবে। ১৫দিনের কম থাকার নিয়ত করলে ওয়াতনে ইকামত হবে না। -আল বাহরুর রায়েক ৪/৩৪১।
মাসআলাঃ #ওয়াতনে ইক্বামত সফরের দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। অর্থাৎ কেউ কোন স্থানে কমপক্ষে ১৫দিন থাকার পরে সেখান থেকে সফর করে (কমপক্ষে ৪৮মাইল দুরুত্ব অতিক্রম করে) চলে এলে তার ওয়াতনে ইক্বামত বাতিল হয়ে যায়। পরে কোন দিন উক্ত স্থানে পূনরায় গেলে ১৫ দিন থাকার নিয়ত ব্যতীত তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হবে না। তবে নতুন করে আবার ১৫দিন থাকার নিয়ত করলে তা তার জন্য ওয়াতনে ইক্বামত হবে। -মারাকিল ফালাহ ১/১৮৭।
মাসআলাঃকেউ কোন স্থানে সফর করে গিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন থাকল। অতঃপর তার সামানপত্র সেখানে রেখে গিয়ে উক্ত স্থান থেকে চলে গেল। এর পর সেখানে ১৫দিনের কম থাকার নিয়তে গেলেও সে মুকীম গন্য হবে। তবে তার সামানপত্র সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলে কমপক্ষে ১৫ থাকার নিয়ত ব্যতীত সে উক্ত স্থনে মুকীম গন্য হবে না।-বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৮-১১২।
মাসআলাঃবিভিন্ন চাকুরীজীবী ও পেশাজীবীরা শহরে বাসা ভাড়া করে থাকে। তারা গ্রামের বাড়ীতে গেলেও বাসায় সামানপত্র রেখে যায়। কাজেই শহরে তারা মুকীম গন্য হবে। তবে এক্ষেত্রে একবার একটানা ১৫ দিন থাকা শর্ত। -আদ্দুরুরল মুখতার ১/১২৩।
মাসআলাঃকেউ দুই স্থান মিলে ১৫ দিন থাকার নিয়ত করল। তবে প্রতিদিন রাতে সে এক জায়গাতে থাকবে এবং দিনে অন্যত্র অবস্থান করবে।এমতাবস্থায় সে রাতের স্থানে মুকীম হবে এবং পুরো নামায পড়বে।কিন্তু যদি দিনের কর্মস্থল রাতের স্থান থেকে ৪৮ মাইল দুরত্বে হয় তবে দিনের স্থনে সে মুসাফির হবে এবং কসর করবে। আর যদি উভয় স্থানের দুরত্ব কমপক্ষে ৪৮মাইল না হয় তবে উভয় স্থানে পুরো নামায পড়বে। মোটকথা রাতে থাকার স্থান ধর্তব্য হবে। -রদ্দুল মুহতার ২/৬০৭(যাকারিয়া)।
#ওয়াতনে ইক্বামতের হুকুমঃ
মাসআলাঃআলাঃ ওয়াতনে ইক্বামতে মুসাফির গন্য হবে না। বরং মুকীম গন্য হবে। এবং চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামায চার রাকাআতই পড়বে। কসর জায়েয নেই। -আল বাহরুর রায়েক ৪/৩৪০-৩৪২।
মুসাফির কখন থেকে গন্য হবে?
মাসআলাঃকেউ যখন তার নিজ আবাদীর লোকালয় থেকে (কমপক্ষে ৪৮ মাইল সফরের নিয়তে) বের হয়ে যাবে তখন থেকে সে মুসাফির গন্য হবে। অর্থাৎ তার নিজ আবাদী থেকে বের হওয়ার পূর্বে সে মুসাফির গন্য হবে না।-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯,আসারুস সুনান পৃ: ২৬৩।
মাসআলাঃষ্টেশন যদি লোকালয়ের সাথে সংযুক্ত হয় তবে তা আবাদীর মধ্যে গন্য হবে। -আদ্দুরুরল মুখতার ২/৫৫৯-৬০০।
যে রাস্তা দিয়ে সফর করবে তা ধর্তব্য হবেঃ
মাসআলাঃযদি কোথাও যাবার দুটি রাস্তা থাকে আর একটি সফরের দুরুত্বে হয় এবং অন্যটি তার চেয়ে কম হয় তবে সফরের দুরুত্বের রাস্তায় গেলে মুসাফির হবে। অন্যটিতে মুসাফির গন্য হবে না। মোটকথা যে রাস্তা দিয়ে গমন করবে তা ধর্তব্য হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৬
#আবাদীর সীমানাঃ
মাসআলাঃকোন আবাদীর সীমানা হল, যখন সংযুক্ত বাড়ী-ঘরের পরে ফসলী জমি এসে যায় অথবা বাড়ী-ঘরের মাঝে ১৩৭.১৬ মিটার বা তার চেয়েও বেশী ফাকা থাকে তখন সে ঐ সংযুক্ত ঘর বাড়ীর পর থেকেই মুসাফির গন্য হবে। যদি শহর ও ফেনায়ে শহরের(শহরবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় স্থানসমূহ যেমন- কবর স্থান,ঘোড়দৌড় এর জন্য নির্দিষ্ট স্থান) মাঝে ফসলী জমি না থাকে অথবা উভয়ের মধ্যে ১৩৭.১৬ মিটার বা তার চেয়ে বেশী ফাকা না থাকে তবে উক্ত ফেনা অতিক্রম করার পর মুসাফির গন্য হবে। আর যদি উভয়ের মাঝে ফসলী জমি থাকে বা মধ্যবর্তি দুরুত্ব ১৩৭.১৬ মিটার বা তার চেয়ে বেশী হয় তবে উক্ত ফেনা আবাদীর মধ্যে গন্য হবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/১২১-১২৩, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৭২
মাসআলাঃশহরের চার পাশে সংযুক্ত বস্তি গুলো শহরের হুকুমে।-রদ্দুল মুহতার ২/১২১
মাসআলাঃঢাকা শহরের সীমানা হল উত্তরে টঙ্গীব্রিজ, দক্ষিনে বাবু বাজার ব্রিজ,দক্ষিন-পূর্ব দিকে কাচপুর ব্রিজ এবং পশ্চিম দিকে গাবতলী ব্রিজ। অর্থাৎ উল্লেখিত ব্রিজগুলোর পূর্ব পর্যন্ত ঢাকা সিটির সীমানা। কেননা উল্লেখিত ব্রিজ গুলোর ভিতরের এলাকাগুলো আবাদী ও জনবসতি দ্বারা সংযুক্ত।
#মুসাফিরের হুকুমঃ
মুসাফির ৪ রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামায ২ রাকাআত পড়বে। এটাকে কসর নামায বলে। মুসাফিরের জন্য নামাজ কসর করা ওয়াজিব।- রদ্দুল মুহতার ২/১২১-১২৩
শরঈ সফররত অবস্থায় সুবহে সাদিক হয়ে গেলে মুসাফিরের জন্য রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে। সে পরে কাযা করে নিবে। -হিদায়া ১/২২১
মুসাফির তিন দিন তিন রাত মোজার উপর মাসেহ করতে পরে।- হিদায়া ১/৫৭
#মুসাফিরের নামায সংক্রান্ত মাসায়েলঃ
মুসাফির নামায কিভাবে আদায় করবে?
মাসআলাঃমুসাফির যোহর,আসর ও এশায় ৪রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামায ২ রাকাআত করে আদায় করবে। ফজর ও মাগরিব যথা নিয়মে ২ও ৩ রাকাআত করে পড়বে। অনুরূপভাবে বেতর নামাযও তিন রাকাআত পড়বে।-রদ্দুল মুহতার ২/১২১-১২৩,ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯।
মুসাফিরের জন্য জামাআতের হুকুমঃ
মাসআলাঃমুসাফিরের জন্য জামাআতে নামায পড়া ওয়াজিব নয়। বরং মুস্তাহাব। তবে সফর অবস্থায় তাড়াহুড়া না থাকলে জামাআতেই নামায পড়া উচিত। আর ব্যস্ততা বা পেরেশানী থাকলে জামাআত ছেড়ে দেওয়র অনুমতি রয়েছে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৩,আল বাহরুর রায়েক ১/৩৪৬।
#মুসাফিরের জন্য সুন্নাতের হুকুমঃ
মাসআলাঃমুসাফির ব্যস্ততা বা তাড়াহুড়ার সময় ফজরের সুন্নাত ব্যতীত অন্য সুন্নাত ছাড়তে পারবে। যেমন-সুন্নাত পড়লে ছফরের সাথীদের পিছে পড়ে যাবে বা গাড়ি না পাওয়ার আশংকা রয়েছে বা অন্য কোন ক্ষতি হতে পরে। এমতাবস্থায় সুন্নাতকে ছেড়ে দিবে। বড় ওযরের ক্ষেত্রে ফজরের সুন্নাতও ছেড়ে দিতে পারে। তবে কোন ব্যস্ততা না থাকলে সুন্নাত পড়ে নিবে। যেমন-কোথাও সফর করে ৮/১০দিনের জন্য বেড়াতে গেল অথবা গাড়ি ছাড়তে অনেক দেরি হবে অথবা সুন্নাত পড়লে সাথীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না। এমতাবস্থায় সুন্নাত পড়ে নিবে।রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে সুন্নাত পড়তেন। -জামে তিরমিজী হাদীস নং-৫৫১, আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯
#মুসাফির ভুলে বা ইচ্ছায় চার রাকাআত নামায পড়ে ফেললেঃ
মাসআলাঃমুসাফির ভুলে বা ইচ্ছায় (ফরজ নামায ) চার রাকাআত পড়ে ফেললে যদি সে ১ম বৈঠক করে থাকে তবে তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে। প্রথম দুই রাকাআত ফরজ ও পরের দুই রাকাআত নফল গন্য হবে। এক্ষেত্রে তার জন্য সিজদায়ে সাহু করা ওয়াজিব। যদি সিজদায় সাহু না করে থাকে তবে উক্ত নামায পূনরায় পড়া ওয়াজিব। আর যদি ১ম বৈঠকে না বসে থাকে তবে পূরো নামায নফল গন্য হবে। ফরজ নামায পূনোরায় পড়তে হবে। উল্লেখ্য যে, ইচ্ছাকৃত চার রাকাআত নামায পড়লে সে গোনাহগার হবে।- আদ্দুরুরল মুখতার ২/১২৩-১৩০,আলবাহরুর রায়েক ২/২২৯,তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১১,ফাতাওয়া দারুল উলূম ৪/৩১৫।
জামাআতের সাথে পড়লে কসর করার নিয়ম কি হবে ?? মসজিদের ইমাম তো কসর করবেনা।
ইমামের অনুসরণ করবে। অর্থাৎ ইমাম মুকিম হলে আর মুসাফির ইমামের ইক্তিদা করলে চার রাকাত চার রাকাতই পড়বে।
কমপক্ষে ৭৭ কি.মি.সফরের নিয়তে বের হবার ১-২ কিলোমিটার যাওয়ার পরও কি সে মুসাফির বলে গণ্য হবে?
জ্বি
জানাজার নামাজের নিয়ম জানাজার নামাজের দোয়া
জানাজার নামাজের দোয়া জানাযার দোয়া জানাজার নামাজ janajar dua জানাজার নামাজের নিয়ত janajar namaj janaza namaz জানাজারের দোয়া janaza namaz dua janajar namaz
জানাযার ফরজ ২টি ও সুন্নাত ৩টি ও জানাযা নামাযের নিয়ম :
মাসআলাঃ জানাযার ফরজ ২টি
(১)চার তাকবীর বলা (২)দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া (শামী -৩/২০৯
মাসআলাঃ জানাযার সুন্নাত ৩টি
(১)সানা পড়া (২) দুরুদ শরীফ পড়া (৩) দোআ পড়া।
জানাযা নামাযের নিয়মঃ
১. প্রথম তাকবীরের পর ছানা পড়া,
২. দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরূদ পড়া,
৩. তৃতীয় তাকবীরের পর দোয়া পড়া,
৪. চতুর্থ তাকবীরের পর সালাম ফিরানো।
হাত উঠানো : জায়নামাজে শুধু প্রথম তাকবীরে হাত উঠাবে এ ছাড়া অন্য কোথাও হাত ওঠানোর নিয়ম নেই।
জানাযা নামাযের নিয়ম : জামায়াতের সামনে কাফন ঢাকা লাশ রাখতে হবে। তার পেছনে লাশের সিনা বরাবর ইমাম দাঁড়াবেন। তার পেছনে মুক্তাদীরা কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবেন। সবাই মনে মনে ধারনা করবেন : এই মৃত ব্যক্তির দোয়ার জন্য জানাযার নামায পড়ছি।
মাসআলাঃ
শুধু জুতার উপরিভাগ পাক হলেই জুতা খুলে জুতার ওপর দাঁড়িয়ে নামায পড়া জায়েয নিচের অংশ পাক হোক বা নাপাক হোক। (মারাকিল ফালাহ -৫৮২,বাহরুর রায়েক – ২/৩১৫,ইমদয ফতওয়া -১৮৩২,আহসানুল ফাতওয়া -৪/২০২)
জানাজার নামাজ
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করাইয়া, কাফন পরাইয়া তাহার মাগফিরাত ও পরকালে মুক্তির জন্য কতক লোক একত্র হইয়া যে নামায পড়িতে হয়, তাহাকে জানাযার নামায বলে। এই নামায মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া অথাৎ জানাযার সংবাদ শ্রবণকারী সকল লোকের পক্ষ হইতেই ফরয আদায় হইয়া যায়, আর কেহই আদায় না করিলে প্রত্যেককেই গুণাহ্গার হইতে হইবে।
লাশকে গোসল করাইয়া কাফন পরাইয়া একটি প্রশস্ত পবিত্র স্থানে খাটের উপরে উত্তর শিয়রী করিয়া শয়ন করাইবে; তারপর মৃতের যাবতীয় ঋণ ও দেনা ইত্যাদি শোধ বা মাফ করাইয়া তাহার সন্তান বা অন্য কোন ওলী ব্যক্তি নামাযের ইমামতী করিতে মৃতকে সম্মুখে রাখিয়া তাহার বক্ষ বরাবর দন্ডায়মান হইবেন। লাশের ওলী নিজে ইমামতী না করিলে তাহার অনুমতিক্রমে অন্য কোন পরহেজগার আলেম ব্যক্তি ইমাম নিযুক্ত হইবেন। ইমামের পিছনে মোক্তাদিরা তিন, পাঁচ বা সাত এইরূপ বে-জোড় কাতারে দাঁড়াইবে। এই নামায দাঁড়াইয়া আদায় করিতে হয়, ইহাতে কোন রুকু সিজদা বা বৈঠক ইত্যাদি নাই। এই নামায বসিয়া পড়িলে শুদ্ধ হইবে না।
জানাযা নামাযের নিয়ত, নিয়ম ও দোয়া..
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবাআ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।অনুবাদঃ আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে জানাযা নামাজের চারি তাকবীর ফরযে কেফায়া কেবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে আদায় করার মনস্থ করলাম। ইহা আল্লাহু তায়ালার প্রশংসা রাসূলের প্রতি দরূদ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া (আর্শীবাদ) আল্লাহ মহান।
নিয়তের মধ্যে অন্যান্য জামাতের নামাযের নিয়তের ন্যায় ইমাম তাহার অতিরিক্ত খাছ কালাম (আনা ইমামুলেলমান হাজারা ওয়া মাইয়্যাহজুরু) এবং মোক্তাদিগণ তাহাদের অতিরিক্ত খাছ কালামটি পাঠ করিলে। (একতেদাইতু বেহাযাল ইমাম) আর নিয়তের ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ শব্দটি কেবল পুরুষ লাশের বেলায় বলিতে হইবে, কিন্তু স্ত্রী লাশ হইলে ঐ শব্দটির স্থলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলিতে হইবে।
.
নিয়তের পরে ছানা:
.
سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
.
উচ্চারণঃ সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।অনুবাদঃ হে আল্লাহ আমরা তোমার পবিত্রতার গুণগান করিতেছি। তোমার নাম মংগলময় এবং তোমার স্তুতি অতি শ্রেষ্ঠ, তুমি ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই।ছানার পরে তাকবীর বলিয়া তাশাহুদের পরের দরূদ পড়িতে হয়।
দুরুদ শরীফ:
.
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
.
উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলাইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অনুবাদঃ যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবংমহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।
জানাযার দোয়া:
اَلَّهُمَّ اغْفِرْلحَِيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَىالاِْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَاَارْ حَمَالرَّحِمِيْنَ
.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহীদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।অনুবাদঃ হে আল্লাহ্ আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অুপস্থিত বালকও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে মৃত্যুর মুখে পতিত কর। তাহাদিগকে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করাইও।
লাশ যদি নাবালক ছেলে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে
.
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًاوْ اَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَا فِعًة وَمُشَفَّعًا-
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলহুলানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।
লাশ যদি নাবালেগা মেয়ে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে।
.
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَ لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَ لَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهَ لَنَا شَا فِعً وَمُشَفَّعًا
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহা লানা আজরাঁও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও। দুইহাত দুইপাশে ঝুলাইয়া ইমাম সাহেব ডানে এবং বামে ছালাম ফিরাইবে।
.
কোনো ভূল-ত্রুটি থাকলে ভূল সমাধানের জন্য সাহায্য করবেন..এবং এই মূল্যবান নোট টি শেয়ার করে আপনাদের বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিন..
জানাযার ফরজ ও সুন্নাতঃ
শবে বরাত শবে বরাতের নামাজ শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম
একাকী ইবাদত :
শবে বরাত ফযীলত উলামা ফুকাহাদের নিকট একটি সমাদৃত বিষয়। এসম্পর্কে নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং এই রাতে নফল নামায, দুআ-দরূদ, তিলাওয়াতে কোরআন মোটকথা সবধরণের ইবাদত করা শুধু বৈধই নয় বরং তা শরীয়তে কাম্য এবং মুস্তাহাব । তবে দু’টি বিষয় খুবই লক্ষ রাখতে হবে :
(ক). এ রাতের সব ইবাদতই একাকী করতে হবে। ইবাদতের জন্য মসজিদে জড়ো হওয়া মাকরূহ
ইতিপূর্বে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
(খ). নফল নামায যা ইচ্ছা পড়তে বাধা নেই কিন্তু এ-রাতের জন্য বিশেষ পদ্ধতির কোন নামায নেই। যেমন দু’রাকাতে এতবার সূরা এখলাছ পড়তে হবে, এতবার সূরা ফাতেহা পড়তে হবে ইত্যাদি।।
শবে বরাতের আপত্তিজনক কাজকর্ম:
‘খিচুরি বা হালুয়া-রুটির প্রথা, মসজিদ, ঘর-বাড়ি বা দোকান-পাটে আলোক-সজ্জা করা, পটকা ফুটানো, আতশবাজি, কবরস্থানে ও মাজারসমূহে ভিড় করা, মহিলাদের ঘরের বাইরে যাওয়া, বিশেষ করে বেপর্দা হয়ে দোকানপাট, মাযার ইত্যাদি স্থানে ভিড় করা, সব কিছুই এ রাতের আপত্তিজনক কাজ ।
কিছু কাজ সাধারণ অবস্থায় জায়েজ থাকলেও (যেমন খিচুরী পাক করে গরীব-মিসকীনদের মধ্যে বন্টন করা) এগুলোকে শবে বরাতে কাজ মনে করে বা ঐ দিনে এটিকে বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করে এর পেছনে পড়ার কোন বৈধতা থাকতে পারে না।
শবে বরাত উপলক্ষে গোসল:
এটিও অর্ধ শা‘বানের রাতের ভিত্তিহীন একটি কাজ। গোসল যেকোন সময় করা যায়, কিন্তু এটিকে শবে বরাতের কাজ মনে করে বা ঐ রাতে এটিকে বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করে এর পেছনে পড়ার কোন বৈধতা
শুকরানা সিজদাহ দেয়া মুস্তাহাব।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এর নিয়ম
শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম
আজ প্রথম কদরের রাত ২১শে রমজান।এ সম্মানিত রজনীর গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি কুরআনকে কদরের রাতে নাজিল করেছি। তুমি কি জানো, কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাস থেকেও উত্তম কল্যাণময়।’ সূরা আল্ কদর (১-৩)। এ রাতটি কোন মাসে? এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘রমজান এমন মাস, যাতে কুরআন নাজিল হয়েছে।’ (বাকারা-১৮৫)।মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘ফেরেশতারা ও রুহ (জিব্রাইল আ:) এ রাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে সব হুকুম নিয়ে অবতীর্ণ হয়, সে রাত পুরোপুরি শান্তি ও নিরাপত্তার ফজর উদয় হওয়া পর্যন্তু।’ (সূরা আল-কদর -৪-৫)।
‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়া’লা রাকআ’তাই ছালাতি লাইলাতিল কদর-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার’।
শবে কদরের নামাজ
লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনো নামাজের পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে নামাজ দুই রাকাত করে যত সুন্দর করে পড়া যায়, যত মনোযোগ সহকারে পড়া যায় ততই ভালো। আল্লাহ সুবহানাআলাতায়ালার প্রতি যত খুশু খুজুসহকারে নামাজ আদায় করা যায়, ততই ভালো। দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। এছাড়া বিশেষ কোনো সূরা পড়তে হবে-এটা লোকমুখে প্রচলিত আছে, তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন। বেশি বেশি দোয়া পড়বেন। ইস্তেগফার পড়বেন। তওবা করবেন। এই রাতে ভালো কাজ করবেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।
এই রাতে যে দোয়া বেশি পড়বেন
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, শবে কদরের রাতে আমার কোন দোয়াটি পড়া উচিত?’ তিনি তাঁকে পড়ার জন্য নির্দেশ দিলেন-‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।’
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে ইবনে মাজা)।
জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নামাজের প্রথম সারি হলো ফেরেশতাদের সারির মতো। তোমরা যদি প্রথম সারির মর্যাদা সম্পর্কে জানতে তবে তা পাওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তে। মনে রেখ একা নামাজ পড়ার চাইতে দুই ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়া উত্তম। আর দুই ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়ার চাইতে তিন ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়া উত্তম। এভাবে যত বেশি লোকের জামাত হবে, তা আল্লাহর কাছে তত বেশি প্রিয় হবে।
নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করে এবং নামাজ ছাড়া তার মনে আর কোন উদ্দেশ্য থাকে না, তখন মসজিদে প্রবেশ না করা পর্যন্ত তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং তার একটি গুনাহও মাফ হয়ে যায়।
হে আল্লাহ! একে তুমি ক্ষমা করে দাও; হে আল্লাহ এর তাওবা কবুল কর; হে আল্লাহ! এর প্রতি তুমি দয়া প্রদর্শন করো।”
[রিয়াদুস সলিহীন:১০]আমি আমার এক্ মাত্র মর্যাদাশীল শ্রেষ্ঠ প্রতিপালকের
পবিত্রতা বর্ননা করছি যিনি সকল দোষ – ত্রুটি থেকে পবিত্র।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য কোনো একটি মসজিদের দিকে পা বাড়াবে, তার প্রতিটি কদমে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য একটি করে পুণ্য লিখে দেবেন। তার একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং একটি করে পাপ মুছে দেবেন।
জামাতে ১,২,৩বা ৪ রাকাত ছুটে গেলে কী করবেন?
যে মুক্তাদি (মুসল্লি) ইমামের সাথে এক বা একাধিক রাকাত পায়নি তাকে মাসবুক বলে।
মাসবুক ইমামের সাথে শেষ বৈঠকে তাশাহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) এমন ধীরে ধীরে পড়বে যেন তার তাশাহুদ শেষ হতে হতে ইমামের দুরূদ ও দোয়ায়ে মাছুরা শেষ হয়ে যায়। মাসবুকের তাশাহুদ যদি আগেই শেষ হয়ে যায় তাহলে সে চুপচাপ বসে থাকতে পারে। (ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৩/৩৮২,ফতওয়ায়ে শামী ২/২২০)
ইমাম সেজদায়ে সাহু দিলে মাসবুকও সেজদায়ে সাহু করবে তবে সেজদায়ে সাহুর পর সালাম ফিরাবে না। ভুলে যদি সালাম ফিরিয়ে দেয় তাহলে আবার সেজদায়ে সাহু করতে হবে। (ফতওয়ায়ে আল বাহরুর রায়েক-২/১৭৬,ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ-৩/৩৭৯)
ইমামের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর সামান্য পর মাসবুক তার অবশিষ্ট নামাজ পড়ার জন্য আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাঁড়াবে। একদিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে মাসবুকের উঠে দাঁড়ানো উচিত নয় কারন এতে সে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে । যেমনঃ ইমাম সাহেব নামাজের মধ্যে ভুল বশত কোন ওয়াজিব ত্বরক (ছুটে গেলে) করলে ইমাম সাহেবের ওপর সাহু সেজদা ওয়াজিব এমতাবস্থায় আপনি যদি একদিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যান তাহলে আপনি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এবং ইহা সুন্নাতের খেলাফ।
মাসবুক অবশিষ্ট নামাজ পড়ার জন্য উঠে প্রথমে ছানা,আউযুবিল্লাহ্ ও বিসমিল্লাহ্ পড়বে। এরপর কেরাত মিলানো রাকাতগুলো পড়বে। পরিশেষে কেরাত বিহীন রাকাত পড়ে নিবে।
মাছবূকের এক রাকাআত ছুটে গেলে তা কিভাবে পড়বে :
ইমাম উভয় সালাম ফিরানোর পর মাছবূক আল্লাহু আকবার বলে উঠবে, ছানা পড়বে, আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা পড়বে, তারপর বিসমিল্লাহ সহ সূরা মিলাবে এবং রুকু সাজদা ও বৈঠক করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
মাছবূক দুই রাকাআত ছুটে গেলে তা কিভাবে পড়বে :
ইমাম উভয় সালাম ফিরানোর পর মাছবূক আল্লাহু আকবার বলে উঠবে এবং পূর্ব বর্ণিত নিয়মে প্রথম রাকাআত আদায় করবে।তিন রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে বৈঠক করে (বৈঠকে শুধু তাশাহ্হুদ পড়তে হবে) আর চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে বৈঠক না করেই দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠবে। এ রাকাতে ছানা ব্যতীত এবং শুধু বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা ও সূরা/কিরাত মিলিয়ে শুধু সাজদা ও বৈঠক কের সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
মাসবূক তিন রাকাত ছুটে গেলে কিভাবে পড়বে:
মাছবূক যদি ইমামের সাথে এক রাকাত পায় এবং নি রাকাত না পায়, তাহলে ইমামের উভয় সালাম ফিরানোর পর উঠে পূববর্তী নিয়মে প্রথম রাকাত পড়বে এবং বৈঠক করে দ্বিতীয রাকাতের জন্য উঠবে। দ্বিতীয় রাকাতে সূরা/কিরাত মিলাতে হবে এবং বৈঠক না করেই তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠবে।তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে কোন সূরা/কিরাত মিলাতে হবে।
মাসবুক কোন রাকাত না পেলে কিভাবে পড়বঃ
মাছবূক যদি কোন রাকাত না পায় শুধু শেষ বেঠকে এসে শরিক হয়, তাহলে ইমামের উভয় সালাম ফিরানোর পর উঠে একাকি যেভাবে নামাজ পড়া হয় সেভাবে পূণ নামাজ আদায় হবে।
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় :
কয়েকটি সাধারণ ভুল।
পুরুষদের জন্যে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ
জামাতের সঙ্গে পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
কোনো রকম ওজর ছাড়া জামাত তরক করা
গোনাহের কাজ। হাদীস শরীফে আছে,
জামাতে নামাজ পড়লে একাকী নামাজের
তুলনায় সাতাশগুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে গিয়ে
সাধারণত যেসব ভুল আমরা করে থাকি, তেমন
কিছু বিষয়ই এখানে আলোচনা করা হচ্ছে :
কাতার সোজা না করা
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের প্রথম ধাপই
হলো কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। কাতার
সোজা করে দাঁড়ানোর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হাদীস শরীফে কাতার সোজা করে
দাঁড়ানোকে নামাজের পূর্ণতা হিসেবে
উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আনাস রা. বর্ণনা
করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কাতার
সোজা করো; কেননা কাতার সোজা করা
নামাজের পূর্ণতারই অংশ।’ [সহীহ বুখারী,
হাদীস : ৭২৩]
আরেক হাদীসে কাতার সোজা না করার
জন্যে উচ্চারিত হয়েছে কঠোর সতর্কবাণী।
হযরত নুমান ইবনে বাশীর রা. কর্তৃক বর্ণিত
হাদীস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : ‘তোমরা অবশ্যই
তোমাদের কাতার সোজা করে দাঁড়াবে,
অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও
মতভিন্নতা সৃষ্টি করে দেবেন।’ [সহীহ বুখারী,
হাদীস : ৭১৭]
কাতার সোজা করার সহজ পদ্ধতি হলো—
মসজিদে কাতারের জন্যে যে দাগ দেয়া
থাকে, তাতে পায়ের গোড়ালি রাখা। সকলের
পায়ের পেছনের অংশ যদি এক রেখায় থাকে,
তাহলে সহজেই কাতার সোজা হয়ে যাবে।
অনেকে দাগে পায়ের আঙ্গুল রেখে কাতার
সোজা করতে চায়। এভাবে কাতার সোজা হয়
না। কারণ কারও পা লম্বা, কারও খাটো। তাই
দাগে পায়ের গোড়ালি রাখাই কাতার সোজা
করার সহজ পদ্ধতি।
কাতারের মাঝে ফাঁক রেখে দাঁড়ানো
কাতার সোজা করার পর লক্ষ রাখতে হবে,
কাতারের মাঝে যেন কোনো ফাঁক না থাকে।
অনেক সময় দেখা যায়, কাতারের মাঝে অনেক
ফাঁক থাকে। যেখানে দুইজন দাঁড়ায়, খুব সহজেই
একটু চেপে সেখানে তিনজন দাঁড়াতে পারে।
অথচ হাদীস শরীফে এরকম ফাঁক রাখতে নিষেধ
করা হয়েছে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতার
সোজা করার প্রতি জোর নির্দেশ দেয়া
হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.এর
বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কাঁধে কাঁধ
মিলিয়ে দাঁড়াও এবং (কাতারের মাঝে) ফাঁক
বন্ধ করে দাও।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৬৬৬]
এ হাদীসেরই পরবর্তী অংশ—‘শয়তানের জন্যে
তোমরা কোনো ফাঁকা জায়গা ছেড়ে রেখো
না।’ [প্রাগুক্ত]
জামাত শুরু হওয়ার পরও যদি কেউ এসে দেখে,
কাতারের মাঝে ফাঁকা জায়গা রয়েছে, আর
সেখানে সে দাঁড়াতে পারবে, তাহলে তাকে
সে জায়গাটুকু পূর্ণ করে দাঁড়াতে হবে।
[ফতোয়ায়ে শামী, ২/৩১০]
সামনের কাতারে জায়গা খালি রেখে
পেছনে দাঁড়ানো
সামনের কাতারে জায়গা ফাঁকা রেখে
পেছনে দাঁড়ানো ঠিক নয়। বরং নিয়ম হলো,
প্রথমে সামনের কাতার úূর্ণ করবে। এরপর
পেছনে নতুন কাতার করবে। সহীহ মুসলিম
শরীফের হাদীস : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বলেছেন,
ফেরেশতারা যেভাবে তাদের প্রভুর নিকট
সারিবদ্ধ হয়, তোমরা কি সেভাবে
কাতারবন্দি হবে না? সাহাবায়ে কেরাম
জানতে চাইলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কীভাবে
ফেরেশতারা কাতারবন্দি হয়? রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘তারা প্রথম কাতারগুলো আগে পূর্ণ করে এবং
কাতারের মাঝের ফাঁক বন্ধ করে দেয়।’ [হাদীস
৪৩০]
কখনো দেখা যায়, জামাত শুরু হয়ে যাওয়ার পর
কেউ মসজিদে এল এবং তাকবিরে ওলা
কিংবা রুকু পাওয়ার জন্যে তাড়াহুড়ো করে
পেছনে দাঁড়িয়ে গেল। অথচ তখনো সামনের
কাতারে দাঁড়ানোর জায়গা ছিল। কেউ কেউ
আবার একটু শারীরিক আরামের জন্যে সামনের
কাতার ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ায়। অথচ
হাদীস শরীফে বলা হয়েছে—‘তারা যদি জানত
প্রথম কাতারের ফজিলতের কথা, তাহলে
তাদের মাঝে লটারি করতে হতো।’ [সুনানে
ইবনে মাজা, হাদীস : ৯৯৮]
প্রথম কাতারে খুব চাপাচাপি করে দাঁড়ানো
কেউ কেউ আবার প্রথম কাতারের উপরোক্ত
ফজিলত লাভ করার জন্যে এতটাই আঁটসাঁট হয়ে
দাঁড়ায়, যার ফলে অন্য সকলের নামাজের
একাগ্রতায় ব্যাঘাত ঘটে। এভাবে অন্যকে কষ্ট
দেয়া কিংবা অন্যের ইবাদতে ব্যাঘাত
ঘটানো অনুচিত। এমন সকল বিষয় থেকেই বিরত
থাকা জরুরি, যা নামাজের একাগ্রতা নষ্ট করে
দেয়। প্রথম কাতারে যদি চাপাচাপি হয়
তাহলে অন্যকে কষ্ট না দিয়ে পরবর্তী
কাতারেই দাঁড়ানো উচিত। [ফতোয়ায়ে শামী,
২/৩১০]
কোনো কাতার শুরু করার সময় ডান কিংবা বাম
দিক থেকে শুরু করা
একটি কাতার পূর্ণ হয়ে গেলে দ্বিতীয় কাতার
শুরু করার নিয়ম হলো, ইমাম সাহেব যেখানে
দাঁড়িয়েছেন ঠিক সে বরাবর পেছন থেকে
কাতার শুরু করতে হবে। প্রথমজন ইমাম
সাহেবের বরাবর পেছনে দাঁড়াবে। এরপর
অন্যরা ডানে-বামে মিলিয়ে দাঁড়াবে।
উদ্দেশ্য, যেন সর্বাবস্থায় ইমাম সাহেব
মাঝখানে থাকেন। ইমাম সাহেবকে মাঝে
রেখে দুইদিকে কাতার লম্বা করা সুন্নত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা ইমামকে
(কাতারের) মাঝে রেখো।’ [সুনানে আবু দাউদ,
হাদীস : ৬৮১]
কিন্তু কেউ কেউ নতুন কাতার শুরু করতে গিয়ে এ
বিষয়টির প্রতি লক্ষ রাখেন না। তারা হয়তো
একেবারে ডানদিক কিংবা বামদিক থেকে
কাতার শুরু করেন, অথবা কাতারের যে কোনো
এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যান। এটা সুন্নতের
খেলাফ।
ইমাম সাহেবের ডানে-বামে মুসল্লি সমান না
থাকা
আবার কখনো এমনও দেখা যায়, কাতারের
কোনো একদিক প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে, অথচ
অপর দিকে তখনো অনেক জায়গা ফাঁকা।
এমনটিও ঠিক নয়। নিয়ম হলো, কেউ যখন
জামাতে শরিক হতে মসজিদে আসে তখন যদি
ইমাম সাহেবের ডান দিকে মুসল্লি বেশি
থাকে, তাহলে সে বাম দিকে দাঁড়াবে, বাম
দিকে মুসল্লি বেশি থাকলে ডান দিকে
দাঁড়াবে। হ্যাঁ, যদি দুই দিকের মুসল্লিসংখ্যা
সমান হয় তাহলে ডান দিকে দাঁড়াবে।
[আলবাহরুর রায়েক, ১/৩৭৫]
ইমামের পূর্বে রুকু-সেজদা করা
জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার সময় অনেকে
ইমামের পূর্বেই রুকু-সেজদায় চলে যান কিংবা
ইমামের পূর্বেই রুকু-সেজদা থেকে উঠে পড়েন।
ভুলবশত এমনটি করলে নামাজ নষ্ট হবে না ঠিক,
কিন্তু ইচ্ছা করে যারা এমন করে, তাদের
জন্যে হাদীস শরীফে উচ্চারিত হয়েছে কড়া
হুশিয়ারি। হযরত আবু হুরায়রা রা. কর্তৃক বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ কি এ
নিয়ে কোনো ভয় করে না—যখন সে ইমামের
পূর্বে তার মাথা উঠিয়ে নেয় তখন আল্লাহ
তার মাথাকে গাধার মাথায় কিংবা তার
আকৃতিকে গাধার আকৃতিতে পাল্টে দিতে
পারেন!’ [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৯১]
মুক্তাদি তাকবির-তাসবিহ ও দোয়া না পড়া
হানাফী মাযহাব অনুযায়ী, ইমাম সাহেব যখন
কেরাত পড়েন, সুরা ফাতেহা হোক কিংবা
অন্য কোনো সুরা হোক, মুক্তাদি নীরব থেকে
তা শুনবে। ইমাম সাহেব যদি মনে মনে পড়েন,
তাহলেও মুক্তাদি নীরব থাকবে। কিছুই পড়বে
না।এছাড়া অন্য সকল ক্ষেত্রে মুক্তাদি
ইমামের মতোই দোয়া পড়বে, তাসবিহ আদায়
করবে এবং তাকবির বলবে। যা কিছু ইমামের
জন্যে সুন্নত, তা মুক্তাদির জন্যেও সুন্নত; আর
যা ইমামের জন্যে ফরজ বা ওয়াজিব, তা
মুক্তাদির জন্যেও ফরজ কিংবা ওয়াজিব।
তাকবিরে তাহরিমা সকলের জন্যেই ফরজ। এ
তাকবির না বললে নামাজ শুরুই হবে না। আর
নামাজের ভেতরে অন্য তাকবিরগুলো বলা
সুন্নত। রুকুর তাসবিহ, সেজদার তাসবিহ,
তাশাহহুদ, দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাসুরা,
দোয়ায়ে কুনুত ইত্যাদিতে ইমাম-মুক্তাদির
মাঝে কোনো ফারাক নেই। শুধু রুকু থেকে
ওঠার সময় ইমাম সাহেব ‘সামিয়াল্লাহু লিমান
হামিদাহ’ বলবে, আর মুক্তাদি বলবে ‘রাব্বানা
লাকাল হামদ’। [ফতোয়ায়ে শামী, ২/১৭৫]
নামাজ বোঝে না—এমন বাচ্চা মসজিদে নিয়ে
আসা
নামাজ শেখানোর জন্যে কেউ কেউ এমন
বাচ্চাকেও মসজিদে নিয়ে আসেন, যারা
নামাজের কিছুই বোঝে না। এমনকি নামাজের
সময় চুপচাপ থাকতে হয়, নামাজি ব্যক্তির
সামনে দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না—এতটুকু
তালিমও তাদের থাকে না। এমন বাচ্চাদের
যারা মসজিদে নিয়ে আসেন, তাদের মনে
হয়তো বাচ্চাকে নামাজ শেখানোর আবেগ ও
আগ্রহ রয়েছে বলেই এমনটি করেন। কিন্তু
বাস্তবে দেখা যায়, এরকম বাচ্চারা মসজিদে
এসে অন্যদের নামাজে ব্যাঘাত ঘটায়। হাদীস
শরীফে এমন অবুঝ বাচ্চাদেরকে মসজিদে
নিয়ে আসতে বারণ করা হয়েছে। সুনানে ইবনে
মাজার হাদীস : ‘তোমরা তোমাদের শিশু ও
পাগলদের থেকে তোমাদের মসজিদকে মুক্ত
রেখো।’ [হাদীস : ৭৫০]
নাবালেগ ছেলেরা কোথায় দাঁড়াবে
যে বাচ্চারা নামাজ বোঝে, নামাজ শেখানো
এবং জামাতে অভ্যস্ত করার উদ্দেশ্যে
তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়া উচিত।
তাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়ম হলো,
কাতার সোজা করার সময় প্রথমে বালেগ
পুরুষরা দাঁড়াবে, এরপর নাবালেগ ছেলেরা
দাঁড়াবে। তবে যদি একজন মাত্র নাবালেগ
ছেলে থাকে, তাহলে সে কাতারের মাঝেও
দাঁড়াতে পারবে। এমনকি যদি নাবালেগ
ছেলেদেরকে পেছনে এক কাতারে দাঁড়
করালে দুষ্টুমির আশংকা থাকে এবং এতে
অন্যদের নামাজও বিঘিœত হয় তাহলে
তাদেরকে বালেগ পুরুষদের কাতারের ফাঁকে
ফাঁকেও দাঁড় করানো যেতে পারে। [আহসানুল
ফাতাওয়া, ৩/২৮০]
অনেককে দেখা যায়, কাতারের মাঝে এরকম
নাবালেগ ছেলেকে দাঁড়াতে দেখলে তারা
তাকে কাতারের মাঝ থেকে বের করে
পেছনে কিংবা এক পার্শে¦ দাঁড় করিয়ে দেয়।
কেউ কেউ তো আবার হইচইও বাধিয়ে দেয়।
এটি ঠিক নয়।
মুক্তাদি একজন হলে তাকে ইমাম সাহেবের
পেছনে কিংবা বামদিকে দাঁড় করানো
নিয়ম হলো, যদি মুক্তাদি একজন হয় তাহলে সে
ইমামের ডানপাশে দাঁড়াবে। বামপাশে
কিংবা পেছনে একাকী দাঁড়ানো
নিয়মপরিপন্থী। এমনকি যদি জামাত শুরু হওয়ার
পর কেউ এসে সামনের কাতারে জায়গা না
পায় এবং এজন্যে তাকে পেছনের কাতারে
দাঁড়াতে হয়, তাহলে সে একাকী পেছনের
কাতারে নামাজ শুরু করবে না। বরং অন্য
কোনো মুক্তাদি আসার অপেক্ষা করবে। ইমাম
সাহেব রুকুতে যাওয়ার আগে যদি কেউ না
আসে, তাহলে মাসয়ালা জানে এমন একজনকে
সামনের কাতার থেকে টেনে পেছনে আনবে।
আর যদি সামনের কাতারে এমন কেউ না থাকে
তাহলে ইমাম বরাবর পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ
শুরু করবে। [ফতোয়ায়ে শামী, ২/৩১০]
দৌড়ে এসে জামাতে শরিক হওয়া
তাকবিরে ওলা কিংবা রাকাত ধরার জন্যে
অনেকে দৌড়ে এসে জামাতে শরিক হয়। অথচ
হাদীস শরীফের নির্দেশনা হলো : ‘যখন নামাজ
দাঁড়িয়ে যায় তখন তোমরা দৌড়ে নামাজে
এসো না, বরং হেঁটে হেঁটে এসো, তোমাদের
ওপর প্রশান্তি নেমে আসুক; নামাজ যতটুকু পাও
ততটুকু আদায় করো আর যতটুকু ছুটে গেছে তা
(পরে) পূর্ণ করে নাও।’ [সহীহ বুখারী, হাদীস :
৯০৮]
স্বাভাবিক কথা, কেউ যখন দৌড়ে এসে
নামাজে শরিক হয়, তখন সে হয়তো তাকবিরে
ওলা পেতে পারে কিংবা এক রাকাত বেশি
পেতে পারে, কিন্তু সে স্থিরচিত্তে নামাজ
পড়তে পারবে না। বরং তার পুরো নামাজ
জুড়েই থাকবে অস্থিরতা। হ্যাঁ, যদি কেউ এতটুকু
জোড়ে হেঁটে আসে, যাতে সে কান্ত ও
অস্থিরচিত্ত হয়ে পড়ে না, তাহলে এতে
সমস্যা নেই। [মুয়াত্তা মুহাম্মদ, হাদীস : ৯৪]
সেজদায় হাত বাঁকিয়ে অন্যকে কষ্ট দেয়া
সেজদার সময় অনেকে হাত এতটাই বাঁকিয়ে
রাখেন, যার ফলে তার পাশে নামাজ
আদায়কারীর কষ্ট হয়। এমন করা থেকে বিরত
থাকা জরুরি। স্বাভাবিকভাবে যতটুকু ফাঁক
রাখতে হয় ততটুকু রাখুন। অর্থাৎ আপনার বাহু
মাটি থেকে, হাঁটু থেকে এবং পার্শ্বদেশ
থেকে পৃথক রাখুন। এত ফাঁক করবেন না, যেন
অন্যেরা কষ্ট পায়।
ইমাম সাহেবের কোনো ভুল হলে লোকমা না
দেয়া
মানুষ হিসেবে ইমাম সাহেবের ভুল হতেই
পারে। কিছু ভুলের জন্যে তো সাহু সেজদার
বিধানও রয়েছে। আর কিছু ভুল এমন, যেখানে
ইমাম সাহেবকে তাৎক্ষণিক সতর্ক করে দিতে
হয়। যেমন, জোহর নামাজের তৃতীয় রাকাতেই
ইমাম সাহেব শেষ বৈঠকের জন্যে বসে
পড়লেন। তখন তাকে লোকমা দিতে হবে। কথা
হলো, এ লোকমা কে দেবে? এ লোকমা যে
কেউ দিতে পারে। যিনি ভুলটি ধরতে পারবেন,
তিনিই লোকমা দিতে পারেন। অনেক সময়
দেখা যায়, এ রকম কোনো ভুলে আমরা লোকমা
না দিয়ে অপেক্ষা করি এবং নামাজ শেষে
লোকমা না দেয়ার বিষয়টি মুয়াজজিন
সাহেবের কাঁধে চাপিয়ে দিই এ বলে—তিনি
কেন লোকমা দিলেন না। অথচ মনে রাখা
উচিত, ইমাম সাহেব যেমন ভুল করছেন,
মুয়াজজিন সাহেবেরও একই ভুল হতে পারে।
রুকু না পেলে জামাতে শরিক হওয়ার জন্যে
পরবর্তী রাকাতের অপেক্ষা করা
ইমাম সাহেবকে যে অবস্থায় পাওয়া যায়, তার
সঙ্গে সে অবস্থায়ই জামাতে শরিক হয়ে
যাবে। অনেকে রুকু না পেলে পরবর্তী
রাকাতে ইমাম সাহেব দাঁড়ানো পর্যন্ত
অপেক্ষা করে। এটা ঠিক নয়। কেউ কেউ তো
নামাজ শুরু করার পরও যদি ইমাম সাহেবকে
রুকুতে না পায়, তাহলে নামাজ ছেড়ে দেয়
এবং পরের রাকাতে সে নামাজে শরিক হয়।
এসবই ভুল।
ইমাম সাহেব এক সালাম ফেরানোর পরই
মাসবুক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে যাওয়া
যখন ইমাম সাহেব সালাম ফেরাবেন, তখন
মাসবুক ব্যক্তি সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে
যাবে এবং ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায়
করবে। অনেককেই দেখা যায়, ইমাম সাহেব এক
সালাম ফেরানোর পর যখন দ্বিতীয় সালাম শুরু
করেন, তখনই তারা দাঁড়িয়ে যান। অথচ নিয়ম
হলো, ইমাম সাহেব ডানে-বামে উভয় দিকে
সালাম ফেরানো শেষ করার পরও কয়েক মুহূর্ত
অপেক্ষা করে মাসবুক ব্যক্তি দাঁড়াবে। এর
আগে নয়। [ফতোয়ায়ে শামী, ২/৩৪৮]
মোনাজাতকে নামাজের অংশ মনে করা
আমাদের সমাজে প্রায় প্রতিটি মসজিদেই
ফরজ নামাজের জামাত শেষে সম্মিলিতভাবে
মোনাজাত করা হয়। বিশুদ্ধ মত হিসেবে,
এভাবে মোনাজাত করা বৈধ এবং এতে
কোনো সমস্যা নেই। তবে মনে রাখতে হবে, এ
মোনাজাত নামাজের কোনো অংশ নয়। ফলে
তা জামাতেরও অংশ নয়। সালাম ফেরানোর
মধ্য দিয়ে যখন নামাজ শেষ হয়ে যায়, তখন
ইমামতিও শেষ হয়ে যায়। নামাজের পর যখনইমাম সাহেব মোনাজাত করেন তখন কেউ সেই
মোনাজাতে শরিক হতেও পারেন, নাও হতে
পারেন। মোনাজাতে তিনি নিজের মতো
করেও প্রার্থনা করতে পারেন, আবার ইমাম
সাহেবের দোয়ায় আমিনও বলতে পারেন।
আরও লক্ষ রাখতে হবে, এ মোনাজাত যেন
নামসর্বস্ব এবং রেওয়াজ রক্ষার্থে করা না
হয়। হাদীস শরীফে আছে, ফরজ নামাজের পর
দোয়া কবুল হয়। এবং এ বিষয়টি সামনে রেখেই
এসময় দোয়া করা হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা
যায়, দোয়ার জন্যে ইমাম সাহেব হাত তোলেন
ঠিকই, কিছু আরবি বাক্যও হয়তো পাঠ করেন,
কিন্তু কোনো দোয়া করেন না অর্থাৎ নিজের
প্রয়োজনে কিংবা মুসল্লিদের বা আম
মুসলমানদের জন্যে আল্লাহ তায়ালার দরবারে
কিছুই চান না। অথচ এই সময় আল্লাহর কাছে
চাইলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যেমন,
কেউ কেউ হাত তুলে ‘আল্লাহুম্মা আনতাস
সালাম ওয়ামিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া
যাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ পড়েন এবং
এরপরই দোয়া শেষ করে দেন। অথচ এখানে তো
কোনো কিছুই চাওয়া হয় নি। কুরআনে পাকে
এবং হাদীস শরীফে অনেক দোয়া আমাদেরকে
শেখানো হয়েছে। নামাজের পর
সংক্ষিপ্তাকারে হলেও আমরা সেসবের
কোনোটা কোনোটা পড়ে নিতে পারি। আর এ
মোনাজাতের কারণে যেন মাসবুক মুসল্লিদের
নামাজে ব্যাঘাত না ঘটে—এ দিকেও নজর
রাখা জরুরি।
-
প্রথম দুই অবস্হায় লাগবেনা কেন?
-
প্রথম দুই অবস্থায় মাসবুক ব্যক্তি ইমামের অধীনে থাকে। আর মুক্তাদি ইমামের নামাযে থাকাকালীন কোন ভুল করে ফেললে, মুক্তাদির জন্য তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের প্রয়োজন হয়না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
মহিলাদের নামাজের নিয়ম
মহিলাদের নামাজের নিয়ম প্রায় পুরুষের নামাজের মতই। তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যাবধান আছে তা হলো, দাড়ানো অবস্থায় দুই পা মিলিয়ে রাখবে । তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় মহিলারা কাধ পর্যন্ত হাত উঠাবে।
তারপর বুকের উপর হাত বাধবে বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের তালু রাখবে । রুকুতে পুরুষের মত উভয় হাতে হাটুতে ভাল করে ধরবে না বরং দুই হাতের আংগুল মিলিত রেখে হাটুকে স্পর্স করবে এবং দুই পায়ের টাখনু মিলিয়ে রাখবে ।
পুরুষের রুকুর মত মাথা পিঠ ও মাজা সমান হবে না । সেজদার মাঝে মহিলারা দুই পা বাম দিক দিয়ে বের করে ডান নিতম্বের উপর বসবে তারপর হাত জমীনে বিছিয়ে সেজদা করবে।
পেট রানের সাথে মিলিয়ে বাহু পাজরের সাথে মিলিয়ে এবং হাতের কনুই জমীনের সাথে মিলিয়ে যথা সম্ভব জমীনের সাথে চেপে ধরে সেজদা করবে । বসার সময় দুই পা বাম দিকে বের করে দিয়ে ডান নিতম্বের উপর বসবে। মহিলাদের নামাযের বাকী নিয়ম পুরুষের নামাযের মতই।
কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম
নামাজ না পড়ার শাস্তি
নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলমান এবং কাফেরের মধ্যে পার্থক্য এই, মুসলমান নামায পড়ে আর কাফের নামায পড়ে না। যদি কেহ বলে কিসের নামায, নামায পড়িয়া কি হইবে, সাথে সাথে সে কাফের হইয়া যাইবে।
নামায আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠ ইবাদত, নামায তরক করা কবীরাহ গুনাহ। কেউ যদি ইচ্ছা করে নামায না পড়ে তাহলে সে কুফরির খাতায় না দিলো। যে নামায মোটেও পড়ে না সে মহাপাপী, তার শাস্তি হবে অনেক ভয়ানক। যারা দুনিয়াতে বসে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দিবে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা (১৪) টি শাস্তি নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। যার (৫) টি দুনিয়াতে, (৩) টি মৃত্যুর সময়, ৩টি কবরে আর ৩টি কবর হতে বের হবার পর হাশরের ময়দানে কার্যকর করা হবে।
(দুনিয়াতে ৫টি শাস্তি )
(১)তার জীবনে কোনো বরকত থাকবে না। সবদিক থেকেই বরকত উঠে যাবে, এমন কি তার রিযিক সংকীর্ণ হয়ে উঠবে।
(২)তার কোনো দোয়াইই কবুল হবে না। (৩) তার চেহারা হতে নেক্কারদের জ্যেতি তথা লাবোণ্য ও কমণীয়তা মুছে ফেলা হবে। (৪) তার জন্য কোনো নেক্কার দোয়া করলে কবুল হবে না। (৫) তার কোনো নেক কাজই আল্লাহ তায়ালার নিকট কবুল হবে না।
(মৃত্যুকালীন ৩টি শাস্তি )
(১)বে,নামাযী ব্যক্তি মৃত্যুর সময় প্রচণ্ড ক্ষুধার্থ হয়ে তথা ভুখা আবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। (২)তার মৃত্যু অত্যন্ত বে,ইজ্জতির সাথে সংঘটিত হয়ে থাকে। (৩) তার মৃত্যুর সময় তার পিপাসা এত বেশী বৃদ্ধি পাবে যে, তাকে বেশী পরিমাণ পানি পান করানো
হলেও তার পিপাসা কোন অবসান ঘটবে না।
(কবরের ৩টি শাস্তি )
(১)তার কবর এতো সংকীর্ণ হয়ে উঠবে যে, গোশত সমূহের মধ্যে দিয়ে এ দিকের পাঁজর ঐ দিকের পাঁজর এ দিকে ঢুকে যাবে। (২) তার কবর আগুনের লেলিহান শিখায় আচ্ছাদিত হয়ে যাবে, অর্থাৎ কবরের মধ্য সর্বদা আগুন দাউদাউ করে জ্বলতে থাকবে। (৩) তার কবরের মধ্য এমন বিষধর সাপ থাকবে যার চক্ষু এবং নাকগুলো হবে আগুনের। সে কবরের মধ্যে মৃত বে,নামাযীর সাথে কথা বলবে এবং নিজকে “সুজাউন আক্কারা “বলে পরিচয় দিয়ে বলবে যে, আল্লাহ আমাকে কঠিন শাস্তি দেয়ার জন্যই আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমার দায়িত্ব হলো সারাক্ষণ তোমাকে দংশন করা। ফজরের নামায পরিত্যাগ করার জন্য সূর্যোদয় পর্যন্ত, আর যোহরের নামায পরিত্যাগ করার জন্য আছর পর্যন্ত, আছরের নামায ত্যাগ করার জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত, আর মাগরিবের নামায ত্যাগ করার জন্য ‘ইশা পর্যন্ত, আর ‘ইশার নামায ত্যাগ করার জন্য ভোর পর্যন্ত অনবরত আঘাত করতে থাকবে। প্রবিত্র হাদীসে উল্লেখ আছে, সে বিষধর সাপটির আঘাত এতো প্রচন্ড হবে যে, বে,নামাযী ব্যক্তি তার প্রতিটি আঘাতের চোটে ৭০ গজ মাটির অভ্যন্তরে ঢুকে পড়বে এবং এর বিষক্রিয়া ৪০ বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে কিন্তু আল্লাহর নির্দেশে,
সে মৃত্যুবরণ না করে বরং জীবিত আবস্থায়ই এসব শাস্তি পেতে থাকবে এবং কিয়ামত পর্যন্ত বে,নামাযী ব্যক্তির শাস্তি হতে থাকবে। তখন বে,নামাযী ব্যক্তি কবরের মধ্যে বসে আপসুস করবে আর কাদতেঁ থাকবে। কিন্তু এতে কোন লাভ হবে না। সুতারাং সকলেরই সময় থাকতে নামাযের প্রতি যত্ন নেয়া উচিত।
(হাশরের ময়দানে ৩টি শাস্তি )
(১) হাশরের মাঠে তার হিসাব নিকাশ অত্যন্ত কঠিন ভাবে গ্রহণ করা হবে।
(২ ) তাকে অত্যন্ত অপমানের সহিত জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
(৩) কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার উপর অনেক অসন্তুষ্টি থাকবেন। অন্য এক হাদীসে জানা যায় যে, কঠিন হাশরের ময়দানে বে,নামাযীর ললাটা নিম্নবর্নীত লাইন তিনটি লিখা থাকবে। (১)সে আল্লাহর হক নষ্ট কারি। (২)সে আল্লাহর অভিশাপ প্রাপ্ত। (৩)তুমি দুনিয়ায় বসে যেমনি ভাবে আল্লাহ তায়ালার হক নষ্ট করেছ, তেমনি ভাবে আখিরাতেও আল্লাহ তায়ালার রহমত থেকে বন্চিত হবে।
অসুস্থ ব্যক্তির নামাজ
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন : যখন মুসলমান সালাত আরম্ভ করে
তার গুনাহ সমূহ মাথার উপর থাকে,
যতবার সে সিজদাহ করে ততবার গুনাহ ঝরে পড়ে।
অতঃপর যখন সে সালাত শেষ করে তখন তার সব গুনাহ ঝরে যায়।
(সিলসিলা সহীহা হা/৫৭৯)।
অসুস্থ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হল-ফরয সালাত দাড়িয়ে আদায় করা। যদিও কিছুটা বাকা হয়ে দাঁড়াক বা কোন দেয়ালে হেলান দিয়ে কিংবা লাঠি ভর দিয়ে।যদি কোন ভাবেই দাঁড়াতে সক্ষম না হয় তবে বসে সালাত আদায় করবে। উত্তম হলো দাঁড়ানো ও রুকু অবস্থার ক্ষেত্রে চারজানু হয়ে বসবে।
(আরকানুল ইসলাম বঙ্গঃ ৩১৬ পৃঃ)
মুহাম্মদ বিন আত তুয়াইজুরি বলেন যদি দাড়িয়ে না পারে তবে চতুষ্পদ (চারজানু) হয়ে বসে বা তাশহুদের বৈঠকের ন্যায় বসে। তাও যদি না পারে তবে ডান পার্শে¦র উপর হয়ে। এও যদি কষ্টকর হয় তবে বাম পার্শ্বের উপর হয়ে আদায় করবে। এ ভাবেও যদি না পারে তবে কিবলার দিকে পা করে চিত হয়ে শুয়ে মাথা দ্বারা বুকের দিকে ইশারা করত রুকু ও সেজদা করবে। সেজদাকে রুকুর চেয়ে বেশি নিচু করবে, যদি ইশারা করতে সক্ষম না হয় তবে মনে মনে সালাত আদায় করবে,মুখে তাকবীর বলবে, কির‘আত পাঠ করবে এবং দাঁড়ানো , রুকু করা সিজদা করা, তাশাহুদে বসা ইত্যাদি মনে মনে নিয়্যত করবে। কেননা প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে যার সে নিয়্যত করে। (কোরআন সুন্নাহর আলোকে ফিকাহ ২/২১পৃঃ;আরকানুল ইসলাম বঙ্গঃ ৩১৬ পৃঃ)
অসুস্থ ব্যক্তি দাড়াতে না পারলে বা অসুখ বৃদ্ধি আশঙ্কা থাকলে বসে, শুয়ে বা কাত হয়ে সালাত আদায় করতে পারবে। ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বাওয়াসারী রুগী ছিলাম। সালাত প্রসঙ্গে নবী করিম (ছাঃ) এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, তখন তিনি বললেন,দাড়িয়ে আদায় করতে পারলে দাড়িয়ে আদায় করো, বসে আদায় করতে পারলে বসে আদায় করো অথবা শুয়ে আদায় করতে পারলে শুয়ে আদায় করো।(বুখারী; মুসলিম হা/১২৪৮)।
সহীহ দলীল হলোঃ
সিজদার সময় সামনে বালিশ, টুল বা অন্য কিছুর ওপর মাথা ঠেকিয়ে সিজদাহ দেওয়া যাবে না। আব্দুলাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) এক রুগীকে দেখতে যান রুগীটি বালিশের ওপর সালাত আদায় করছিলেন। তিনি বালিশটি ফেলে দেন। তারপর রুগীটি সালাত আদায়ের জন্য একটি কাঠ নেন তিনি কাঠটিও ফেলে দেন এবং বলেন, সক্ষম হলে মাটির ওপরে সালাত আদায় কর। নচেৎ ইশারা দ্বারা সালাত আদায় কর। এবং রুকুর তুলনায় সাজদাহয় অধিকতর ঝুকে পড়। (বাযযার, তাবারানী, বায়হাক্বী, সিলসিলা সহিহা হা/৩২৩)।
আত্বা (রাঃ) বলে, ক্বিবলার দিকে মুখ ফিরাতে অক্ষম ব্যক্তি যেদিকে সম্ভব সেদিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে। (বুখারী, বঙ্গানুবাদ বুখারী হা/-১১১৭, আঃ প্রকাশ)।
আনাস (রাঃ) বলেন,রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কিছু রোগীর কাছে গেলেন যারা বসে বসে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি বলেন বসে সালাত আদায় করলে দাঁড়িয়ে করার অর্ধেক সওয়াব।
(আহমদ ও ইবনে মাজাহ,সনদ সহীহ: রাসূলুল্লাহ নামায পৃঃ৪৮)।
অসুস্থ ব্যক্তি যতদিন সুস্থ না হবে ততদিন ওয়াক্তের সালাত একসঙ্গে করে পড়তে পারবেন। দুই ওয়াক্তের সালাতকে জমা করে পড়বেন। যোহরকে বিলম্ব করে এবং আসরকে এগিয়ে নিয়ে একত্রে পড়তে হবে। অনুরুপ মাগরীবকে দেরি করে এবং ঈশাকে এগিয়ে নিয়ে একত্রে পড়তে হবে।
(বঙ্গানুবাদ বুখারী হা/ ১১১২ আঃ প্রকাশ)।
আর বিবেক থাকা পর্যন্ত কোন ক্রমে সালাত মাফ নেই।