ফেরেশতাগণের উপর ইমান আনা ইমানের অঙ্গ হিসাবে ফরজ। আরবি মালাকুন শব্দের ফার্সি ও উর্দু ভাষার অনুবাদ হচ্ছে ফেরেশতা শব্দটি ।ফেরেশতা। আল্লাহর দূত।সেমেটিক শব্দ মালআকের অনিয়মিত বহুবচন হল (মালাইকা) ফেরেশতা (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রকাশিত ‘সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ’)-এ লিখিত হয়েছে,।
ফেরেশতাগণ নুর তথা আলোক নির্মিত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘ফেরেশতারা আলোক দ্বারা সৃষ্ট (খুলিকাত্ মিন নূর)।
তাদেরকে আল্লাহর আদেশের প্রতি পূর্ণাঙ্গ আনুগত্যের যোগ্যতা এবং তার আদেশ বাস্তবায়নের শক্তি-সামর্থ দান করেছেন। ফেরেশতারা পানাহার করেন না, ঘুমান না, এবং তাদের বিবাহের প্রয়োজন নেই ।ফেরেশতারা আল্লাহর দেওয়া ক্ষমতাবলে যেকোনো আকৃতি ধারণ করতে পারেন।
Page Content Highlights
ফেরেশতা। আল্লাহর দূত
ফেরেশতা ব্যতীত কি আল্লাহ বিশ্ব-ভূমণ্ডল পরিচলনা করতে পারেন না?
আস্তাগফিরুল্লাহ !
মহান আল্লাহ তয়ালা বিশ্ব-ভূমণ্ডলে কারো মুখাপেক্ষি নন। তিনি কোনো কিছু হতে বললেই তা হয়ে যায়।ফেরেশত,মানুষ,জ্বীনসহ সমস্ত মাখলুক সৃষ্টি করা মহান আল্লাহ তয়ালার নিজস্ব সিদ্ধান্ত।আমাদের তিনি সহজ ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন আর বিনিময় অনেক বড় পুরষ্কার চিরকাল বস বাস করার জান্নাত। মহান আল্লাহ তয়ালার অবাধ্য হওয়ার শাস্তি জাহান্নাম।
ফেরেশতাদের মৃত্যু ও এর পরের বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেওয়া আছে পড়ুন।
পবিত্র কোরআনে ফেরেশতা প্রসঙ্গে আলোচনা
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ফেরেশতা প্রসঙ্গে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। যেমন পবিত্র কোরআনে ফেরেশতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আসমান ও জমিনের স্রষ্টা। যিনি ফেরেশতাদের বার্তাবাহক হিসেবে নিয়োগ করেছেন, যাদের পালকবিশিষ্ট দু-দুটি, তিন-তিনটি এবং চার-চারটি ডানা রয়েছে। তিনি সৃষ্টিতে যত ইচ্ছা অধিক করে থাকেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব বিষয়ে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী ।” -সুরা ফাতির
বাংলায় ফেরেশতা এর মানে কি?
বাংলা অভিধানে ফেরেশতা এর সংজ্ঞা
তারা সর্বদা ও সর্বত্র আল্লাহ্র উপাসনায় রত এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোনো ক্ষমতা তাদের নেই।
ফেরেশতাগণের মোট সংখ্যা কত তা একমাত্র মহান আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কেউ জানেনা।দায়িত্ব ও মর্যাদার দিক থেকেও সকল ফেরেশতা সমান নয়।ফিরিশতাগণের মধ্যে চারজন ফেরেশতাই সর্বপ্রধান। নিম্নে এনাদের সম্পর্কে পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা করা হলো।
প্রধান ফেরেশতা কতজন প্রধান চার ফেরেশতার নাম
- হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম।
- হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম।
- হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম।
- হযরত আজরাঈল আলাইহিস সালাম।
ফেরেশতাদের সংখ্যা কত ?
ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত। কোনো কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ কাজের উপর ভিত্তি করে ফেরেশতাদের পনেরটি শ্রেণীতে ভাগ করে থাকেন। যাদের মধ্যে চারজনকে উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা বলা হয়ে থাকে।
ফেরেশতাদের নামের তালিকা
- হামালাত আল-আরশ: আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ ।
- হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম।: আল্লাহর দূত ও সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতা ফেরেশতাদের সরদার। উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা ।
- হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম।: বৃষ্টি ও খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা।উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা ।
- হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম।: এই ফেরেশতা কিয়ামত বা বিশ্বপ্রলয় ঘোষণা করবেন। উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা ।
- হযরত আজরাঈল আলাইহিস সালাম।: ইনি মৃত্যুর ফেরেশতা ।উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা ।
- সাতটি বেহেশতের ফেরেশতাগণ।
- জাবানিয়া: জাহান্নামে দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতাগণ।
- হাফাজা বা তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাগণ।
- মুনকার ও নাকীর: কবরে প্রশ্নকারী ফেরেশতাদ্বয়।
- দারদায়িল ফেরেশতা
- মালিক: জাহান্নাম তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
- রেদওয়ান: জান্নাত তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
- নিয়ম শৃংখলা পালনকারী ফেরেশতাগণ।
- কিরামান -কাতেবীন বা সম্মানিত লেখকগণ।
- রুমাত ফেরেশতা: মুনকার নাকির ফেরেশতা দ্বয় কবরে প্রশ্নোত্তর করার জন্য আসার পূর্বে কবরবাসীর নিকট রুমাত নামক একজন ফেরেশতা আসবেন।বিস্তারিত নিচে দেখুন।
ফেরেশতাদের শ্রেণীবিন্যাস তাদের কর্ম সমূহ বিস্তারিত:
1.হামালাত আল-আরশ:
আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ ।এই ফেরেশতাগণ আল্লাহর বহন করেন । মহান আল্লাহ তয়ালা বিশ্ব-ভূমণ্ডলে কারো মুখাপেক্ষি নন। তিনি কোনো কিছু হতে বললেই তা হয়ে যায়।
2. হযরত জিব্রাইল (আ:):
ফেরেশতা। আল্লাহর দূত । ইনি এত দ্রুত গতিসম্পন্ন যে, চোখের পলকে শত সহস্র মাইল রাস্তা অতিক্রম করতে পারেন। মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে নবী ও রাসূলগণের নিকট পৌঁছিয়ে দেওয়াই ছিল তাঁর কাজ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তিনি অসংখ্যবার আল্লাহর নির্দেশে এসেছিলেন। এ ব্যাপারে পবিত্র হাদীস শরীফ হতে জানা যায় হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একান্ত পরিচিত হযরত দাহিয়াতুল কালবী নামক সাহাবীর আকৃতিতে বেশিরভাগ আগমন করেছেন। হাদীসের প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র রমজান মাসে হযরত জিবরাঈল (আ:) রাসূলে কারীম (সা:) এক খতম কোরআন মাজিদ পাঠ করে শুনাতেন।আরেক খতম রাসুলের করিম (সা:) জিব্রাইল(আ:) কে পাঠ করে শোনাতেন।সূরা ১৬:১০২ আয়াতে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাকরূহ বা রুহুল কুদুস বলা হয়েছে।
3. হযরত মিকাইল (আ:):
তিনি মহান আল্লাহর পক্ষ হতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। (ক)তিনি আকাশ হতে মহান আল্লাহর আদেশ ক্রমে মেঘ সমূহকে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং যখন যেখানে মেঘ, বৃষ্টি, ঝড় ইত্যাদি হওয়া দরকার মহান আল্লাহর নির্দেশে সে কাজ সমাধা করেন। (খ)মহান আল্লাহ তায়ালা করতে নির্ধারিত রিজিক সমূহ সৃষ্ট জীবের মধ্যে বন্টন করে থাকেন।কুরআনের ২:৯৭ আয়াতে এই ফেরেশতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
4. হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম:
উনি মহান আল্লাহর নির্দেশে সিংগা মুখে নিয়ে অপেক্ষা করছেন এবং নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে উক্ত শিংগায় ফুৎকার দিলেই কিয়ামতে ধ্বংসলীলা আরম্ভ হয়ে যাবে ।তার কথা কুরআন শরীফে বলা না হলেও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
5.হযরত আজরাইল (আ:):
হযরত আজরাইল (আ:) মহান আল্লাহর পক্ষ হতে আদিষ্ট হয়ে যাবতীয় সৃষ্টিকুলের রুহ কবজ করার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আরশের নিচে সিদরাতুল মুনতাহা নামক একটি বড় গাছের নিচে বসে আছেন। গাছের পাতায় সমস্ত প্রাণীর নাম ঠিকানা সবকিছু সুন্দরভাবে লেখা রয়েছে।যখন কোন প্রাণীর হায়াত যখন শেষ হয়ে যায় তখন ওই পড়ে গাছের একটি পাতা হযরত আযরাইল (আ:) সম্মুখে ঝরে পড়ে। তখন সে নাম ঠিকানা অনুযায়ী যে প্রাণের যেভাবে কবজ করার কথা লেখা থাকবে ঠিক সেভাবে কবজ করে থাকেন।তাকে কুরআনে মালাকুল-মাউত নামে অভিহিত করা হয়েছে।
6. সাতটি বেহেশতের ফেরেশতাগণ।
7. জাবানিয়া: জাহান্নামে দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতাগণ।
8. হাফাজা বা তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাগণ।
9. মুনকার এবং নাকির ফেরেশতাগণ।:
এদুজন সম্মানিত ফেরেশতা মহান আল্লাহর পক্ষ হতে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে কবরবাসীকে প্রশ্নোত্তর করবেন। যেসকল কবরবাসী মূর্দাগণ তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবেন তাদের আত্মাকে” ইল্লীয়িন” বা সুখময় স্থানে রাখা হবে ।আর যারা তাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে না তাদের আত্মাকে সাত তবক জমিনের নিচে সিজ্জিন নামক স্থানে রাখা হবে এবং এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে।
ফেরেশতা। আল্লাহর দূত
10. দারদায়িল ফেরেশতা।
11.মালিক ফেরেশতা:
তিনি দোজখে যাবতীয় শাস্তি দেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। দোযোকের অন্যান্য ফেরেশতাগণের প্রধান হিসেবে তিনি যাবতীয় শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেবেন।
12.রেদওয়ান ফেরেশতা:
বেহেশতবাসীদের যাবতীয় সেবার কাজে ইনি নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি বেহেশতের অন্যান্য ফেরেশতাগণের প্রধান হিসেবে যাবতীয় কাজের সমাধান দেবেন।
13.নিয়ম শৃংখলা পালনকারী ফেরেশতাগণ।
14.কিরামান -কাতেবীন বা সম্মানিত লেখকগণ:
মানব জাতি এবং জিন জাতি সমূহের দৈনন্দিন জীবনের সকল প্রকার কর্মকাণ্ড লেখার জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ হতে একদল ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন । এসব ফেরেশতাদ্বয় মানবজাতির প্রত্যেকের দু কাঁধে নিয়োজিত হয়ে তাদের দৈনন্দিন জীবনের পণ্যসমূহ লিপিবদ্ধ করে রাখেন ,যা পরবর্তীতে হাশরের মাঠে মানুষ তাদের কৃতকর্মের ফলাফল রূপে দেখতে পাবে ।
15. রুমাত ফেরেশতা:
উল্লেখ্য যে, মুনকার নাকির ফেরেশতা দ্বয় কবরে প্রশ্নোত্তর করার জন্য আসার পূর্বে কবরবাসীর নিকট রুমাত নামক একজন ফেরেশতা আসবেন। এ ব্যাপারে হাদীসে উল্লেখ আছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে( রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন একদা রাসুলে করীম সাঃ আমাকে ডেকে বললেন ইবনে সালাম জেনে রেখো ফেরেশতাদের পূর্বে একজন ফেরেশতা আসবেন।
যার চেহারা হবে খুবই আলোকোজ্জ্বল। তিনি কবরে এসে মুর্দাকে উঠে বসে বলবেন,” হে কবরবাসী! তুমি তোমার জীবনের যাবতীয় কর্মের হিসাব লিপিবদ্ধ করো।” তখন কবরবাসী অজুহাত পেশ করে বলবে যে, কলম কোথায়? কাগজ কোথায় যে আমি এসব লিখে দেবো?
তখন সে রুমাত নামক ফেরেশতা বলবেন,, তোমার কাফনের কাপড় কে কাগজ, হাতের আঙ্গুল কে কলম এবং মুখের থুতু কে কালী রূপে ব্যবহার করো। কার্যাবলী লিপিবদ্ধ করবে কিন্তু পাপের কথা সে লিখতে চাইবে না। এরপর এক পর্যায়ে ফেরেশতার ধমকে এবং বুরুজের আঘাতে সে কবরবাসী নিজের জীবনের গুনাহ সমূহও লিখবে।
এরপর তাকে বলা হবে, হে কবরবাসী! তোমার হাতের সীল দ্বারা এতে মোহরাঙ্কিত করে দাও। নির্দেশ প্রাপ্ত হইয়া কবরবাসীর তাই করবে। এরপর উক্ত কাপড় খানি মুর্দার গলায় পেচিয়ে দিয়ে উক্ত রুমাতে নামক ফেরেশতা চলে যাবেন। এরপর প্রশ্ন-উত্তর কল্পে মুনকার এবং নাকের নামক ফেরেশতাদ্বয় কবরে আসবেন।
ফেরেশতাদের মৃত্যু ও এর পরের বিস্তারিত বর্ণনা
পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সপ্তআকাশ ভেঙে দিবেন। সপ্ত আকাশে অবস্থানরত ফেরেশতারা মৃত্যুর দুয়ারে। সমস্ত ফেরেশতা মৃত্যুর স্বাধ গ্রহন করবে। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও বরণ করবে মৃত্যুর মালা। অতঃপর নির্দেশ হবে –
=> জিবরাইল! মৃত্যু বরণ কর!
=> মিকাইল! মৃত্যু বরণ কর!
আল্লাহ তাআলার ইশক ও ভালোবাসা সুপারিশ করবে – ‘হে আল্লাহ! জিবরাইল ও মিকাইলকে রক্ষা করো!’ তখন আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করবেন –
ﺍَﺳْﻜُﺖْ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﺘَﺒْﺖُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺗَﺤْﺖُ ﻋَﺮْﺷِﻰْ
“চুপ কর! আমার আরশের নিচে যারা আছে সকলের জন্যই আমি মৃত্যুর ফয়সালা করে দিয়েছি।”
মৃত্যুবরণ করবে জিবরাইল। মিকাইল ও শেষ। সিঙা ফুৎকারের ইসরাফিলও ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে। সিঙার ফুৎকার হাওয়ায় ভেসে উড়ে যাবে আরশে। আরশের উপরে আছেন আল্লাহ। নিচে কেবল আজরাইল। তখন আল্লাহ তাআলা প্রশ্ন করবেন – ‘বলো আর কে বাকি আছে?’
বলবে, ‘উপরে তুমি আর নিচে তোমার গোলাম।’
নির্দেশ করবেন –
ﺍِﻧَّﻚَ ﻣَﻴّـِﺖٌ
“তুমিও মরে যাও।”
এতদিন পর্যন্ত যে সকলের রুহ কবজ করে ফিরতো আজ সে নিজেই নিজের প্রাণ কবজ করবে। যদি মানুষ বেঁচে থাকতো তাহলে মৃত্যুমুখে আজরাইলের সেই চিৎকার শুনে হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে সকল মানুষ মারা যেত।
আল্লাহ তাআলা যখন সবাইকে মৃত্যু দিয়ে দিবেন তখন ঘোষণা করবেন –
ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻰ ﺷَﺮِ ﻳْﻜٌﺎ ﻓَﻠْﻴَﺂﺕِ …
“আমার কোন শরীক আছে কি যে আমার মোকাবিলা করবে?”
তিনি তিনবার এই ঘোষণা দিবেন। বলবেন, আমার কোন প্রতিপক্ষ থাকলে সামনে এসো। অতঃপর তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে নত করে দিয়ে ঘোষণা করবেন –
ﺍَﻧَﺎ ﺍﻟْﻘُﺪُّﺱُ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﺆْ ﻣِﻦُ
“আমিই কুদ্দুস সালাম ও মু’মিন।”
পুণরায় ঝাঁকুনি দিয়ে একই বাণী উচ্চারণ করবেন। তৃতীয়বার উচ্চারণ করবেন –
ﺍَﻧﺎَ ﺍﻟْﻤُﻬَﻴْﻤِﻴﻦُ ﺍﻟْﻌَﺰِ ﻳْﺰُ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺮُ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُ
“আমিই মুহাইমিনুল আজিজুল জব্বারুল মুতাকাব্বির।”
তারপর বলবেন –
ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ
“আজ রাজারা কোথায়?”
ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭُﻭْﻥَ
“জালেমরা আজ কোথায়?”
ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُﻭْﻥَ
“অহঙ্কারীরা আজ কোথায়?”
বলবেনঃ
ﻟِﻤَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ
“আজ বাদশাহ কে?”
কোন জবাব নেই। অতঃপর আল্লাহ নিজেই বলবেন –
َ ﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻮَﺍﺣِﺪِ ﺍﻟْﻘَﻬَّﺎﺭِ
“পরাক্রমশালী এক আল্লাহরই নিরঙ্কুশ রাজত্ব।”
– [ সুরা মু’মিনঃ ১৬ ]
মানুষের যে সব কাজে ফেরেশতাগণের কষ্টের উদ্রেক করে
ফেরেশতাদের কষ্ট হয় এই ধরণের কাজ হতে বিরত থাকা। গুনাহের কাজ হলে তারা কষ্ট পায়। এজন্য তারা কুকুর এবং প্রাণীর ছবি আছে এমন ঘরে প্রবেশ করে না। দুর্গন্ধ বস্তু তাদের কষ্টের উদ্রেক করে। যেমন- মসজিদে পেঁয়াজ, রসুন খাওয়া অথবা খেয়ে মসজিদে যাওয়া।
পূর্বেই বলা হয়েছে যে, মহান আল্লাহর অগণিত অসংখ্য ফেরেশতা বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ।যাদের নাম কিংবা সংখ্যা কারো জানা নেই ।সুতরাং উল্লেখিত গুণাবলীর সাথে সম্পৃক্ত ফেরেশতাগণের প্রতি আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। কারণ ফেরেশতাগণের প্রতি ঈমান স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ঈমানের অঙ্গ হিসাবে ফরজ।
সম্মানিত ভাই ও বোনেরা উপরোল্লিখিত সংক্ষিপ্ত বিষয়-বস্তু গুলো মনে প্রানে জানা ও মানার নামই হলো- ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান।
আল্লাহ তায়ালা আমাকে আপনাকে ও সকল জিন ও ইনসান কেই এই বিষয় গুলোর প্রতি সত্যিকারের ঈমান আনার তওফিক দান করুন এবং যেমন ঈমান আনয়ন করতে তিনি কোরআন মাজিদে বলেছেন তেমন খাঁটি ঈমানের স্বাদ আমাদের উপভোগ করার তওফিক দান করুন ।।
আরো পড়ুন: