ব্লগিং এ ভুল বিষয়ে সময় ও অর্থ ইনভেস্ট না করি

অনলাইনে কাজ করার ক্ষেত্রে বা ব্লগিং করতে গিয়ে একটা ব্যাপার সবসময় মাথায় রাখা উচিত – আমরা যেন ব্লগিং এ ভুল বিষয়ে সময় ও অর্থ ইনভেস্ট না করি
তেমন গুরুত্বপূর্ণ না বা আপনার ইনকামের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত না (বা ডিরেক্ট আপনার ইনকামকে প্রভাবিত করে না) – এমন কাজে সময় দেয়া বা এমন সফটওয়ার/টুলস/এপ এর পিছনে ইনভেস্ট করা মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি। মানুষ সবসময় এমন কিছুতে ব্যস্ত থাকতে চায় সবসময় – যেগুলো করা অপেক্ষাকৃত সহজ বা ইনস্ট্যান্ট একটা ভিজুয়াল ইমেজ দেখতে পায়।

ব্লগিং এ ভুল বিষয়ে সময় ও অর্থ ইনভেস্ট না করি

কিছু উদাহরণ দিচ্ছি।

আপনি খেয়াল করে দেখবেন – একটা ওয়েবসাইটের আসল যেই এলিমেন্ট – কন্টেন্ট ; সেটা নিয়ে আমরা যতোটা না সিরিয়াস, তারচেয়ে বেশি সিরিয়াস হচ্ছে – সাইটের লোগো কেমন হবে, কোন থিমটা কিনবো বা কোন হোস্টিং এ থাকবো বা সুইচ করতে হবে কিনা, এসইও রিসার্চের জন্যে কোন টুল কিনবো – এইসব।
কয়েকদিন পর দেখবেন – আপনার সাইটে পর্যাপ্ত কন্টেন্ট দেয়া ছাড়া আর সবকাজই ঠিকঠাক করেছেন। কন্টেন্ট দেন নাই – কিন্তু সুন্দর একটা লোগো বানিয়েছেন, একটু পর পর সাইটের কালার চেঞ্জ করছেন, ডিজাইন চেঞ্জ করছেন এবং একটা প্রিমিয়াম থিম কিনেছেন, ভালো একটা প্রিমিয়াম প্লাগিনও কিনে ফেলেছেন, ভালো একটা হোস্টিং কিনেছেন এবং রিসার্চের জন্যে পেইড কোন টুল কিনে সেটা নিয়ে ব্যস্ততায় দিন কাটছে আপনার।
এরই মাঝে ইন্টারনেট ঘুরতে ঘুরতে নতুন কোন কিওয়ার্ড আইডিয়া পেয়েছেন এবং পাওয়ার সাথে সাথে নতুন ডোমেইন কিনে ফেলেছেন এবং সেটা নিয়ে প্লানও করে ফেলছেন। কিন্তু আপনার ঐ আগের সাইটের অবস্থা তথৈবচ।
এই পুরো ব্যাপারটাকে একটা দুষ্টচক্র বলতে পারেন। আরেক্টু সহজ ভাষায় বললে – অপ্রাসঙ্গিক জিনিসের প্রতি মানুষের সহজাত প্রবণতা এবং কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত না সেটা বুঝতে না পারা এবং এই শিটি জিনিসটার পুনরাবৃত্তি করা।
কোন একটা সময় দেখবেন – আপনি যেই সাইটটা নিয়ে এতোকিছু করলেন – সেখানে কোন কন্টেন্ট দেয়া হয় নাই (বা কয়েকটা দিয়ে ফেলে রেখেছেন)। সুতরাং ট্রাফিকও নাই। ডোমেইন রিনিউয়াল করার সময় চলে এসেছে। এবং রিনিউ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ অলরেডি এই সাইটটা নিয়ে আপনার আগ্রহ শূন্যের কোঠায়।
এবং এই ঘুর্নিপাকে আপনি ঘুড়তেই থাকবেন। ঘুড়তেই থাকবেন। আবার এবং আবার।

ব্লগিং এ ভুল বিষয়ে সময় ও অর্থ ইনভেস্ট না করি

একই ভাবে।
যেহেতু আমি ব্যাক্তিগতভাবে অনেক ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করি এবং আমাদের মেম্বারদের অনেকেরই সাইট দেখি প্রতিদিন – যারা ভালো করছে তাদের মধ্যে একটা কমন প্যাটার্ন দেখতে পেয়েছি। সেটা হচ্ছে কন্টেন্ট। যে যতো বেশি আর্ন করছে – তার সাইটে কোয়ালিটি কন্টেন্ট এর সংখ্যা ততো বেশি। প্রায় সবারই ৫০০ থেকে ১০০০+ হাই কোয়ালিটি কন্টেন্ট আছে তাদের সাইটে।
কন্টেন্ট ছাড়া আর যেসব জায়গায় আপনি ইনভেস্টমেন্ট করবেন (টাকা বা সময়) – কোনটাই আপনার ইনকামকে সরাসরি প্রভাবিত করে না। একটা পেইড থিম আপনার ইনকাম বা র্যাঙ্কিং বাড়াবে না। আপনি Yoast নাকি Rankmath ইউজ করবেন – এইগুলোর ভুমিকা আপনার সাকসেসফুল হওয়ার পিছনে সত্যিই গৌণ।
আপনার সাইটে কোন কন্টেন্ট নাই বা সাইট থেকে কোন আর্নিং হচ্ছে না – SiteGround, WPX বা Cloudways বা Kinsta ইউজ করা আসলেই অবান্তর। সাইটে ১০টাও কন্টেন্ট নাই – কিন্তু ব্যাকলিঙ্ক কোথা থেকে করবেন, কিভাবে করবেন, কার কাছ থেকে কিনবেন – সেটা নিয়ে চিন্তা করছেন – যার পরিণতি সবসময় নেগেটিভ (কালেভদ্রে এফারমেটিভ)।
উপড়ের সবগুলো উদাহরণই, অনেকটা ভালোভাবে লোহা গরম না করেই তাতে আঘাত করে একটা শেইপ আনার বৃথা-চেষ্টা করার মতো।

আমার পরামর্শ হচ্ছে –

১। ওয়ার্ডপ্রেসের ডিরেক্টরিতে ফ্রিতেই থাকা সবচেয়ে পপুলার কোন একটা থিম দিয়ে সাইট শুরু করুন। হতে পারে সেটা Astra, Go, GeneratePress বা OceanWP। সাইটের ইনকাম ৫০০ ডলার না হলে এইটা চেঞ্জ করার কথা চিন্তাও করবেন না।
২। লোগো নিজেই বানিয়ে নিন Canva দিয়ে। ফ্রিতেই সুন্দর সুন্দর লোগো বানানো যায়।
৩। মাসিক ২ বা ৩ ডলারের শেয়ার্ড হোস্টিং দিয়ে সাইট স্টার্ট করুন। সাইটের ইনকাম মিনিমাম ৫০০ ডলার না হলে চেঞ্জ করার কথা ভুলে যান।
৪। ১টা বা সর্বোচ্চ ২ টা সাইট নিয়ে শুরু করুন। মাসিক ৫০০ ডলার না আসা পর্যন্ত নতুন ডোমেইন কিনবেন না বা নতুন সাইট শুরু করবেন না।
৫। সব ফ্রি প্লাগিন এবং টুলস ইউজ করুন। সব পেইড জিনিসের অল্টারনেটিভ আছে। একটু মাথা খাটালেই পেয়ে যাবেন।
আর এইগুলো করে যেই টাকা বাঁচবে, সেটা কন্টেন্ট-এ ইনভেস্ট করুন। আপনার টার্গেট থাকবে ১০০টা কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ করার পর, লিঙ্ক নিয়ে চিন্তা করা। তার আগে কোনভাবেই নয়।
ধৈর্য ধরে নিয়মিত কাজ করুন। যেই কাজটা সরাসরি আপনার ইনকামে প্রভাব ফেলবে – শুধুমাত্র সেই কাজটাই করুন।
বাকিসব – ডিস্ট্রাকশন।

Related Posts

Add Comment

You cannot copy content of this page