কুরবানির পশু জবাই ও প্রচলিত ভুলঃ
আসছে ইদুল আযহা মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব।
প্রতিবছর এ দিনটি মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পশু কুরবানি করে থাকেন।
সেই কুরবানির পশু কেনার জন্য আমাদের যেতে হয় কুরবানির পশুর হাটে। সমস্যা বাধে এখানেই। আমরা অনেকেই সুস্থ ও অসুস্থ পশুর পার্থক্য করতে পারি না।
তাছাড়া কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী গরু মোটাতাজা করতে অতিরিক্ত মাত্রায় ডেক্সামিথাসন ব্যবহার করে থাকে।
ফলে গরুর কিডনির ফাংশন নষ্ট হয় ও বডিতে পানি জমতে থাকে।এ ধরনের গরু হাটেই অনেক সময় মারা যায়।
তাই কুরবানির জন্য সুস্থ পশু নিশ্চিত করতে নিচের বৈশিষ্ট্য গুলো মিলিয়ে নিবেন –
- পশুর চোখ উজ্জল থাকবে।
- মাজল ( মুখের অগ্রভাগের কালো অংশ) ভেজা ভেজা থাকবে। শুকনা থাকা অসুস্থতার লক্ষণ।
- পশু নিশ্চুপভাবে দাড়িয়ে না থেকে, নড়াচড়া করবে।
- কান ও লেজ নাড়াচাড়া করবে।
- শরিরের তাপমাত্রা সঠিক থাকবে।
- মুখ থেকে ফেনার মত (salivation) পড়বে না। তবে স্ট্রেস এর কারণে এমন হতে পারে।
- গায়ের চামড়া টেনে ছেড়ে দিলে দ্রুত আগের অবস্থায় চলে আসবে।
- পশু কিছু প্রসাব পায়খানা করবে।
কুরবানির পশু জবাই ও প্রচলিত ভুলঃ
কুরবানির পশু নির্ধারণে ইসলামের কিছু নীতিঃ
বয়সঃ
১. গরু,মহিষঃ সর্বনিম্ন ২ বছর ( দাঁত পড়ার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই)।
২. ছাগল, ভেড়া, দুম্বাঃ সর্বনিম্ন ১ বছর (৬ মাস বয়সের ভেড়া,দুম্বা যদি ১ বছরের ভেড়া, দুম্বার মত মনে হয় সেগুলোও গ্রহণযোগ্য হবে।
৩. উটঃ সর্বনিম্ন ৫ বছর।
• শিং ভাংগা, ল্যাংড়া ( lamenees ) বা যেকোন বড় অংগহানি ওয়ালা প্রাণি নেওয়া যাবে না।
জবাইঃ
ইসলামি নিয়ম অনুযায়ী নিচের ৪ টি গঠনের যেকোন ৩ টি কাটতেই হবে।(lamenees)
1. শ্বাসনালী
2. খাদ্যনালী
৩+৪.গলার দুই পাশের দুই রক্তনালী যেটি মাধ্যমে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হয়।
(***বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ মাওলানা /মুফতি সাহেবের শরণাপন্ন হোন।
সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যাঃ
জুগুলার ফারোও এর স্ট্রাকচার জেনে নেই প্রথমে। জুগুলার ভেইন, কারোটিড আর্টারি, নার্ভ আরো এসোসিয়েটেড স্ট্রাকচার।
জবাই এর সময় ভেইন, আর্টারি কেটে যায়।
ভেইন দিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত ব্লাড বের হয়ে যায় আর আর্টারি দিয়ে ব্লাড না যেতে পারায় ব্রেনে হাইপোক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) হয়, ফলে ব্রেন থেকে মেসেজ পাঠায় অক্সিজেনের জন্য।
অক্সিজেন যুক্ত ব্লাড ব্রেনে যাওয়ার সময় আর্টারি কাটা থাকায় শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যায়।
রক্ত বের হয়ে যাওয়ায় মাংসের কোয়ালিটিও বৃদ্ধি পায়।
প্রচলিত ভুলঃ
• আমরা অনেকেই ছুরির চোখা মাথা দিয়ে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত করি। আমরা মনে করি এরকম করলে দ্রুত মারা যাবে ফলে মৃত্যু সহজ হয়।
কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়। স্পাইনাল কর্ডে আঘাত এর কারণে প্রাণি প্যারালাইজড হয়ে যায়।
সুতরাং কেঊ এ ধরনের ভুল করবেন না।
• ব্লিডিং সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই অনেকেই প্রাণির পা কাটা, ফ্লেইং (চামড়া ছাড়ানো) করে থাকে যা কখনোই ঠিক নয়।
পরিশেষে বলতে চাই, কুরবানির পশুর বর্জ্র পরিষ্কার করে রাখবেন।
আরো পড়ুন:
- কোরবানির ফাজায়েল
- গরু কোরবানি বিরোধী হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দের করুণ পরিণতিঃ
- হাদীস বর্ণনায় সাহাবায়ে কেরামের অভূতপূর্ব সতর্কতা
- পর্নোগ্রাফির মরণকামড় থেকে মুক্তির উপায়
- জ্ঞানার্জনে দিগ দিগন্তে গমনের ফযীলত ও হাদীসের আলো ।
- আয়েনা দেখার নিয়ম-কানুন বা বিধি-নিষেধ কি?
- হায়েজের সময়সীমা কতদিন?
- একজন দুনিয়া বিমুখ আলেম