আহমেদ জাবিদ হাসান লেখক
২০১০ সালের আরব বসন্তের সময় যখন আরবের জনগণের ক্ষোভ তুঙ্গে। তখন আমেরিকার দীর্ঘদিনের দাবার বোর্ড, মধ্যপ্রাচ্য, যেখানে বেশীরভাগ ঘুটিই ছিলো আমেরিকার।
সেই মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠলো টালমাটাল।সেই টালমাটাল পরিস্থিতি থেকে আমেরিকা কিছু লাভবান হয়েছে আবার হারিয়েছে ও। তবে যা হারিয়েছে তা আবার ফিরেও পেয়েছে। তিউনিসিয়ায় তরুন বুয়াজিজি নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলো।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লো এই আত্মত্যাগ এর দুঃখজনক গল্প।
শিক্ষিত বেকার যুবক বুয়াজিজ কমলা বিক্রি করতে বসায় পুলিশ তাকে মেরে তার কমলা বাজেয়াপ্ত করে তাড়িয়ে দেয়। অভিযোগ ছিলো সে পুলিশকে চাঁদা দেয়নি। তার প্রতিবাদে বুয়াজিজি নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে। আর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে তা আগুন লাগিয়ে দিলো সারা আরবে।
২৩ বছরে প্রথম স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন দেখলো তিউনিসিয়া। আন্দোলন সইতে না পেরে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসক বেন আলী দেশত্যাগ করেন। তখন আরব যুবকদের রক্ত তখন টগবগিয়ে উঠলো। মূলত ইন্টারনেট ছিলো সেই গণজাগরণের মুল কারণ। খুন চেপে বসলো বছরকে বছর রাজতন্ত্র আর স্বৈরতন্ত্রের স্টিমরোলার এর নিচে পিষ্ট হয়ে থাকা আরবের যুবকদের মাথায়। কিসের শিয়া, কিসের সুন্নি!!! কোনো বিভেদ নেই। একমাত্র গণতন্ত্র ছাড়া আর কিছুতেই মুক্তি নেই।
সিরিয়ায় তখন বাসার আল আসাদ ছিলো ভয়ে।
বাপের আমলের স্বৈরশাসন এর অবসান হবে!!! গদিচ্যুত হলেতো পাবলিক পিটিয়ে মারবে। সিরিয়াকে ইন্টারনেট যুগে প্রবেশ করিয়েছে বাসার আল আসাদ নিজেই।
বাবা হাফেজ আল আসাদের সময় সিরিয়ায় আইটি সেক্টরকে উন্নত করে। আজ সেই ইন্টারনেট এনে দিলো গদিতে কম্পন। তখনো সিরিয়ায় কোনো মিছিল হয়নি।
কোনো লেখক সরকারের বিরুদ্ধে কিছুই লিখেনি, টিভিতেও সরকারের বিরুদ্ধে কিছু প্রচার হচ্ছে না। শুধু তিউনিসিয়ার বিক্ষোভ চলছে এই খবর পাওয়া যাচ্ছে। জনগণ চুপ, তবে ভিতরে চাপা উত্তেজনা জমে জমে বারুদ হয়ে আছে।
শুধু কেউ একজন আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অপেক্ষায়। হুট করে দামেস্ক এর একটা স্কুলের ছোট্ট কিছু বাচ্চারা প্ল্যান করে বসলো। কি করে বাসার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়। তারা জানে তাদের জন্ম সনদ তৈরী করতেও সিরিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা ঘুষ নেয়৷ জন্ম থেকেই তারা অতিষ্ঠ। প্রতিবাদ শুরু হবে দেওয়ালে চিকা মারা দিয়ে। কিন্তু কি লিখবে??? যে কথাটা আগুন ধরিয়ে দিবে জনমনে!!! ততদিনে তিউনিসিয়ায় গণজোয়ারে স্বৈরশাসকের পতন।
সকালে উঠেই বাচ্চারা দেওয়ালে লিখল ” এবার তোমার পালা ডক্টর ( আসাদ) “
সবাই দেওয়ালে এই লেখাটি দেখে ভীষণ ভয় পেলো। সরকারি গোয়েন্দাদের ঘাম ছুটে গেল। কে বা কারা এই কাজ করেছে। তাদের সাংগঠনিক শক্তি কতটুকু!! দিনরাত পরিশ্রম করে গোয়েন্দারা বের করলো কিছু শিশুকে।
তাদের মা বাবার সামনে তাদেরকে সরকারি বাহীনি নির্মমভাবে পেটালো। ঘনঘন রিমান্ডে তারা প্রায় মুমূর্ষু।
আরব বসন্তের সময় যখন মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠলো টালমাটাল।
সরকারি কর্মকর্তারা ওদের বাবা মা দের বললো
” বাসায় গিয়ে আরো কয়টা সন্তান পয়দা করো।
আর এদেরকে ভুলে যাও। “প্রতিবাদের আগুন এবার জ্বলে উঠলো সিরিয়ায়।
স্কুল কলেজের যুবকরা সিদ্ধান্ত নিলো তারা এবার কিছু একটা করবে। শুরু হলো স্কুল কলেজের ছেলেদের গ্রেফতার, সারাদেশ স্তব্ধ। কিছু ছেলে বুঝতে পারলো যে জনগণ বিক্ষোভের জন্য তৈরী।
একরাতে উঠতি বয়সী কিছু ছাত্র বন্ধুবান্ধব সবাই শহরের সবার বাসায় বাসায় দরজার নিচে লিফলেট দিয়ে গেল।
লিফলেটে লিখা “আগামী শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজের পর বন্দীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ হবে৷ ” কে নেতৃত্ব দিবে বলা নেই৷
সেদিন শুক্রবার মসজিদে হুজুর নামাজ শেষে সরকারের পক্ষে মসজিদ প্রাঙ্গনে বক্তৃতা দিচ্ছে ” আপনারা সরকারকে দোষ দিবেন না, ছেলেগুলো বেয়াদব। আর বিক্ষোভ এর কথা গুজব। ” সবাই চুপ, এই মুহূর্তে একজন ছেলে উঠে গিয়ে ইমামকে দাড়ি চেপে ধরে গালি দিয়ে ঘুষানো শুরু করলো।
মুহূর্তের মধ্যেই আগুন জ্বলে উঠলো মসজিদ।
সবাই একযোগে মুক্তি মুক্তি বলে চেঁচামেচি করতে লাগলো।
মুসল্লীরা বের হয়ে বুঝতে পারলো বাইরের শহরেও বিক্ষোভ হচ্ছে, কোথাও বাদ নেই।
পুলিশ, মিলিটারি সবাই মুহূর্তের মধ্যে মাঠে নেমে পড়লো।
বিক্ষোভ এর আগুন জ্বলজ্বল করছে সারা সিরিয়ায়।
আসাদ আশ্রয় নিলো রাসায়নিক অস্রের।
রাসায়নিক অস্রের জন্য ক্ষোভ হয়ে উঠলো আরো তীব্র।
আমেরিকার সেই অভিযোগ মিথ্যা ছিলো না।
আসাদের সেই কাজটা আসাদকে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেললো
আর সেই জন বিক্ষোভকে কাজে লাগালো আমেরিকা আর ইসরায়েল।
সেই মুক্তিকামী জনগণ আর সেনাবাহিনী থেকে পলাতক সৈনিক মিলে FSA (ফ্রি সিরিয়ান আর্মি) এর জন্ম।
FSA এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলো শহরের একজন মধ্যবিত্ত কেরানি। যার ছিলো না কোনো বৈদেশিক বন্ধু বা অস্রের যোগান।
তাই অস্রের অভাবে তারা হয়ে পড়লো আমেরিকার নির্ভর আর শেষে বনে গেল আমেরিকার দাবার গুটি৷
আমেরিকার আধুনিক অস্রশস্র আর তুর্কী সৈনিকদের ট্রেনিং পেয়ে FSA হয়ে উঠলো শক্তিশালী।
এরপর FSA এর হাতে যখন মাইর খেতে খেতে তখন আসাদ বাহিনী অতিষ্ট।
বিষয়টা তখন রাশিয়ার মাথায় বাড়ি খেলো।
আসাদ যদি সিরিয়া থেকে সরে আমেরিকার ব্লকে ডুকে যায়, তাহলে রাশিয়া সিরিয়ার উপর দিয়ে রাশিয়া আর ইউরোপে জ্বালানি বিক্রি করতে পারবে না।
ইউরোপের তেলের বাজার হারালে রাশিয়ার অর্থনীতি কোনদিকে যায় কে জানে!
তখনই কাজে আসলো আমেরিকার করা সবচেয়ে ভুল অথবা হিলারি ক্লিন্টনের সবচেয়ে বড় জারজসন্তানের বাহীনি দায়েশ বা ইসলামিক স্টেট।
ওবামা তখন সিরিয়ার একদিকে ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে অস্র দিতো, আরেক দিকে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির আরেক শত্রু ইসলামিক স্টেটকে অস্র দিতো।
ইসলামিক স্টেট এর অস্র আসতো তুরস্ক, ভারত আর সৌদি থেকে।
তুরস্ক , ভারত আর সৌদি থেকে অস্র যেতো ইসরায়েলের অবৈধ অস্রের ব্যবসায়ীদের কাছে।
আর ইসরায়েল হয়ে অস্র যেতো ইসরায়েলের বর্ডার দিয়ে ইসলামিক স্টেটে৷
রাশিয়া তখন সেটাই চাচ্ছিল।
ইসলামিক স্টেট যত সিরিয়ায় এগোবে, তত রাশিয়া সহজে সন্ত্রাস দমনের নামে সিরিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ পাবে এরপর পরোক্ষভাবে আসাদকে সাহায্য করতে পারবে।
একসময় তুরস্ক আর কাতার FSA সহ সব আসাদ বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে নিলো।
FSA এর দরকষাকষিতে তুরস্ক আর কাতারকে তৈরী করতে হয় আমেরিকা আর আমেরিকা পন্থী আরবদের শত্রুতা।
আমেরিকা যেদিন নিয়ন্ত্রণ FSA এর নিয়ন্ত্রণ হারায় তখনই FSA মাইর খেতে শুরু করে, আলেপ্পো থেকে যেদিন FSA পিছু হটে, তারপর থেকে তারা সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
আসাদ যদিও ইসরায়েল বিরোধী তাই অনেকে আসাদকে সমর্থন করে।
আসাদ কৌশলে যুদ্ধকে শিয়া সুন্নি যুদ্ধে রূপ দিয়ে দিলো।
কিন্তু আসাদ মুসলিম বা ইসলামি চেতনা থেকে ভিন্ন।
এমনকি শিয়া চেতনা থেকেও ভিন্ন।
দেশের জনগণ যখন যুদ্ধে বিপর্যস্ত, তখনো আসাদের স্ত্রী মস্কো, ইরান, ইউরোপে শপিং করতে ব্যাস্ত৷
আর লিবিয়ায় তখন গাদ্দাফীও বিপদে।
জনগণকে যতই সুখে রাখা হোক, ৪০ বছরের একনায়কতন্ত্র জনগনের পছন্দ নয়।
ফোর্বস ম্যাগাজিন থেকে গুজব ছড়ানো হলো গাদ্দাফী ২০০ বিলিয়ন ডলার এর সম্পদের মালিক।
যা দিয়ে বিল গেইটসকে দুইবার কিনেও আরো চল্লিশ বিলিয়ন ডলার বেচে যাবে।
জনগণের মনে গেঁথে গেল গাদ্দাফী দূর্নীতিবাজ।
তাছাড়া দেশের ভিতরে আছে পশ্চিমা এজেন্টে ভরা।
একসময়ের কাছের খলিফা হাফতার এর মদদে গাদ্দাফীর বিরোধীরা দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠলো।
কিন্তু এখন লিবিয়ায় ওবামা জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত সরকার এখন আর জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে নেই।
এটা এখন তুরস্ক আর কাতারের হাতে।
তবে লিবিয়ার অর্ধেকটা আমেরিকা, সৌদি আর রাশিয়া পন্থী খলিফা হাফতারের নিয়ন্ত্রণে।
খলিফা হাফতার ছিলো গাদ্দাফীর একসময়ের সবচেয়ে বড় বন্ধু।
এরপর সুদানের সাথে যুদ্ধের ব্যার্থতার পর বেইমানীর অভিযোগে হাফতারকে গ্রেপ্তার এর নির্দেশ দেয় গাদ্দাফী।
আর সেটা ছিলো গাদ্দাফীর পতনের মুল কারণ।
আমেরিকায় আশ্রয় নিলো পলাতক খলিফা হাফতার।
হাফতারের কাছে ছিলো লিবিয়ার সব দূর্বলতা ও শক্তির খবর।
হাফতার এর মাধ্যমে আমেরিকা, সৌদি আর ন্যাটো গাদ্দাফীকে শেষ করা শুরু করে৷
কিন্তু শেষমেষ ক্ষমতা পায়নি হাফতার।
জাতিসংঘের লিবিয়ার সরকার গঠনে কোনো সামরিক ব্যাক্তিকে সরকারের দায়িত্ব দেয়নি।
কারণ জাতিসংঘ চায় গণতন্ত্র।
আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে সিভিলিয়ান এর ভিতর থেকে।
হাফতার হয়ে যায় সামরিক বাহিনীর জেনারেল।
জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রিত সরকারে প্রধানমন্ত্রী বারবার পরিবর্তন হয়।
তবে বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ফয়েজ আল সারাজ সম্পূর্ণ কাতার ও তুরস্ক পন্থী।
খলিফা হাফতার কিছুদিন আগে সেনাবিদ্রোহ ঘটায়।
গাদ্দাফীর হয়ে যারা যুদ্ধ করেছে, তারা এখন খলিফা হাফতারকে সাহায্য করছে।
তবে কারণটা জানা নেই।
খলিফা হাফতার লিবিয়ার অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করছে তার মিলিশিয়া দিয়ে।
আর তার মিলিশিয়াকে সাহায্য করছে রাশিয়া, আমেরিকা, সৌদী সহ সব আরব শাসক।
লিবিয়ায় এখনো যুদ্ধ চলমান, যুদ্ধ এখন জনগণের মুক্তির জন্য নয়, তেলের নিয়ন্ত্রণের জন্য।
এখন লিবিয়ার জনগণ আরব বসন্তের সেই বিপ্লবী চেতনা ভুলে শুধু নিরাপত্তা নিয়ে ভাবে।
লিবিয়ার তেল জনগণের জন্য বিষে পরিণত হলো।
আরব বসন্তের সময় সৌদি, কাতার, দুবাইয়ের শাসকরাও বিপদে ছিলো।
কখন সেই বুয়াজিজির মত জনগণ ক্ষেপে উঠে।
সৌদিতে উঠতি বয়সীরাও হঠাৎ করে রাজতন্ত্র বিরোধী স্লোগান দিলো।
কিন্তু আলখেল্লা পরে থাকা সেই কাবা ঘরের গ্র্যান্ড মুফতি রাজতন্ত্রের পক্ষে ফতোয়া দিলো।
ঘোষনা এলো…..
শরীয়ত মোতাবেক রাজতন্ত্র হালাল অতএব গুজবে কান দিবেন না।
আরব শাসক সবাই সতর্ক , কখন কার দেশে কি হয়, কে জানে।
যে শাসকরা এই আরব বসন্ত কাটিয়ে উঠতে পেরেছে, তারা এর থেকে শিক্ষালাভ করেছে এবং গদিতে আরো শক্ত করে বসেছে।
আর যে সব শাসক এই বসন্ত সামলে উঠতে পারেনি তারা হারিয়েছে সব।
মিশরে তখন মুসলিম ব্রাদারহুড তখনো আরব বসন্তের ঢেউ এর শক্তি থেকে ভিতরে ভিতরে শক্তি জমাচ্ছে।
হোসনে মোবারক বুঝতে পারলো যে জনগণ যেকোনো সময় বিক্ষোভে ফেটে উঠতে পারে।
৩০ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে মোবারক গেল জেলে। দেশে বিশাল যুদ্ধ বাধিয়ে লাভ নেই।
ক্ষমতা একসময় তাকে ছাড়তেই হলো।
ভয় জেঁকে বসলো ইসরায়েলের মাথায়।
মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড ক্ষমতায় আসলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
তবে উপায় একটাই, আর সেটা হলো মিশরের বুরোক্রেসি।
মিশরের আর্মি, প্রশাসন ও বুরোক্রেসি সবই হোসনে মোবারকের আমলের মত ইসরায়েলপন্থী।
ক্ষমতা গ্রহণের দিন মুরসি আর তার নেতারা টের পেলেন।
বিচারপতি প্রেসিডেন্টকে বোঝাচ্ছে যে ক্ষমতা নিলে কি কি করা যাবে, আর কি কি করা যাবেনা।
তখনই মুরসি টের পেলো, যে শুধুমাত্র জনজোয়ারেই ক্ষমতা হয়না।
ক্ষমতা অর্জনের থেকে তো এখন রক্ষা করাই কঠিন!!
এখানে মন্ত্রনালয় গুলো আগের থেকেই তৈরী।
সচিবরা সালাম দেয়না মন্ত্রীকে।
আরব বসন্তের ঢেউয়ে হঠাৎ করে মুরসি ক্ষমতায় এসেছে, আর কিছুদিন পর হঠাৎ করে মুরসি আবার চলে গিয়েছে ক্ষমতা থেকে।
যাদের বিক্ষোভে হোসনে মোবারক ক্ষমতা ছাড়লো।
তাদেরকেই সিসি গুলি করে মারলো।
তহরির স্কয়ার হয়ে উঠলো জনগণের রক্তে লাল।
বুকের ভিতর ঠিকানা লিখে যুবকরা রাস্তায় নামতো যাতে পুলিশের গুলিতে মারা গেলে গায়ে লিখে থাকা ঠিকানা দিয়ে লাশটা পরিবারের কাছে পৌঁছানো যায়।
হুট করে অস্রের যোগান কোথায় পাওয়া যাবে যুদ্ধের জন্য !!!
তাই ব্রাদারহুডের কর্মীরা রাস্তায় মরার সিদ্ধান্ত নিলো।
অন্যদিকে হাইকমান্ডের সব নেতারা জেলের ভিতর, কেউ বাদ নেই।
সিসিকে সেনাপ্রধানের পদে না বসিয়ে মুরসির কোনো উপায় ছিলো না, মিশরের সব জেনারেল একই ক্ষেতের ফসল।
মিশর এর সেনাবাহিনী এখন মিশরের অর্থনীতির উপর নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে।
ডলারের বিপরীতে মিশরের মুদ্রার মান ৯৮ শতাংশ নামিয়ে দিয়েছে সিসি সরকার।
অযুহাত ছিলো মুদ্রার মান কমিয়ে এক্সপোর্ট বৃদ্ধি করা হবে আর ইমপোর্ট কমিয়ে আনা হবে।
দেশজুড়ে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে জনগণ রাজনীতি ছেড়ে রুটিরুজির দিকে বেশি মনযোগী।
উদ্যোক্তাদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে আপাতত।
কারখানা খুলতে পারছেনা খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে।
ব্রাদারহুডের একসময় মৌলবাদী অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য ছিলো, যা মিশরের অর্থনীতিতে অবদান রেখেছিল।
এবং ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আর্থিক সহায়তা দিতো।
কিন্তু তা এখন রাষ্ট্রীয় বাজেয়াপ্ত সম্পদ।
মিলিটারি কয়েকবছর পর অর্থনীতির সবদিক নিয়ন্ত্রণ নিবে।
মুসলিম ব্রাদার হুডের ভাগ্যটা শুধু মাইরের ইতিহাসে ভরপুর।
কারণ মিশর হচ্ছে স্বৈরশাসক এর কারখানা।
যাইহোক!!
আরব বসন্তের পুরো লাভের ভাগ আমেরিকা আর ইসরায়েলের পকেটে গেল শেষে।
আরব বসন্তের সময় যখন মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠলো টালমাটাল।
তথ্যসূত্র :– জুলিয়ান এস্যাঞ্জ, এডওয়ার্ড স্নোডেন।
Add Comment