Site icon modernitbd.com

কোরবানির ফাজায়েল

কোরবানির ফাজায়েল

কোরবানির ফাজায়েল

কোরবানী কোন নতুন জিনিষ নয়।

দুনিয়ার আদিকাল থেকেই কোরবানীর প্রচলন রয়েছে।

এখনও সৃষ্টি জগতের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেই দেখা যায় যে, এ ধরাপৃষ্ঠের প্রতিটি জীবনই অন্যের জন্য নিবেদিত প্রান।

তরুলতা নিবেদিত জীবজন্তুর জন্য আর জীবজন্তু হচ্ছে মানুষের জন্য কোরবান।

আল্লাহ পাক সুরা হজ্জ এর মধ্যে ঘোষনা করেন আর অমি নির্ধারন করেছি প্রত্যেক জাতির জন্য কোরবানী যেন তারা তাদেরকে প্রদত্ত চতুষ্পদ জন্তু দ্বারা আল্লাহর নাম স্বরণ করে।

অতএব, কোরবানীর জন্তু যেমন আল্লাহর হুকুম পূর্ণাঙ্গরূপে মেনে নিয়ে আপন আপন অস্তিত্বকে ফানা করেছে।

মানুষের শরীরের টুকরা হচ্ছে তেমনি আমরাও আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য অবনত মস্তকে তার পূর্ণ অনুগত্য করি

কোরবানির একটি গুরুত্বপুর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কোরবানি ওয়াজিব।

এ প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন কুরআন কারিমে ইরশাদ করেন,‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারন করেছি যাতে তাঁরা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারন করে। – সুরা হজ্জ -৩৪

একদিন হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ!

কোরবানি  কি ?

তখন উত্তরে রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করলেন কোরবানি  হচ্ছে ‘তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আঃ) এর জীবনাদর্শ ’সাহাবী পুণরায় জিজ্ঞাসা করলেন কোরবানির ফজিলত কি ?

রাসুল (সাঃ) বললেন, ‘পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেয়া হয়।

-মিশকাত শরিফ: ১/১২৯

কোরবানির ফাজায়েল

রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন, কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানি দাতার কোরবানি  আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তাঁর অতীতের সকল গুনাহ মোচন করে দেয়া হয়  ।

– তিরমিযি শরিফ: ১/১৮০

মহানবী (সাঃ) আরো ইরশাদ করেন, তোমরা মোটা তাজা পশু দেখে কোরবানি কর, কারণ এ পশুই পুলসিরাতের বাহক হবে। -মুসলিম শরিফ

 

বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ,রাসুল (সাঃ) পবিত্র মদিনায় দশ বৎসর জীবন-যাপন করেছেন প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানির করেছেন।

-তিরমিযি শরীফ :১/১৮৯

হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন,

“কোরবানির দিন আল্লাাহর নিকট কোরবানি অপেক্ষা উত্তম কোন আমল আর নেই।” – মিশকাত শরিফ

বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন,

“সামর্থ্য থাকা স্বত্ত্বেও যে ব্যাক্তি কোরবানির দিন কোরবানির করেনা সে যেন ইদুল আজহার দিন ঈদগাহের ময়দানের কাছে না যায়।” -ইবনে মাজাহ শরিফ

 

কুরবানী কখন কার উপর ওয়াজিব হয়?

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? এবং
কি পরিমান ও কি ধরনের সম্পদ থাকলে কুরবানী ওয়াজিব হয়?

জমি কিংবা ঘরের আসবাবপত্র কি কুরবানী নেসাবের অন্তর্ভোক্ত হবে?

জওয়াবঃ-
যে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, প্রাপ্তবয়ষ্ক, মুকীম মুসলমান নর-নারী ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাসস্থান ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।

কুরবানী নেসাব হল, সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ন অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রূপা অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ।

স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তাহলে উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য পন্যের মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে।

উল্লেখ্য যে, স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত সবধরনের আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫ ৷

 

আরো পড়ুন:

Exit mobile version