ইসলাম কি নারীকে বন্দিনী বানিয়ে রাখে? তানজিম আনাম
নাকি তাকে প্রকৃত মর্যাদা দেয়!
কিছুদিন আগে আমার এক বোনের দুঃখ ভারাক্রান্ত স্ট্যাটাস দেখে বড়ই ব্যথিত হয়েছিলাম। উনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, কিভাবে কষ্টের জীবন কাটাতে হচ্ছে। বাবার বাড়িতেও পরাধীন, আর স্বামীর বাড়িতেও একই অবস্থা।
আমিও বেশ কিছুদিন ধরে এই বিষয়ে হালকা-পাতলা পড়াশোনায় লেগে ছিলাম। তাই ভাবলাম এ বিষয়ে কিছু লিখলে নিজেরও চর্চা হয়ে যাবে, পাশাপাশি কোন বোন যদি বিষয়গুলো বুঝতে পারে তাহলে তো খারাপ হবে না, ভাইদের জন্যেও রয়েছে কিছু দৃষ্টান্ত, ইনশাআল্লাহ।
পাশ্চাত্যের যুগে লিবারিজমের ঝলমলে বাতির উজ্জলতায় ফেমিনিস্ট নামক শিয়াল পন্ডিত নারীদের চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে।
ফলে এসকল আগ্রাসী শিয়াল পন্ডিতের ভোগবাদী চিন্তার ফাঁদে পড়ে নারী জাতি কুমিরের ছানায় পরিণত হচ্ছে। “নারীর ক্ষমতায়ন” নামক লোভনীয় তত্ত্বের লালসা দেখিয়ে নারীকে প্রতিযোগিতায় দাঁড় করানো হচ্ছে পুরুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে, ভেঙে ফেলা হচ্ছে পরিবারগুলোকে।
জাতিসংঘের United Nations Human Development Report এবং Arab human development report-এ “নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন”এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহের উল্লেখ রয়েছে(অর্থাৎ তারা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে)।
Page Content Highlights
ইসলাম কি নারীকে বন্দিনী বানিয়ে রাখে?
“নারীর ক্ষমতায়ন” (Empowerment of women) এর অর্থ কি?
বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে দেখলে তথাকথিত নারীর ক্ষমতায়নের আসল অর্থ হলো—
১. নারীদের একটির জায়গায় একত্রে দুইটি কাজ করতে হচ্ছে। ঘর ও সন্তান দেখাশোনা করা নারীদের মৌলিক কাজ, এর সাথে অতিরিক্ত যুক্ত হচ্ছে ঘরের বাইরে অর্থ উপার্জনের কাজ।
২. নারীরা কাজ করছে পুরুষ-প্রধান (Male-dominated) পরিবেশে। দৈনিক পুরুষদের সাথে মেলামেশা, উঠাবসা করতে হচ্ছে; অথচ এ ধরনের পুরুষদের (গায়রে মাহরাম; যাদেরকে বিয়ে করা বৈধ) সাথে মেলামেশার অনুমতি নেই।
৩. নারীরা ছোট সন্তানদেরকে অন্যত্র রেখে আসতে বাধ্য হচ্ছে। যেমন:ডে-কেয়ার সেন্টার; এমনকি ছয় সপ্তাহের শিশু পর্যন্ত সেখানে রেখে আসতে দেখা যায়।
৪. নিজের সন্তানদের সাথে অর্থবহ আলাপ-আলোচনায় সপ্তাহে গড়ে মাত্র 30 মিনিট সময় লাভ করছেন একজন নারী।
৫. বিষন্নতা(Depression);কর্মজীবী নারীদের মধ্যে ডিপ্রেশনের হার পুরুষের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত দেখা যায। এর সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য মানসিক যাতনা; যেমন- উদ্বেগ (Anxiety), স্ট্রেস ইত্যাদি।
৬. নিজের সহজাত নারীসুলভ বৈশিষ্ট্যের সাথে সংঘাত অনুভব করেন নারীরা; যেমন- পরিচর্যা(Nurturance), নমনীয়তা(deference), নির্ভরতা(Affiliation) ইত্যাদি নারীসুলভ গুণাবলী।
অন্যদিকে ক্যারিয়ার গঠনে প্রয়োজন নিজেকে জাহির করার মানসিকতা, স্বায়ত্তশাসন, স্বনির্ভরতা ইত্যাদি।
[Psychology From The Islamic Perspective;Page197-198]
জাতিসংঘের ‘High Commission of Human Rights’এর অফিস থেকে পরিচালিত “নারীর প্রতি সকল বৈষম্য বিলোপ”- সনদটির প্রধান লক্ষ্য হল-
“জেনে রাখুন, নারী ও পুরুষের মধ্যে পূর্ণ সমতা (Equality) অর্জনের জন্য সমাজ ও পরিবারের পুরুষের পাশাপাশি নারীদের প্রথাগত ভূমিকার পরিবর্তন প্রয়োজন… এ ব্যাপারে “স্টেইট পার্টি” যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা নারী-পুরুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আচরণ, কুসংস্কার, প্রথা ও রীতিনীতির পরিবর্তন করবেন, যেগুলো নারী-পুরুষের প্রথাগত ভূমিকা নির্ধারণ করে।”
[United Nations, Division for the Advancement of Women, Convention on the Elimination of all Forms of Discrimination against Women (CEDAW)
Retried October 14, 2009]
এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, এই কমিটি খোলাখুলিভাবে ধর্ম ও সংস্কৃতি কে টার্গেট করছে।
তারা মত প্রকাশ করেছে যে, ‘সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণে নারীর অধিকারের বিশ্বজনীনতা আর অবমাননা করতে দেয়া যায় না।’
তারা বোঝাতে চাচ্ছে যে, ধর্মীয় চেতনা ও সংস্কৃতি নারী অধিকার আদায়ে বড় ধরনের বাধা।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে জাতিগত ভেদাভেদ ও লৈঙ্গিক কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।এখানে শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারিত হয় কেবলমাত্র তাকওয়া সৎকর্মের মাধ্যমে।
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
(مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّہٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً ۚ وَ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۷﴾ )
অর্থ:”মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই তাকে পবিত্র জীবন দান করব। আর অবশ্যই তাদেরকে তারা যা করত তার তুলনায় শ্রেষ্ঠ প্রতিদান দেব।”
[Surat An-Nahl 97]
অন্যত্র বলেছেন:
(وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ مِنَ الصّٰلِحٰتِ مِنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَاُولٰٓئِکَ یَدۡخُلُوۡنَ الۡجَنَّۃَ وَ لَا یُظۡلَمُوۡنَ نَقِیۡرًا ﴿۱۲۴﴾ )
অর্থ:”আর পুরুষ বা নারীর মধ্যে কেউ মুমিন অবস্থায় সৎ কাজ করলে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি অণু পরিমাণও যুলুম করা হবে না।”
[Surat An-Nisa’ 124]
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে অধিকার ভিত্তিক কোন পার্থক্য করা হয়নি।
কিন্তু একশ্রেণীর ভোগবাদী মানসিকতা আর ফেমিনিস্ট শেয়াল পন্ডিত নারীদের ধর্ম থেকে দূরে সরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যাতে, তারা পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা থেকে মুক্ত হয়ে তাদেরকে সহজেই হাতের মুঠোয় আনা যায়।
মূলত লিবারিজমের বুলি ছুঁড়ে নারীর ক্ষমতায়ন কিংবা সমতায়নের লোভ দেখিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করাই এদের মূল উদ্দেশ্য।
এরা মূলত দুটি মূলনীতিকে সামনে রেখে সামাজিক ও ধর্মীয় দিক থেকে দূরে সরিয়ে ইকুয়ালিটির বীজ বপন করতে চায়। এই দুটি মূলনীতি কে পুঁজি করেই তারা নারীদের মুক্তমনা, ইচ্ছামত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখাতে চায়।
প্রথমতঃ তারা বলে ইসলাম নারী শিক্ষা কে অনুমোদন না দিয়ে নারীদের অজ্ঞ-মূর্খ (?) রেখে পুরুষত্বকে জাহির করতে চায়, নারীদেরকে নিজেদের অধীনস্থ রাখতে চায় (?)।
অথচ ইসলামে ইলম বা জ্ঞানার্জনের প্রতি যে পরিমাণ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে অন্য কোন ধর্মে নজিরবিহীন।
নারী শিক্ষার এক উল্লেখযোগ্য নক্ষত্র আম্মাজান আয়েশা সিদ্দীকা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) যার অবর্ণনীয় ইলমের ফলে আমরা দ্বীনি পারিবারিক জীবন সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এছাড়াও অন্যান্য উম্মাহাতুল মুসলিমিন এবং সাহাবিয়া (রা.) ইলমের দৃষ্টান্ত অন্য কোথাও মেলা ভার।
তাছাড়া ইতিহাসের শতশত মনীষীর ইলমের সাগর হয়ে ওঠার পিছনে এক বিশাল অবদান রয়েছে নারীজাতির।
আল্লাহ জাল্লা শানুহু কুরআনুল কারীমে বিভিন্ন আয়াতে কারিমা জ্ঞান অর্জনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। ইলম অর্জনে কোন লৈঙ্গিক ব্যবধান বা নারী-পুরুষ পার্থক্য বর্ণনা করা হয়নি।
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
( اِنَّمَا یَخۡشَی اللّٰہَ مِنۡ عِبَادِہِ الۡعُلَمٰٓؤُا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ غَفُوۡرٌ ﴿۲۸﴾ )
অর্থ:”…আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাঁকে ভয় করে ; নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।”
[Surat Fatir 28]
অন্যত্র বলেছেন:
(قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ٪﴿۹﴾ )
অর্থ:”…বলুন, ‘যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ বোধশক্তি সম্পন্ন লোকেরাই শুধু উপদেশ গ্ৰহণ করে।”
[Surat Az-Zumar 9]
পক্ষান্তরে জীহবা বের করে থাকা ফেমিনিস্ট লাল শিয়ালরা যে বেপর্দা ও অর্ধনগ্ন সহশিক্ষা চালু করেছে তার মাধ্যমে নারীরা কতদূর শিক্ষিত হচ্ছে তা সবার জানা। ছেলে মেয়ে পাশাপাশি, ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে কি কি ডিগ্রি অর্জন করল তা একটু জেনে নেয়া যাক।
ইসলাম কি নারীকে বন্দিনী বানিয়ে রাখে?
“2007 সালের এক জরিপে দেখা গেছে,আমেরিকার কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে 6 লাখ 76 হাজার জন জীবনে অন্তত একবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।”
“প্রতি 21 ঘন্টায় আমেরিকার কোন না কোন কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।”
“প্রতি 12 জন কলেজগামী পুরুষ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন ধর্ষণের সাথে জড়িত।”
“ইংল্যান্ডের প্রতি তিনজন মহিলা শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের শিকার হয়।”
Association of American Universities-এর 2015 তে প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার আগেই প্রতি চারজনে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হন।
প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে 27 টি শীর্ষ ইউনিভার্সিটির প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে জরিপ চালিয়ে।
এ তো গেল গবেষণায় পাওয়া এবং রিপোর্ট কৃত ধর্ষণের সংখ্যা।American civil liberties Union এর রিপোর্ট অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ঘটা 95% ধর্ষণের ঘটনার পর কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় না।
[In pursuit of freedom,Page 100-101]
তাহলে আপনারা নিজেরাই ভাবুন সহশিক্ষার বাস্তবতা কি! লিবারেলরা কি চায! ফেমিনিস্টরা কি চায়!
দ্বিতীয়তঃ তারা বলে ইসলাম নারীদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে, আবদ্ধ ও মজলুম বানিয়ে রেখেছে(?)।
ধর্মের বেড়াজালে নারীদের কোন ইচ্ছের প্রকাশ কিংবা স্বপ্নপূরণের অধিকার নেই(?)। এভাবে তারা নারীদের ধর্ম থেকে দূরে নিয়ে এসে স্বাধীনচেতা (?) মনোভাব সৃষ্টি করছে।
বাস্তবিক অর্থে তারা ইকুয়ালিটির টোপ গিলিয়ে মাছ শিকারের মতো নারীদের ঐচ্ছিক দাসী রূপে কাজে লাগাচ্ছে।
অথচ ইসলাম নারীদের একটি “পারফেক্ট ক্যারিয়ার” দিয়ে দিয়েছে। ইসলাম নারীদের দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান “মা” এর অধিকার।
সন্তান জন্মদান থেকে শুরু করে, সঠিকভাবে লালন-পালন, যোগ্য করে গড়ে তোলা, ঘর সামলানো, পারিবারিক বন্ধন গড়ে তোলা এসব সঠিক ও সুন্দরভাবে আঞ্জাম দেয়া শুধু নারীদের পক্ষে সম্ভব।
এই বিশেষ ক্ষমতা কেবল নারীদেরকেই আল্লাহ দিয়েছেন পুরুষরা চাইলেও তাদের দ্বারা সম্ভব না। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ জাল্লা শানুহু কতই না সুন্দর ব্যবস্থাপক তা কোরআনের একটি আয়াত দাঁড়াই প্রমাণ হয়ে যায়।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰہُ بَعۡضَہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّ بِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ ؕ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ اللّٰہُ ؕ ﴿۳۴﴾ )
অর্থ:”পুরুষরা নারীদের কর্তা , কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্যে যে, পুরুষ তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে ।
কাজেই পূণ্যশীলা স্ত্রীরা অনুগতা এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহ যা সংরক্ষিত করেছেন তা তারা হেফাযত করে।…”
[Surat An-Nisa’ 34]
কিছুদিন আগে এক বোনের এক লেখা পড়ে বেশ মজা পেলাম। তিনি লিখেছেন:
আমাকে একজন জিজ্ঞেস করলো নারীরা তো পুরুষের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল কিন্তু পুরুষরা তো নারীদের উপর কোনোভাবেই নির্ভরশীল নয়।
আমিও বলে দিয়েছি, যে পুরুষ তার ঘড়ি,ওয়ালেট থেকে শুরু করে, শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি-টুপি এমনকি, গোসলের টাওয়ালটার জন্যও নারী উপর নির্ভরশীল তাকে কিভাবে স্বনির্ভরশীল বলছেন?”
এটা ইসলামের সৌন্দর্য নারী-পুরুষ পরস্পর একে অপরের পরিপূরক।
পক্ষান্তরে,ভোগবিলাসী ফেমিনিস্টরা বলে ঘরের কোনায় পড়ে থেকো না,নিজেকে স্বনির্ভরশীল বানাও,পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলো। আরে ভাই সোজা কথা কেন বুঝেন না, পুরুষের কাধ আর মহিলার কাজ সমান হতে পারে না।
40 বছরের একজন পুরুষ যে কাজটি করতে পারবে 40 বছরের সেই মহিলা তার অর্ধেক কাজটাও করতে পারবে না।
আক্ষরিকভাবে ফেমিনিস্ট তা করায়ও না।তারা শুধু চায়, মহিলারা লজ্জা কাটিয়ে তাদের সাথে মিশুক হয়ে উঠুক, যাতে তাদের স্বার্থসিদ্ধি আরো সহজ হয়ে যায়।
চলুন দেখে আসি সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীতে তাদের আচরণ:
“পেন্টাগনের 2010 সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউএস আর্মি তে প্রতি বছর 19 হাজারের মতো যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
2011 সালে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় 26 হাজারে। 2016 সালে সংখ্যাটা 70,000 ! আমেরিকার বেসামরিক মহিলাদের তুলনায় ইউএস আর্মির মহিলা সদস্যরা অধিক মাত্রায় যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে থাকে।”
“পেন্টাগনের পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত আমেরিকার সেনাবাহিনীর ভেতরে ঘটা যৌন নির্যাতনের মাত্র 14% ঘটনার রিপোর্ট করা হয়। বাকি 86% ঘটনা থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে।”
[In Pursuit of freedom;Page 102]
তাহলে আপনারাই বলুন ফেমিনিস্টরা আসলে কি চায়? নারীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে?নাকি তাদের লোক সমাগম এ এনে ভোগ্য পণ্য বানাতে?
বর্তমান মুসলিম সমাজের সবথেকে বড় ফিতনা “মডারেট ইসলাম”।
তারা পর্দার বিধানকে শিথিল করতে চায়। যাতে নারীদের ইজ্জত মুক্তোর মনি থেকে বাজারের পসরা সাজানো ডালিতে রূপান্তরিত হয়।
ইসলাম নারীদের চৌদ্দশ বছর আগে থেকেই হেফাজত করে আসছে, এখনোও যারা দ্বীনের পথে আছে তারা হেফাজতেই আছে।
প্রকৃত মর্যাদা ও সম্মান নারীদের শুধুমাত্র ইসলামীই দিতে পারে অন্য কোন ধর্ম,পথ বা পন্থা নয়।
কতই না উত্তম হেফাজতকারী তুমি আল্লাহ! তুমিই সম্মানদাতা, যাকে ইচ্ছা সম্মান দাও, যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করো।